কেরানীগঞ্জে ভয়ানক অগ্নি ঝুকিতে লক্ষাধিক মানুষ!

কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ এলাকায় কয়েক লক্ষ গার্মেন্টস শ্রমিক প্রতিনিয়ত অগ্নি কান্ডের ঝুকি মাথায় নিয়ে কাজ করছে। কোন ধরনের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ব্যাঙের ছাতার মতো একের পরভবন তৈরী হয়েছে এখানে।

দেশে একের পর এক গার্মেন্টেস এ আগুন লাগার খবর ও বহু মানুষের মৃত্যুর নজির রয়েছে ।  তার পরেও অগ্নিকান্ডের বিষয়ে এখনকার ভবন মালিকের কোন নিয়ম নীতি মানেন নি।

গত ২০ ফেব্রæয়ারী চকবাজারে অগ্নিকান্ডের দগদগে ক্ষত না শুকানোর আগেই আবার গত ১১ ডিসেম্বর ঘটলো কেরানীগঞ্জের হিজলতলায় বিভীষিকাময় দুর্ঘটনা। নিহতদের স্বজনদের কান্নার চিৎকার প্রতিনিয়ত দাগ কাটে।

কালিগঞ্জ এলাকায় ছোটবড় প্রায় ৪ হাজার কারখানা ও ৬ হাজারের বেশি শোরুম রয়েছে। টাকা কামানোর নেশায় ভবন মালিকেরা গড়ে তুলেছে একের পর এক ভবন আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান । মালিকেরা কোন কারখানা আইন না মেনেই গড়ে তুলেছে একের পর এক সুবিশাল কারখানা। জানা যায় অধিকাংশ বিল্ডিং এর ই রাজউকের কোন অনুমোদন অথবা প্লান পাশ নেই।

সরেজমিনে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্ট পল্লীতে গিয়ে দেখা যায় কোন প্রকার গ্যাপ/ফাকা না রেখেই একটি ভবনের সাথে আরেকটি ভবন তৈরী করা হয়েছে। অনেক ভবনের সিড়িই প্রশস্থ না , এক সাথে তিন চার জন লোক চলার কোন ব্যবস্থা নেই এই সব ভবনে।

এছাড়া প্রতিটা চলাচলের রাস্তাও অনেক সরু ও চিপা। ফায়ার সার্ভিসের যাতায়েতের ব্যবস্থা ও নেই সেখানে। আগানগরের বেশ কয়েকটি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায় সেখানে নেই কোন অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, কারখানাগুলোর পরিবেশ ভালো না।

ঝুকি নিয়ে কাজ করছে হাজার হাজার শ্রমিক। এছাড়া পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার গুলো প্রায় বিল্ডিং এর সাথে লাগানো। ফলে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়ে যায়।

আগানগরের নামাপারা এলাকার আবুল নামের এক বাসিন্দা জানান, ১০-১৫ বছর আগেও এখানে এত জনবহুল মার্কেট ছিলো না। এখানে শিল্পায়ন দ্রæত হয়েছে, কিন্তু ব্যবসায়ীরা শুধু তাদের নিজেরটাই বুঝেছেন,শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা বা সুযোগ সুবিধার কথা তারা কখনোই চিন্তা করে না।

জিলা পরিষদ মার্কেট এলাকায় জামাল নামে এক দোকানদার বলেন, আমাদের দোকানদারদের সচেতনতার অভাব রয়েছে এছাড়া মালিক সমিতির জোড়াল কোন ভ’মিকা নাই। তারা শুধু প্রতিমাসে চাদাই নেয় কিন্তু তেমন কোন কাজ ই করে না।

এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক আতিকুল আলম চৌধুরী জানান, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে একাধিকবার কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লি পরিদর্শন করেছি। তাদের বহুবার চিঠি দিয়েছি। অথচ তারা কোনো নির্দেশনা মানতে চায় না।

আগানগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শাহ খুশি বলেন, আগানগর ইউনিয়নের মধ্যে ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি ঝুকিপূর্ন। এখানকার ভবন মালিকেরা বেশির ভাগ ই ওয়ারী গুলশান বনানী থাকে। তাই অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নাই। কোন ভাবে যদি একটা ভবনে আগুন লেগেই যায় কেউ বের হতে পারবে না।

গত ১১ ডিসেম্বর অগ্নিকান্ডের পরে মন্ত্রী মহোদয় ও উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে কালিগঞ্জের অগ্নি নির্বাপক ব্যাবস্থা নিয়ে আমি মালিক সমিতির সাথে মিটিং করেছিলাম । তারা এ ব্যাপারে কাজ করে আমাকে জানাবে বলেছে। কিন্তু এখোনো কিছুই জানায় নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ গামেন্টস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মুসলিম ঢালী বলেন, আমাদের কমিটির বয়স মাত্র ২ মাস। একবারে সব পরিবর্তন সম্ভব নয়। আমরা কাজ করছি।

ইতিমধ্যে কালিগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীতে মাইকিং করেছি, সব ব্যাবসায়ী ও ভবনের জমিদারদের চিঠি দিয়েছি। অনেকে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা করেছে ইতিমধ্যে বাকিরাও করে ফেলবে বলে আশা করি।

নিউজ ঢাকা

আরো পড়ুন,প্রেম ও স্বজনপ্রীতির মধ্যেই আবদ্ধ জবি বাঁধনের নেতৃত্ব

Check Also

বুড়িগঙ্গা নদী তে লঞ্চ ডুবে ৩৪ জনের মৃত্যু: ৪ বছরেও শেষ হয়নি বিচার

বুড়িগঙ্গা নদী তে লঞ্চ ডুবে ৩৪ জনের মৃত্যু: ৪ বছরেও শেষ হয়নি বিচার

২০২০ সালে ২৯ জুন সদরঘাটের শ্যামবাজার এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদী তে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ‘মর্নিং …