আসন্ন রমজান মাসে স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কয়েকজন অভিভাবকরা মানববন্ধন করেন। পুরো রমজান মাসই তারা স্কুল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন।
এই অভিভাবকরা বলছেন, স্কুলের বার্ষিক ছুটির তালিকায় পরিবর্তন এনে ১০ বা ১৫ রোজা পর্যন্ত স্কুল খোলার রাখা একটি হঠকারী সিদ্ধান্ত। বছরের শুরুতে স্কুল ছুটির তালিকায় পুরো রমজান মাসকে ছুটি আওতায় রাখা হয়েছিল।
বিষয়টিতে আমরা খুবই আশ্বস্ত হয়েছিলাম যে, আমাদের সন্তানরা রমজান মাসে ঠিক মতো সিয়াম সাধনা করতে পারবে। কিন্তু কিছুদিন আগে, হঠাৎ করে ছুটি বাতিল করে বলা হলো, রমজানে স্কুল খোলা থাকবে। সিয়াম সাধনার মাসে এ ধরনের সিদ্ধান্ত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মারাত্মক হতাশ করেছে।
আজ (শনিবার) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ’সচেতন অভিভাবক মহল’ ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, আমি আমার সন্তানকে ছোট বেলা থেকেই রোজা রাখতে উৎসাহিত করি। কারণ রোজা রাখার মাধ্যমে মানুষের মাঝে নৈতিক গুণাবলি তৈরি হয়। বর্তমান ডিজিটাল যুগে সন্তানদের চরিত্র গঠন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ সময় সন্তানদের নৈতিকতা চর্চার সুযোগ করে দেওয়া খুব দরকার।
এ ক্ষেত্রে রমজান মাস একটি বড় সুযোগ, কারণ রমজান মাসকে আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন, তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে চরিত্র গঠনের জন্য। কিন্তু রমজান মাসে বাচ্চাদের নৈতিকতা চর্চার সুযোগ না দিয়ে, যদি ক্লাস-পরীক্ষায় ব্যস্ত রাখা হয়, তবে তারা নৈতিকতা শিখবে কীভাবে?
আরেক অভিভাবক আনসার আলী বলেন, রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা ইবলিশ শয়তানকে বন্দি রেখে মানুষকে ভালো কাজ করার সুযোগ দেন। একটি মাস ভালো কাজের ট্রেনিং নিয়ে বাকি ১১ মাস ঠিক মেতো কাটাতে পারে।
কিন্তু ভালো কাজের ট্রেনিংয়ের মাসে যদি কাউকে ভালো কাজ করতে না দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় ব্যস্ত রাখা হয়, তবে সে চরিত্র গঠন করবে কীভাবে? আমাদের মধ্যে অনেককে বলতে শুনি, নতুন প্রজন্ম নাকি অসুস্থ প্রজন্ম হয়ে বেড়ে উঠছে। কথাটা ভুল না। শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা চর্চায় বাধা দেওয়া অসুস্থ প্রজন্ম তৈরির মূল কারণ।
অভিভাবক মুহম্মদ শাহিন রহমান বলেন, যে বা যারাই রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে রাখতে চায়, তারা কখনই শিক্ষার্থীদের ভালো চায় না। তারা চায় না, নতুন প্রজন্ম নীতি-নৈতিকতা নিয়ে বেড়ে উঠুক, বরং তারা চায় আমাদের সন্তানরা নীতি-নৈতিকতা বর্জিত হয়ে ইহকাল-পরকাল দুই কালেই ধ্বংস হয়ে যাক।
রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা কখনোই ভালো চিন্তা থেকে আসতে পারে না। রমজান মাসে তাই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা হোক, এটাই একজন অভিভাবক হিসেবে আমার দাবি। মানববন্ধনে ২০-২৫ জন অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুনঃ পরীক্ষার হলে অসুস্থ হয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু