কেরানীগঞ্জে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর কেরানীগঞ্জে ষষ্ঠ শ্রেনীর এক ছাত্রীকে অপহরনের পর জোর পূর্বক ধর্ষনের ঘটনায় ধর্ষক মোঃ রাজীব হোসেনকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এস আই রফিকুল ইসলাম জানান, গত ৮ অক্টোবর চড়াইল নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কোচিং শেষে বিকেল৪ টায় নিজ বাড়ি ভাংনা মুজিব নগর এলাকায় ফেরার পথে রাস্তায় অপহরন হয় ওই ছাত্রী। অপহরনের পরের দিন ছাত্রীর মা সোনিয়া আক্তার বাদী হয়ে
কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে (মামলা নং- ২২)। এর দুই
দিন পর ১০ অক্টোবর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অপহৃত ওই ছাত্রীকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরনকারী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। উদ্ধারের পর ওই ছাত্রীকে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়।
সুস্থ হওয়ার পর ওই ছাত্রী জানায় তাকে অপহরন করে তারই আপন খালু মোঃ রাজীব। শুধু তাই নয় অপহরনের পর তাকে একাধিকবার তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষনও করে পাষন্ড খালু ধর্ষক রাজীব। এরপর থেকে আমরা ধর্ষক
রাজিবকে গ্রেপ্তারের জন্য জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করি।
এস আই রফিকুল ইসলাম আরো জানান, এরপরে গত মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে জানতে পারি আসামী রাজীব তার সাথে আরো ছয়-সাতজন সন্ত্রাসী নিয়ে কেরানীগঞ্জের কোনাখোলার দিকে যাচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা
কেরানীগঞ্জ-দোহার-নবাবগঞ্জ সড়কের ডায়মন্ড মেলামাইন কারখানার সামনে
ভাঙ্গা ব্রীজের উপর অবস্থান নেই। আসামী রাজীব ব্রীজের নিকট আসলে
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তার সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে করে আামি নিজে ও সঙ্গীয় এস আই সাইদুজ্জামানসহ ও দুই কনস্টেবল আহত হয়। এক পর্যায়ে আমরা রাজীবকে গ্রেপ্তার করলেও তার সাথের সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। রাজীবের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা করার অপরাধে এস আই সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। পরে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো
হয়েছে। রাজীবের গ্রামের বাড়ি দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানার কদমতলী খালপাড় এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত আজাদ মিয়া। তিনি পেশায় একজন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। বাবার সাথেই রাজিব ও তার ছোট ভাই রাশেল বাড়িতে বসে মাদকের ব্যবসা করতেন। এ জন্য রাজিবের বাবা আজাদ ও ছোট ভাই রাশেল পুলিশের হাতে কয়েকবার ধরা খেয়ে জেল খেটেছেন।
পিতা মারা যাওয়ার পর রাজীব কদমতলীর বাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় থেকে প্রতারনার আশ্রয় নেন। ছোট ভাই রাশেল রয়েছে এ অপহরন মামলায় কারাগারে। রাজীবের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ২টি মাদক মামলও রয়েছে বলে জানান তিনি। যাহার নাম্বার ২৭(০১) ২০১৩ ও ২১(০৪)২০১৬।
রাজীবের প্রথম স্ত্রীর নাম মোসাম্মদ সাথী আক্তার, সে দুই সন্তানের জননী। ২য় স্ত্রীর নাম তানিয়া আক্তার (ভীকটিমের খালা)।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের জানান, আসামী রাজীবের ব্যাপারে এলাকায় খোজ খবর নিয়ে জানতে পেরেছি সে একজন বহুরুপী প্রতারক। সে একাধিক বিয়ে করেছে। ঘরে তার দু’দুটি স্ত্রী থাকা সত্তে¡ও সে তার ২য় স্ত্রীর বড় বোনের ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে জোড় পূর্বক ধর্ষন করেছে।
সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে মানুষ ঠকায়। কখনো সে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সম্পাদক আবার কখনো ঢাকা জেলা হকার্স লীগের সাধারন সম্পাদকের পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারনা করতো। ডি আই জিবী হাবীব স্যারের সাথে ছবি তুলে মানুষকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখানোরও অভিযোগ পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে। মূলত প্রতারনা করাই ছিলো তার মূলপেশা। তার সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য বিজ্ঞ আদালতের কাছে আবেদন করবো।
আরো পড়ুন,কেরানীগঞ্জে ইট ভাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের ফের অভিযান