কেরানীগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার ওপর হামলার অভিযোগ

কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মীর মোবারক হোসেনসহ কয়েকজন চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মতিউর রহমান ও নাজির রাকিবের নেতৃত্বে বুধবার সকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে হামলার পর অভিযুক্ত সহকারী কমিশনার ও ভূমি অফিসের নাজিরের শাস্তির দাবিতে দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেনচিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

এসময় তারা দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্ম বিরতিও পালন করেন। খবর পেয়ে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডা: এহশানুল করিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) শরীফ রায়হান কবির, কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহে এলিদ মাইনুল আমিন, কেরানীগঞ্জ পুলিশের সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রামানন্দ সরকার, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক অপারেশন গোলাম সারোয়ার ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন লিটনসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।

পরে তারা ঘন্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তারা এ বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাকর্মচারীরা কাজে যোগ দেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিববার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা:মীর মোবারক হোসেন জানান, বুধবার সকালে সহকারী কমিশনার মতিউর রহমান তার এসিআর (বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন) নেয়ার জন্য ভূমি অফিসের একজন পিয়নের মাধ্যমে তার কার্যালয়ে পাঠান। এসময় তিনি এসিল্যান্ডকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে আসতে বলেন এবং শাররীক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর এসিআর দেয়া হবে বলে জানান।.

কিছুক্ষন পর এসিল্যান্ড সেখানে দলবল নিয়ে উপস্থিত হন। তখন তার রক্তচাপ মাপা হয় এবং রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পাওয়া যায়। পরে নিয়মানুযায়ী তাকে ইসিজি করার জন্য হাসপাতালে ২য় তলায় পাঠানো হয়। সেখানে যাওয়ার পর কর্তব্যরত একজন নারী টেকনেশিয়ান তার শার্ট খুলতে বললে তিনি রেগে সেখান থেকে চলে আসেন।

এরপর তিনি আমার কক্ষে ঢুকে আমার সাথে উচ্চবাচ্য করতে থাকেন। তখন তার চিৎকার চেচামেচি শুনে অন্য কর্মকর্তা কর্মচারীরা রুমের সামনে ভীড় জমালে তার সাথে আসা লোকজন তাদের উপর চরাও হয়।

এক পর্যায়ে তারা হাসপাতালে মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডাঃ জাকির হোসেন, সার্জারী বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডাঃ আনোয়ার হোসেন, মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোর্শেদ এর উপরচড়াও হয়ে গায়ে হাত তোলেন।

ডাঃ জাকির হোসেনের জামার কলার চেপে ধরেন এবং ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এসময় আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বের করে দিয়ে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয় হামলাকারীরা।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কর্মচারী মোঃ মিজানুর রহমান ওস্বা স্থ সহকারী মোঃ সাহেব আলী জানান, একজন বিসিএস অফিসারের নেতৃত্বে এ হামলার আমরা
নিন্দা জানাই। পাশাপাশি এসিল্যান্ড মতিউর রহমান, নাজির কাম সন্ত্রাসী নাজির রাকিব হোসেন সহ হামলার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি করছি।

হামলায় অভিযুক্ত ভূমি অফিসের নাজির রাকিব হোসেন জানান, এসিআর নেয়ার সময় আমি এসিল্যান্ড স্যারের সঙ্গে ছিলাম। লোকজন নিয়ে হামলার অভিযোগ সঠিক নয়।

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার মতিউর রহমান বলেন, হাসপাতালের দোতলায় ইসিজি করতে গেলে এক নারী টেকনোলজিষ্ট আমাকে জামাকাপড় খুলতে বলেন। এতে আমি অপমানিত বোধ করি এবং সেখান থেকে চলে এসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এরডাক্তারদের সঙ্গে জিজ্ঞাসা করি ইসিজি করতে হলে জামাকাপর খুলতে হয় বি না।.

এ সময় আমার সাথেতার কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে হামলার অভিযোগ মিথ্যা।

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাশাহে এলিদ মাইনুল আমিন বলেন, পরিবার পরিকল্পনা  ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত ও দু:খজনক। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দুই পক্ষকে নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করছি।

আগামী১৫ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়াহবে।

এ এইচ এম সাগর।

আরো পড়ুন: শিশুর পেটে শিশু।

Check Also

বুড়িগঙ্গায় তেলবাহী ট্রলারে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

বুড়িগঙ্গায় তেলবাহী ট্রলারে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীতে তেলবাহী ট্রলারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে …