ঢাকার কেরানীগঞ্জে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে লাগামহীন ভাবে অলিতে গলিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ফার্মেসী এসব অধিকাংশ ফার্মেসীর ড্রাগ লাইসেন্স নেই,কোন কোনটির ড্রাগ লাইসেন্স থাকলেও তার নবায়ন নেই।
প্রতিনিয়তই ফার্মেসী গুলোতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই হাতুড়ে চিকিৎসকেরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে এলাকার সাধারন মানুষকে। অতি মুনাফায় আশার ভুলভাল ঔষুধ, নিষিদ্ধ বিদেশি ঔষুধ, ও নামহীন বিভিন্ন কোম্পানীর ঔষুধ সাধারন মানুষদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে এসব ফার্মেসী মালিকেরা।
এমনকি অনেক রোগীদের কোন পরীক্ষা নিরিক্ষা না করেই উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়টিক ধরিয়ে দিচ্ছেন এসব ফার্মেসীর হাতুড়ে ডাক্তাররা। এর ফলে এসব ঔষধ সেবন করে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে জীবনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন অসচেতন মানুষজন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব ফার্মেসিতে প্রশাসনিক অভিযান চালানোর খবর শোনা গেলেই তাৎক্ষণিক তালাবদ্ধ করে মালিকেরা পালিয়ে যান। এছাড়া যে সকল দোকানগুলোতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরিমানা করা হয় সে জরিমানার টাকা বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির পক্ষ থেকে ফার্মেসির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। এ কারনে তারা বার বার একই কাজ করে যাচ্ছে।
আব্দুর রহিম নামে একজন স্কুল শিক্ষক জানান, সাধারন জনগনের সঠিক শিক্ষার অভাব রয়েছে। এছাড়া ক্লিনিক গুলোতে ডাক্তার দেখাতে গেলেই তারা প্রথমেই বিভিন্ন টেষ্ট ধরিয়ে দেয়। কেরানীগঞ্জে অনেক কিøনিক থাকলেও ভালো মানের ক্লিনিক তেমন নেই বললেই চলে।
আর বাড়ির কাছে হাতের নাগালেই ফার্মেসী, নানাবিধ কারনে আজকাল ফার্মেসী ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ ফার্মেসী মালিকই রোগীদের ঔষধ বিতরন করে থাকে। এদের ডাক্তারী কোন অভিজ্ঞতা বা সার্টিফিকেট ও নেই তারপরেও এরা এলাকার মানুষের কাছে ডাক্তার নামেই পরিচিত। এদের ঔষধ বিতরন পদ্ধত্বি আর কার্যকলাপ দেখলে মনে হয় ফার্মেসী মালিকেরাই বড়ো বড়ো ডাক্তার।
আগানগর ইউনিয়নে ব্রাদার্স মেডিসিন কর্নারের মালিক ও ফার্মাসিষ্ট মো আলামাীন বলেন, কেরানীগঞ্জে অনেক ফার্মেসীতেই ফার্মাসিষ্ট আছে, আাবার অনেক ফার্মেসীতেই নেই। যাদের ফামাসিষ্ট নেই তাদের কারনে অনেক সময় সব ফার্মেসী মালিকদের ই সমস্যায় পড়তে হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রন শাখার সহকারী পরিচালক ডা: মো: হাবিবুর রহমান জানান, দেশে সরকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অসংখ্য নাম সর্বস্ব ও ভুয়া ডিপ্লোমা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যারা সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে অনেক ফার্মেসীওয়ালাদের ভুয়া ডিপ্লোমা ডিগ্রি সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে।
এসব ফার্মেসী থেকে জন সাধারনদের ভুল ঔষধ দেয়া হয়ে অধিকাংশ সময়। যার ফলশ্রæতিতে দেখা যায় পরবর্তীতে একটা রোগী সরকারী কোন হাসপাতালে ভর্তি হলে এন্টিবায়টিক তার শরীরে কাজ করে না। আমাদের দেশে সরকারী অনুমোদিত ঔষধ কোম্পানী আছে প্রায় ৫০০ । এসব ঔষধ কোম্পানীগুলোর ফার্মেসী মালিকদের ব্যবসা পরিচালনা করতে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা করে দিচ্ছে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মীর মোবারক হোসাইন বলেন, ফার্মেসী মালিকদের অনেকেরই এ সংশ্লিষ্ট ট্রেনিং নাই, সামান্য জ¦র ঠান্ডাতেও তারা রোগীদের ইচ্ছা মতো এন্টিবায়টিক দিয়ে দেয়।
যেহুতু এটা ঔষধ প্রশাসনের আওতায় তাই অবৈধ ফার্মেসীগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের করার তেমন কিছু থাকে না। কতো গুলো ফার্মেসী আছে তার ধারনা ও আমাদের নেই। তবে আমরা মাঝে মাঝে তাদের তদারকি করার চেষ্টা করি। জন সাধারনের প্রতি অনুরোধ থাকবে সবাই যেন মান সম্মত ফার্মেসী যেগুলোতে ফার্মাসিষ্ট আছে সেখান থেকে ঔষুধ কেনে।