ক্রীড়াবিদরা দেশের একেকজন দূত : জাহিদ আহসান রাসেল

শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ:  একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্রীড়াঙ্গনের অনেকে জয়ী হয়েছেন। প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে চমক দেখিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। বিশ্বে অনেক ক্রীড়াবিদই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু সবাইকে ছাড়িয়ে নতুন ইতিহাস গড়েছেন মাশরাফি। কেননা অন্যরা নির্বাচিত হয়েছেন ক্যারিয়ারের ইতি টানার পর। মাশরাফিই শুধু ব্যতিক্রম। জাতীয় দলে খেলা অবস্থায় এই প্রথম কেউ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন। প্রথমবার অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছেন সাবেক ফুটবলার সেলিম আলতাফ জর্জ। সাবেক মাঠ কাঁপানো ফুটবলার সালাম মুর্শেদী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচেন জয়ী হলেও তিনি এর আগে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হন।

ক্রীড়াঙ্গনের একাধিক ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় গুঞ্জন উঠেছিল এবার নতুন সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাবেন ক্রীড়াঙ্গনের কেউ। বীরেন শিকদার টানা দ্বিতীয়বারে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হতে পারেন এমন কথাও শোনা যাচ্ছিল। না নতুন সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন গাজীপুর-২ আসন থেকে টানা চতুর্থবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া জাহিদ আহসান রাসেল। রাসেল প্রতিমন্ত্রী হওয়ায় ক্রীড়াঙ্গন সন্তুষ্ঠ। কেননা ক্রীড়াঙ্গনের সবকিছুই তার জানা। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট টানা ১০ বছর সরকারের দায়িত্ব পালনে জাহিদ আহসান রাসেল ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি টানা দুই মেয়াদে এই দায়িত্ব পালন করেন। ১০ বছরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের দায়িত্ব পালনে ক্রীড়াঙ্গনে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে।

যোগ্যতার সঙ্গে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির দায়িত্ব পালনে রাসেলকে সফলই বলা যায়। এই সাফল্যের কারণে তাকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে গতকাল বঙ্গবভনে শপথও নেন জাহিদ আহসান রাসেল। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়ে রাসেল খুশি। তবে বড় চ্যালেঞ্জেও। কেননা আগামী পাঁচ বছর ক্রীড়াঙ্গন কিভাবে পরিচালিত হবে ক্রীড়ামোদীরা চেয়ে থাকবে রাসেলের দিকে। ক্রীড়া উন্নয়নে বড় ফ্যাক্টর অর্থাৎ আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা ক্রীড়া সংগঠক আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়াটা রাসেলের জন্য হবে বাড়তি প্রাপ্তি। ক্রীড়া উন্নয়নে কী পরিমাণের ফান্ডের প্রয়োজন পড়ে তা নতুন অর্থমন্ত্রীর অজানা নয়। নতুন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, বাংলাদেশের প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেব প্রশিক্ষণে। এ ক্ষেত্রে অবকাঠামোরও প্রয়োজন রয়েছে। আর এ জন্য সরকার ইতিমধ্যে দেশের প্রতি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করছেন। আর ওই মিনি স্টেডিয়ামগুলোকে কাজে লাগিয়ে খেলোয়াড়দের বেশি বেশি প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

পূর্বাচলে একটি স্টেডিয়াম নির্মিত হচ্ছে। আরও আধুনিক করা হবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। আমাদের যে স্থাপনাগুলো আছে, সেগুলো যেন নষ্ট না হয় তাও দেখতে হবে। তবে তিনি প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দেন। জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, খেলোয়াড়রা দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এ জন্য একজন ভালো খেলোয়াড় দেশের সুনাম ধরে রাখতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তিনি বলেন, একজন স্পোর্টসম্যান দেশের একজন দূত। দেশের খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদরা আন্তর্জাতিকভাবে যে সুনাম অর্জন করছেন তা আরও এগিয়ে নিতে হবে। আর এ জন্য যা যা করা দরকার, তা করা হবে। রাসেল আরও বলেন, ক্রীড়াক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত বাজেট খুবই স্বল্প। তাই বাজেট বৃদ্ধি করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হবে। তিনি বলেন, থোক বরাদ্দ দিয়ে কাজ হবে না। তিনি বলেন, জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। আর এ ফুটবল খেলা বাংলাদেশে কেন পিছিয়ে আছে, তার কারণও খুঁজে বের করতে হবে। নির্বাচনী ইশতেহারে তারুণ্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আর এ জন্য তরুণদের চাকরি ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

 

 

Check Also

সুইডেনে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধি দল

সুইডিশ পার্লামেন্টারি ফরেইন অ্যাফেয়ার্স কমিটির ডেপুটি লটা জনসন ফরনার্ভ এবং মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন …