এ.এইচ.এম সাগর: বুড়িগঙ্গা নদীর তীর দখল করে গড়ে তোলা অপসোনিন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের লবন আনলোড করার স্থাপনা ও একটি সাত তলা ভবনসহ প্রায় অর্ধশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করেছে বিআইডব্লিউটিএ।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় চতুর্থ ধাপের ৮ম দিনে কেরানীগঞ্জের হাসনবাদ এলাকায় এ উচ্ছেদ অভিযান চালায় সংস্থাটি। এ সময় উচ্ছেদ কাজে বাঁধা দেয়ায় ৭জনকে আটক বিআইডাব্লিউটিএ। আটককৃতরা হচ্ছে ঃ অপসোনিন গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল হেভী কেমিক্যার এর তিনকর্মকর্তা মাসুদুর রহমান (৪১), জহুরুল হায়দার (৪০), সবুজ আলী (৩০), বসুন্ধরা গ্রুপের দুইজন দেওয়ান আতিকুর রহমান, মোঃ রাহাত খান এবং স্থানীয় দুই ব্যাক্তি আব্দুল লতিফ (৭০) ও সাবেক শুভাঢ্যা ইউপি চেয়ারম্যান ছোট ভাই হাজি মোঃ শফিউদ্দিন (৫০)।
পরে ভ্রম্যমান আদালত বসিয়ে গ্লোবাল হেভী বেমিক্যাল ও বসুন্ধরার ৫জনকে ৫০ হাজার টাকা ২লাখ ৫০ হাজার ও অপর দুই ব্যাক্তিকে ২ হাজার করে ৪হাজার টাকা অর্থদন্ড করে আটককৃতদের ছেড়ে দেন। এরপর উচ্ছেদ হওয়া মালামাল প্রায় ১৭ লাখ টাকা নিলামে বিক্রি করে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। ঢাকার চারপাশের নদীকে দখলমুক্ত করতে ৪৪ তম কার্যদিবসে এসে একটি সাত তলা ভবনসহ বেশ কিছু কাঁচাপাকা স্থাপনা গুড়িয়ে দেয় বিআইডব্লিউটিএর দুইটি শক্তিশালী এক্সেবেটর। এ সময় নদীর জায়গা দখল করে গড়ে তোলা অপসোনিন কোম্পানির লবন আনলোডের স্থাপনা ও ইট ভাটাসহ শতাধিক ঘরবাড়ি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করেন সংস্থাটি। পরে উচ্ছেদকৃত মালামাল নিলামসহ ওই প্রতিষ্ঠান দুটিকে অর্থদন্ড দেয় বিআইডব্লিউটিএর ভ্রাম্যমান আদালত।
এ সময় বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট হাবিবুর রহমান হাকিম বলেন, নদীর তীর দখলকারী কাউকেই ছাড় দেয়া হবেনা। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, উচ্ছেদ কাজে বাঁধা দেয়ায় সাতজনকে ২লাখ ৫৪হাজার টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। সেই সাথে উচ্ছেদকৃত মালামাল নিলামে বিক্রি করে টাকা রাষ্ট্রিয় কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে।
এদিকে বিআইডব্লিউটির যুগ্ম-পরিচালক (বন্দর) এ কে এম আরিফ উদ্দিন জানান, নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দেয়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএ। নদীর জায়গা অবৈধভাবে দখল করতে কবরস্থানের নামে অভিনব ভাবে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সাততলা পাশে দ্বিতল ভবনটি ভাঙ্গার পর দেখা গেল মুর্দার গোসল ও নামাজের জায়গায় সেখানে মালামালে গোডাউন রয়েছে। তাই নদী দখলকারী যতবড় শক্তিশালি হোক না কেন কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান উচ্ছদ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেয়া বিআইডব্লিউটিএর এই কর্মকর্তা। দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের নামে ভাঙ্গিয়ে নদীর তীরভূমি দখল দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সকাল ১০ টা থেকে শুরু হওয়া এ উচ্ছেদ অভিযান চলে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত। এদিকে বরাবরের মত বিআইডব্লিউটিএর চলমান এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, ২৯ জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে প্রায় ৫ হাজার অবৈধ স্থাপনাসহ দেড়শ একর জমি উদ্ধার ও সাড়ে ৫কেটি টাকার মালামাল নিলামে বিক্রি করেছে বিআইডব্লিউটিএ।