ঢাকার দক্ষিন কেরানীগঞ্জের বাস্তা ইউনিয়ন বাঘাশুর কুমপারা এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রহিম (৪০) নামের এক নির্মানাধীন গো-খামারের শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে বুধবার দিবাগত রাতে যে কোন সময়। বিদ্যুৎস্পৃষ্টএ ঘটনায় পরের দিন খামারের মালিক বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তরিঘরি করে এ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ গ্রামের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করে। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনরাস্থলে গিয়ে নিহত রহিমের লাশ উদ্ধার করে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে খামারের কাজে নিয়োজিত রাজমিস্ত্রি এমদাদ হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রহিম এই নির্মাণাধীন খামারে গত দুই মাস যাবত কাজ করে, আমিও এই খামারে রাজমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করি। গতকাল বুধবার খামারের নিচের ফ্লোর ঢালাই দেওয়া শেষ করে আমিসহ সব রাজমিস্ত্রিরা বাসায় চলে যাই। আগে আমি আর রহিম একসাথে এখানে থাকতাম । আমার স্ত্রী আমার শশুরবাড়ি থেকে গত ৩ দিন আগে আমাদের বাড়িতে চলে আসায় আমি আমার বাসায় থাকি।
আজ সকালে কাজে এসে রহিম দেখতে না পেয়ে ঘরে গিয়ে দেখি রহিম নিচে পরে আছে । এসময় তার তার ডান হাতের তালু ও বাম পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের গোঁড়ায় দিয়ে রক্ত পরার দাগ দেখতে পাই। আমরা তাকে না ধরে অনেক ডাকাডাকি করি কিন্তু কোন সাড়া না পেয়ে বিষয়টি খামারের মালিক সুমনভাইকে জানাই। খবর পেয়ে তারা খামারে আসে এবং লাশ রহিমের দেশের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খামারের মালিক সুমন জানান, আমরা ৩ বন্ধু মিলে গরুর খামার করার জন্য এখানকার স্থানীয় কৃষকলীগ নেতা সফিক খানের জায়গা ভাড়া নেই। এরপর আমরা খামার তৈরী করার কাজ শুরু করিা। খামারের কাজ প্রায় শেষের দিকে। গতকাল বুধবার খামারের নিচের ফ্লোর ঢালাই হয়েছিলো, তাই আমি ও আমার আরো দু’পার্টনার গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে ছিলাম। কাজ শেষে আমরা রহিম ও এমদাদকে ডেকে চা খাওয়ার জন্য দুইজনকে ১০০ করে টাকা দিয়ে চলে আসি।
আজ সকাল হঠাৎ রহিমের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার খবর শুনে আমরা ছুটে আসি। যার মাধ্যমে রহিমকে আমরা এ কাজে নিয়োগ দিয়েছি তাকে বিষয়টি জানাই। সম্পর্কে সে রহিমের স্ত্রীর বড় ভাই। খবর পেয়ে সে ঘটনাস্থলে এসে লাশ দেখে এ্যাম্বুলেন্স করে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিতে অনুরোধ করলে, আমরা আব্দল্লাহপুর স্বদেশ হাসপাতাল থেকে একটি এম্বুলেন্স ভাড়া করি। পরে রহিম লাশ দেশে পাঠানোর জন্য গাড়ীতে উঠালে কোনাখোলা পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে লাশ নিতে বাধা দেয়। পরে পুলিশ লাশের ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যায় ।
এ ব্যাপারে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানার কোনাখোলা ফাঁড়ির ইনচার্জ রামকৃষ্ণ বলেন, স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে খবর পাই যে, পূর্ব বাঘাশুর কুমের পাড় সফিক খাঁনের ভিটায় একজন গো-খামারের শ্রমিক বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে কিন্তু খামারের মালিক বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য লাশ তরিঘরি করে দেশের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এ সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ নিতে বাধা প্রদান করি। এবং লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠাই। এ বিষয়ে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।