পেঁয়াজ

প্রতিদিনই বেঁড়ে চলেছে পেঁয়াজের দাম

গেল মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও ঠিক শেষের দিকে এসে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ হাঁকায়।

এরপর পেঁয়াজের দাম ১০৫ থেকে ১১০-এর মধ্যে ছিল। গতকাল সেই পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১২০ টাকা ওঠে। আর আজ তা ১৩০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। ফলে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে মোটামুটি ৫০ টাকা। গড়ে প্রতিদিন কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩ টাকার বেশি।

আজ (শনিবার) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, মুড়িকাটা পেঁয়াজ একেবারেই শেষের দিকে হওয়ায় এই পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে বাজারে। তাই এই দাম বাড়তি আরও কয়েক দিন থাকবে, এরপর হালি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলে দাম অনেক কমে যাবে।

হঠাৎ পেঁয়াজের এমন বাড়তি দামের বিষয়ে বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারেই পেঁয়াজের দাম গতকাল থেকে বাড়তি যাচ্ছে।

গতকাল কারওয়ান বাজারেই দাম পড়েছে প্রতি কেজি ১০৫ থেকে ১১০ টাকা। এরপর আছে পরিবহন খরচ, রাস্তা খরচ, দোকান খরচ। সব মিলিয়ে আজ পেঁয়াজ ১২০/১৩০ টাকায় খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

এক সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজার থেকে পেঁয়াজ কেনা পড়তো ৮০/৮৫ টাকা,  তখন আমরা খুচরা দোকানে ১০০/১০৫ টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু গতকাল থেকে দাম বেড়ে যাওয়ায় আর পারছি না।

তিন দিনে ৩০ টাকা বেড়ে গেল?

জিঞ্জিরা বাজার এলাকার বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন বাজার করতে গিয়ে পেঁয়াজের দাম শুনে নিজের কানকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তিনি বলেন, ৩/৪ দিন আগেই পেঁয়াজ কিনলাম ১০০ টাকা কেজি। আজ দেখছি হয়েছে ১৩০ টাকা। তিনদিনের মধ্যে এক লাফে ৩০ টাকা বেড়ে গেল, অথচ বাজার নিয়ন্ত্রণের কোনো উদ্যোগ দেখতে পেলাম না।

তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা সাধারণ ক্রেতাদের জিম্মি করে এভাবে যখন তখন পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেবে অথচ বাজার তদারকি, মনিটরিং থাকবে না, এটা কেমন কথা? আমরা কি সব সময়ই অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে হার মেনে বেশি দামে কিনেই যাব?

শ্যামবাজার থেকে পাইকারি দরে পেঁয়াজ কিনে ঢাকায় খুচরা বিক্রি করেন আনোয়ার হোসেন নামে একজন ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে পাবনাতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারি কেনা পড়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, সেই পেঁয়াজ রাজধানীতে খুচরা বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজি। আগের সপ্তাহে সেখানে প্রতি মণ (৪০ কেজি) পেঁয়াজ কেনা পড়তো ৩২০০ থেকে ৩৪০০ টাকা কেজি, বর্তমানে সেটা পড়ছে ৩৮০০/৩৯০০ টাকা।

তিনি আরও বলেন, মূলত নতুন পেঁয়াজ বা মুড়িকাটা কৃষকের পেঁয়াজ তোলা শেষের দিকে। প্রায় দেড় মাস আগে এই পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছিল, এখন কৃষকের সেই পেঁয়াজ শেষের দিকে। ফলে সরবরাহ কমতে শুরু করেছে, আর চাহিদার তুলনায় সরবরাহ না থাকায় হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এখন কৃষকের মূল পেঁয়াজ হালি পেঁয়াজ যেটা বছর জুড়ে পাওয়া যায় সেই পেঁয়াজ উঠতে কিছুদিন সময় লাগবে। সে পর্যন্ত এমন বাড়তি দাম থাকতে পারে বাজারে।

অন্যদিকে আগানগর এলাকার খুচরা বিক্রেতা মুদির দোকানি আজিজুল বলেন, কারওয়ান বাজারসহ অন্যান্য পাইকারি বাজারে প্রতি পাল্লার (৫ কেজিতে এক পাল্লা) দাম পড়ে যাচ্ছে ৫২৫ থেকে ৫৫০ টাকা। সেই পেঁয়াজ পরিবহন খরচ দিয়ে এনে অন্যান্য সব খরচের হিসেব করে প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি করছি।

আমরা যখন পাইকারি বাজারে বেশি দামে কিনে আনি তখন আমাদের খুচরা দোকানেই বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হয়। আবার যখন পাইকারি বাজারে কম দামে পেতে শুরু করব তখন আবার কম দামেই পেঁয়াজ বিক্রি করব ক্রেতাদের কাছে।

ট্রেডিং কর্পোরেশনের অব  বাংলাদেশের (টিসিবি) সহকারী পরিচালক (বাজার তথ্য) নাসির উদ্দিন তালুকদার জানিয়েছেন, গতকাল বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ১২০ টাকায়। গত সপ্তাহে এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৯০ টাকা আর এক মাস আগে এই পেঁয়াজের দাম ছিল ৮৫ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। কিন্তু গত বছর এই সময় এই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে।

 

আরো পড়ূনঃ কেরানীগঞ্জে অস্রসহ গ্রেফতার ৭ ডাকাত – র‍্যাব ১০

Check Also

প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টাকে কাজের অগ্রগতি জানালেন সংস্কার কমিশন প্রধানরা

রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে গঠিত সংস্কার কমিশন প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. …