আমরা দেখেছি একসময় ছয় ঋতুর দেশ ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ছয় ঋতুর বাংলাদেশ বর্তমানে দুই ঋতুতে পরিণত হয়েছে। শীতকাল ও গ্রীষ্মকাল, এই দুই ঋতু বর্তমানে চলছে দেশে। এরইমধ্যে শীতকাল চলে গিয়ে উঁকি দিচ্ছে গ্রীষ্মকাল। এবার শীতে আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ গরমের ও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ ও সংস্থাটির সাবেক আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের গরম নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, ‘আগামী ২০ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশের রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ঢাকাতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সেভাবে বৃষ্টি হওয়ার তেমন সম্ভাবনা নেই।’
তিনি বলেন, ‘এখন ধীরে ধীরে গরম পড়া শুরু হয়েছে। তবে ভোর রাতের দিকে শীত থাকে। এই সময়টাতে আবহাওয়ার ট্রানজিট পিরিয়ড চলছে, এজন্যই শীত ও গরম পড়ছে। আগামী ২৭ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত একইরকম অবস্থা বিরাজ করবে। এরপর থেকে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। মানে ওই সময়ের পর থেকে শীত পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এছাড়া, এবার গরমের প্রকোপ বেশি থাকার সম্ভাবনা আছে বলেও জানান তিনি।’
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবহাওয়ার পরিস্থিতি বিশ্লেষণে বোঝা যাচ্ছে, মার্চ মাসের প্রথম দিক থেকে তাপমাত্রার দাপট অনুভব করা যাবে। কারণ, বর্তমানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যে অবস্থায় থাকার কথা, তার থেকে আমরা উপরে আছি। গত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যে পর্যায়ে থাকার কথা ছিল তার থেকে বেশি ছিল। তার মানে আমরা এবার ওয়ার্ম উইন্টার পার করলাম। এই ওয়ার্ম উইন্টারের মধ্যেই আমরা একটা তীব্র শীত পার করলাম। সুতরাং আমাদের এখন ওয়ার্মিং পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত হতে হবে।’
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালো বার্তা দিচ্ছে না। গত জানুয়ারিতে যে শীত অনুভূত হয়েছে, সেটা কিন্তু আমাদের চিন্তার বাইরে ছিল। তবে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জন্য এটা হয়েছে। সুতরাং গরমেও এরকম ওয়ার্মিং পরিস্থিতি আসবে। সেজন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
গরমকাল নিয়ে তিনি বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি হিসেব করলে এবার গরমের তীব্রতা বেশি থাকবে। এর ফলে গরমের হ্যাজার্ড আবির্ভূত হবে। হ্যাজার্ডগুলো নতুন ডাইমেনশনে শুরু হবে। যেগুলো নতুন কোনো এরিয়াতে বেশি প্রভাব বিস্তার করবে। অতীতে আমরা মার্চ মাসে তীব্র গরম পরিস্থিতি রেকর্ড করেছি। যেহেতু জানুয়ারিতে ওয়ার্ম উইন্টার পার করেছি, সেহেতু মার্চের শেষে তীব্র গরম পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ এক হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে আরেকটি হত্যার রহস্য উদঘাটন