সজিবুল ইসলাম হৃদয় : সময়ের পরিবর্তনে যুগের সাথে তালমিলিয়ে কখনো কখনো কোন সভ্যতা বা কোন স্থান হয়ে উঠে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রস্থল ও ঐতিহ্যের ধারক-বাহক দেশের উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে। আবার কালক্রমে কখনো কখনো সেই সভ্যতার জৌলুস ও ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে।
তেমনি একটি সভ্যতা হচ্ছে বরেন্দ্রভূমি ও উত্তরবঙ্গের (রাজশাহী) আঞ্চলিক মানবসভ্যতা। রাজশাহী বিভাগের যে জায়গাগুলোতে পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারবেন সে স্থানগুলোর নাম প্রকাশ করা হল যেটা পর্যটকদের ভ্রমণ সহাইয়িকা হিসাবে কাজ করবে। প্রচীনকালে উত্তরাঞ্চল যেসব অঞ্চলের সাথে কোন না কোন ভাবে সংযুক্ত ছিল সেইসব অঞ্চলের বর্তমান জেলাগুলোর পর্যটন আকর্ষণগুলো এই অনুচ্ছেদটিতে উপস্থাপন করা হচ্ছে। বরেন্দ্রভূমির রাজধানী হিসাবে খ্যাত রাজশাহী বরাবরই ভ্রমণপিপাসুদের আকৃষ্ট করে। বরেন্দ্র জাদুঘর, জিয়া পার্ক, চিরিয়াখানা, পদ্মা গার্ডেন, টি বাধ , পুটিয়া রাজবাড়ী, সারদা পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, পদ্মার চর পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের খ্যাতি বাংলাদেশ ব্যাপি। ভ্রমণপিপাসু মানুষগুলো চাইলে আমের মৌসুমে সেখানে আম বাগানে গিয়ে পাকা আম খেতে পারবে এছাড়াও বিলভাতিয়া, বিলচুড়াইল, বিলহোগলা, ছোট সোনা মসজিদ, দাসবাড়ি মসজিদ যে কারো নজর কারবে। নাটোরের কাচাগোল্লা খেতে কার না মন চায়। তার সাথে দেখতে পাবেন উত্তরা গণভবন ( দিঘাপতিয়া রাজবাড়ী), নাটোরের রাজবাড়ী, লালপুরের গ্রীনভ্যালী পার্ক, চৌগ্রাম জমিদার-বাড়ী। এছাড়া নাটোরের ও গোপালপুরের চিনি কারখানা দেখার সুযোগ মিলবে। নওগাঁর মানুষদের সরলতা যে কাউকে মুগ্ধ করবে। নওগাঁয় কুসুম্বা মসজিদ, পাহাড়পুরের বৌদ্ধবিহার, পালরাজাদের স্মৃতিচিহ্ন, বলিহার রাজবাড়ী, জবাই বিল, জগদ্দল বিহার, পত্নীতলা দিব্যক জয়স্তম্ভ দেখতে পারবেন। হাওর-বাওর ও বিল দিয়ে সাজানো পাবনা জেলা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল চলন বিলের একটা অংশ এই জেলাকে ঘিরে। বর্ষার সময় ভরা বিলে নৌকা নিয়ে মাছ ধরা ও টাটকা মাছ দিয়ে খাবার খাওয়া এক নতুন অনুভূতির যোগান দেবে।
এছাড়া পাকশী হার্ডিং ব্রিজ, লালন শাহ সেতু তো অাছেই। যমুনা সেতু সিরাজগঞ্জ জেলাকে নিয়ে গেছে এক ভিন্ন মাত্রায়। বেলকুচির তাতিদের তাত পল্লী ও তাদের তাঁত শিল্প, শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথের বাড়ী, দরগাহ মসজিদ, শিব মন্দির ভ্রমণকারীদের আকৃষ্ট করবে। জয়পুরহাট বহু দিন গৌড়ের পাল ও সেন রাজাদের রাজ্য ভূক্ত ছিল। আছা রাঙ্গাদিঘী, নান্দাইল দিঘী, লাকমা রাজবাড়ী, পাথর ঘাটা দর্শনীয় স্থানগুলোতে দর্শনার্থীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। উত্তরবঙ্গের প্রাণ কেন্দ্র নামে পরিচিত বগুড়াকে ঐ এলাকার রাজধানী বলেই সবার কাছে জানা। উত্তরবঙ্গের সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে পরিচিত। মহাস্থানগড়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল বহু রাজাদের রাজ্য এখনো সেই রাজাদের রাজ্যের স্মৃতিপট চোখে পড়বে।
এছাড়া মাজার শরীফ, কাটাবিহীন বড়াইয়ের গাছ, পশুরামের প্রাসাদ ও প্রাচীর, গোবিন্দভিটা, মহাস্থানগড় জাদুঘর, বেহুলার বাসরঘর, শিলা দেবীর ঘাট, ভাসুবিহার, বাংলাদেশের একমাত্র মশলা গবেষণা কেন্দ্র দেখতে আসেন অসংখ্য ভ্রমণকারী।
আরো পড়ুন,কেরানীগঞ্জে অবৈধ পানির কারখানার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা