ইসমাইল হোসেন টিটু: বুড়িগঙ্গার পোস্তগোলা ব্রিজ ও বাবুবাজার ব্রিজ সালাম বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক বাবুবাজার সেতুর উপরে অবৈধভাবে সিএনজি স্টান্ড দিয়ে রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে সালাম ।দুই সেতু মিলে প্রায় সাতশত সিএনজি প্রতিদিন নিয়ন্ত্রণ করেন সালাম।
সূত্রে জানা যায় সালাম ছিলেন একজন লেদ ব্যবসায়ী। আলোর পথে একটি সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন এর স্টিকার দিয়ে প্রতি মাসের ২৪ লাখ টাকা চাঁদা হাতিয়ে নেয়। প্রতিবছরের চাঁদা হিসেবে ২৮ কোটি ৮লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মী না হয়ে মোটা অংকের টাকা দিয়ে রাতারাতি বাংলাদেশ আওয়ামী চালাক লীগের ঢাকা জেলার সভাপতির পদটি দখল করে নেন । চালক লীগের সভাপতির পদ নিতে ৪ লাখ টাকা খরচ করেন অভিযোগও উঠেছে তার নামে।
নয়াবাজারের কাগজের ব্যবসায়ী আলমগীর (ছদ্মনাম) প্রতিবেদককে জানান সালাম এতই ভয়ঙ্কর একজন ব্যক্তি হয়ে উঠেছে তার বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ বা সংবাদ প্রকাশ করলে যে কোন ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে । তাঁর এসব বিষয়ে কেউ কোনো কথা বলার সাহস পায়না ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতুটি ও সালামের নিয়ন্ত্রণে সেখান থেকে প্রতি মাসে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। গত ২০ আগস্ট দৈনিক বাংলাদেশের আলোতে বুড়িগঙ্গা সেতু উপরে অবৈধ সিএনজি স্টান্ড কোটি টাকা চাঁদা আদায় শিরোনাম প্রকাশিত হলে।২৭ আগস্ট যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেন। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে বর্তমানে। সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে । স্কুলপড়ুয়া, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও অসুস্থ রোগীরা সেতুটি যানজট মুক্ত থাকায় সহজে হাসপাতলে যেতে পারে। কেরানীগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী মানুষ এখন পাঁচ মিনিটের মধ্যে ব্রিজের এপার ওপার যাতায়াত করতে পারছেন । অথচ ১৫ দিন আগেও বুড়িগঙ্গা সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে সময় লাগতো ঘন্টা খানিক ।
অভিযানের এক সপ্তাহ পর সন্ধ্যা ছয়টার পরে দেখা যায় পুরনো সেই চিত্র।
সিএনজি চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কেরানীগঞ্জে অপরাধজগতের সঙ্গে এ চাঁদাবাজির যোগসূত্র রয়েছে। চাঁদাবাজির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের অনেকে খুন, মাদক, চোরাচালান, অবৈধ দখলসহ অন্য অপরাধের সঙ্গেও যুক্ত আছে বলে জানা যায়। টাকা না দিলে চালকদের মারধোরসহ বিভিন্ন হয়রানীও করে আসছে বলে জানান।সিএনজি চালক রাজ্জাক, সুমন, মাসুদ, হোসেন প্রতিবেদককে জানান, পুলিশের হয়রানী থেকে বাঁচতে নেওয়া হয় এই টাকা। সিএনজির সামনে একধরনের বিশেষ স্টিকার লাগানো থাকে। স্টিকার দেখলে ট্রাফিক পুলিশ এসব গাড়ি না দেখার ভান করে থাকেন ।অথচ বেশিরভাগই সিএনজির ফিটনেস নেই ড্রাইভারদের ডাইভিং লাইসেন্স নেই অদক্ষ ড্রাইভার দিয়ে এসব গাড়ি চালানো হচ্ছে যার ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনাকবলিত সাধারণ পথচারী ও যাত্রীরা । এসব গাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
এই চাঁদাবাজির দিনের বেলার অংশ নিয়ন্ত্রণ করেন ফারুক, মানিক আরও একাধিক ব্যক্তি। কে, কোন অঞ্চল থেকে চাঁদা তুলবেন নিজেদের মতো ঠিক করে নিয়েছেন তারা। কেউ কারও অঞ্চলে পা মাড়ান না। এক দল উত্তর পাশ বেছে নিয়েছে তো আরেক দল নিয়েছে দক্ষিন পাশে। ফলে বুড়িগঙ্গা সেতুতে একধরনের সমঝোতাপূর্ণ চাঁদাবাজি নেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখের সামনে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত এই দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুর উপরে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড কিছুতেই এই চাঁদাবাজি থামাতে পারছে না পুলিশ, কারণ পুলিশ নিজেওতো চাঁদাবাজির সাথে জড়িত । তাই এটা ব্যর্থতা বলে মনে করেন । প্রশাসন একটু সচেতন হলে এই চাঁদাবাজি থাকবে না বলে আশা করেন।
আরো পড়ুন,ঘন কুয়াশায় সাড়ে ৮ ঘন্টা পর দৌলতদিয়া পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল শুরু