জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারনের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিবেশ। ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ও উপাচার্যের অপসারনের দাবিতে এবং হল ত্যাগের নির্দেশ অমান্য করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এদিকে চলমান আন্দোলনে সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবির পন্থী শিক্ষকদের প্রকাশ্যে দেখা গেছে। অত্যন্ত ২০ জন শিক্ষককে আন্দোলন সমাবেশে দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে ৩ জন সিনেটর সদস্য রয়েছে।
সমাবেশে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেছেন, আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের আন্দোলনকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাবো। যেহেতু হল ভ্যাকেন্ট করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নয়। আমরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।
দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, আমরা যে কর্মযজ্ঞে আছি তা আমরা বাস্তবায়ন করবো।
আমরা দীর্ঘ তিন মাস অপেক্ষা করেছি, আন্দোলন করেছি। কিন্তু উপাচার্য তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে চান না। উনি বলেন, জামায়াত-শিবির ষড়যন্ত্র করছে। অথচ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বলে তারা ফেয়ার শেয়ার পায়নি, শাখা ছাত্রলীগ ১ কোটি ৬০ লাখ পেয়েছে।
ছাত্রলীগ যেখানে নিজেই স্বীকার করছে যে, তারা টাকা পেয়েছে সেখানে উপাচার্যের বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যাচারতিনি বলেন, একজন উপাচার্য যদি মিথ্যাচার করে তবে সেই পদে বহাল থাকার অধিকার থাকে না।
সমাবেশে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন মোজাম্মেল হক বলেন, এই আন্দোলন কোনো উপাচার্য কিংবা শিক্ষকের বিরুদ্ধে নয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এই উপাচার্য যদি থাকে তবে ছাত্র শিক্ষক এবং শিক্ষক শিক্ষকের মধ্যে বিশৃঙ্খলা হতেই থাকবে। আমরা তাকে আর চাই না।
এদিকে বিকাল ৩ টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রতিবাদে হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা ফলে ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি। ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণার পরও উপচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, এই সময়ের পর আন্দোলনকারী, সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ কেউই হলে থাকতে পারবে না। প্রয়োজন হলে আবাসিক হলে পুলিশ তল্লাশি চালাবে।
তবে শিক্ষার্থীরা ‘হল ভ্যাকেন্ট’ এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তারা বলছেন উপাচার্য অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
এদিকে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মোতায়েন করা হয়েছে শতাধিক পুলিশ।
এছাড়া ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে আইন শৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। ভিসির বাসভবনের ভেতরে অবস্থান করছেন উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরা।
উপাচার্যের বাসার সামনে দায়িত্বরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চাহিদা অনুযায়ী তিনশ’ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এর মধ্যে ক্যাম্পাসে দেড়শ’ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আর বাইরে রিজার্ভ রয়েছে আরো দেড়শ’।
তিনি জানান, আমাদের আপতত এখানে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন করা হয়েছে। উপরের নির্দেশনা অনুযায়ী অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরো পড়ুন, কেরানীগঞ্জে র্যাবের হাতে চাদাবাজ আটক