দুই বিঘা আয়তনের কারখানায় প্রবেশের গেট মাত্র একটি

ঢাকার দক্ষিন কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া হিজলতলা অবস্থিত প্রাইম পেট এন্ড প্লাস্টিক ইন্ড্রাস্ট্রিস লি: এর আয়তন হবে প্রায় দুই বিঘা। কারখানায় দিন ও রাতে দুটি সিফটে প্রায় সাড়ে তিনশ শ্রমীক কাজ করতো। কিন্তু অবাক করার মতো বিষয়, এতো বড়ো কারখানায় প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য একটি মাত্র গেট। মূলত এই কারনেই অগ্নিদগ্ধের সংখ্যা বেড়েছে বলে আশেপাশের লোকজন মন্তব্য করে। এছাড়া রাস্তা প্রসস্ত না হওয়ার কারনে এবং একটি গেট থাকার কারনে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন পৌছাতে ও দেড়ি হয় , যার ফলে অগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ও বেশি হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে কথা হয় অগ্নিকান্ডের সময় কারখানাটির সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা সুপার ভাইজার মো: শাকিলের সাথে। পুরো ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে শাকিল জানায়, বিকাল ৪ টার দিকে কারখানার ইঞ্জিনিয়ার মো: সালাউদ্দিন , ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর ও কারখানার উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কারখানার গ্যাস সিলেন্ডার গুলোর এখানে কাজ করছিলো হঠাৎ করেই একটি সিলেন্ডারে আগুন লেগে যায়। স্যাররা ঐ সিলেন্ডারের আগুন নিভাতে চেষ্টা করে। এখানে অনেকগুলো সিলেন্ডার ছিলো। একটা সিলেন্ডার থেকে যেনবাকি গুলোতে আগুন না লাগে এ জন্য আমরা বাকী সিলেন্ডারগুলো বেরকরার চেষ্টা করছিলাম। ১০-১৫টি সিলেন্ডার বের করার পর আর বাকী সিলিন্ডার বের করা সম্ভব হয়নি। একটার পর একটা সিলেন্ডাওে আগুন ধরে যায় । কারখানাটি ৩টি সাইটে ভাগ করা। যে পাশে আগুন লাগে এখানে প্রায় ৫০-৬০জন শ্রমিক কাজ করছিলো। আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতেনা পেরে প্রথমে আমরা মহিলা শ্রমিকদের বের করে দেই। এরপওে আগুন বাড়তে থাকলে যে যার মতো বাচার চেষ্টা করি।

কারখানার পাশেই মাটিতে বসে সকাল থেকে আহাজারি করছিলো রোকায়া বেগম। রোকেয়ার দুইভাই মো: আলম (২২), ও রাজ্জাক (৪২) কারখানায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করতো। গতকাল দুই ভাইই দগ্ধ হয়। এবং আজ সকালে দুইজনই মারা যায়। পাশেই বসে থাকা রোকেয়ার বড়ো খালা রেজিয়া বেগম জানায়, বাপ-মা হারা রোকেয়ারা ৩বোন ৪ভাই। আলম ও রাজ্জাক কারখানায় প্যাকিং এর কাজ করতো। দুই ভাইই আজ সকালে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। কারখানার পাশের জায়গাটি রোকেয়াদেরই। কারখানা মালিক নজরুল ইসলাম তাদের কাছ থেকে জায়গাটি ক্রয় করে নেয় বলে জানান রোকেয়া।

বসত বাড়ির আসে পাশে এমন কারখানা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে কিনা অথবা আপনারা প্রতিবাদ করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ক্ষোভের সাথে রোকেয়া বলেন, কারখানা মালিক নজরুল ইসলাম প্রভাবশালী ব্যাক্তি। তিনি ওয়ারীতে থাকেন এখানে মাঝে মধ্যে আসেন। এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের সাথে তার ভালো সম্পর্ক তাই কয়েক বার কারখানাটিতে আগুন লাগলেও এটা কেউ বন্ধ করতে পারেনি। রোকেয়া আরো বলেন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা সহযোগীতা না করলে বারবার আগুন লাগলেও এ কারখানাটি এতো ঘনবসতি এলাকায় থাকতে পারতোনা। আমি ভাই হারিয়েছি আমার যন্ত্রনাকা উকে মুখে বলে বোঝাতে পারবো না। কারখানাটি বারবার আগুন লাগার পরেও কাদের সহযোগীতায় এখানে থাকে আমি তাদের সবার বিচার চাই।

নিউজ ঢাকা

আরো পড়ুন,ক্রিকেট নেশাকে পেশায় পরিণত করলেন ইমরান

Check Also

৬ বছর অপেক্ষার পর আবারো নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ রুটে বিআরটিসি দ্বিতল বাস

দিদারুল ইসলাম:   দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কে পুনরায় চালু হয়েছে বিআরটিসি দ্বিতল বাস …