অপূর্ব চৌধুরী, জবি প্রতিনিধি :বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য কর্তৃক শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিক ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে হয়রানি ও সাময়িক বহিষ্কার, ‘আলোকিত বাংলাদেশ’ পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি শামস জেবিনের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সকল সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্যের দ্রুত পদত্যাগের দাবি জানান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (জবিসাস)।
বৃহস্পতিবার (১৯সেপ্টেম্বর) ১২.৩০ টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় অংশগ্রহণ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক লতিফুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলাম,দপ্তর – প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আহসান জুবায়ের সহ জবিসাসের অন্যান্য নেতা ও সদস্যগণ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির হুমু বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিক ফাতেমা তুজ জিনিয়ার সাথে উপাচার্য সংবিধান পরিপন্থি আচরণ করেছেন।
একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকের সাথে উপাচার্যের এমন কুৎসিত ব্যবহার একটি স্বাধীন দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
গোপালগঞ্জের পবিত্র মাটিতে এমন অসৎ ব্যাক্তিকে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে মানায় না। এসময় তিনি একজন শিক্ষার্থীর সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্যের এমন কুৎসিত ব্যবহারের জন্য তার পদত্যাগ দাবি করেন সেই সাথে অপর এক সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলার দ্রুত বিচার দাবি করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (জবিসাস) সাধারণ সম্পাদক লতিফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকেন তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজের পৈতৃক সম্পত্তি ভেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক – শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকারে অবৈধ ভাবে হস্তক্ষেপ করতে চান তাহলে তা কখনো শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা মেনে নিবেন না।
এসময় তিনি আরও বলেন ক্যাম্পাসে কর্মরত সকল সাংবাদিকদের কন্ঠ রোধ করার জন্য বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়েই একটি বিরাট আয়োজন চলছে যেটা কখনো সাংবাদিকরা মেনে নিবেন না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ঘটনাটি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং তা ছিল উদ্দেশ্যমূলক।
বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই এই রকমের কিছু স্বৈরাচারী মনোভাবসম্পন্ন ব্যাক্তিবর্গ উচ্চপদগুলো দখল করে আছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা জ্ঞান অর্জন এবং নৈতিকতা শিখতে আসি।
কিন্তু যখন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখতে হয় তখন লজ্জায় আমাদের মাথা নত করা লাগে।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (জবিসাস) অন্যান্য নেতারা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) প্রশাসন দাবি করেছেন ফাতেমা তুজ জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও উপাচার্যের ব্যক্তিগত ফেইসবুক একাউন্ট হ্যাক করেছেন।
প্রকৃতপক্ষে যার কোন প্রমাণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দিতে পারেনি। সেই সাথে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর বাবার নামে কুরুচিপূর্ণ কথা তুলে নিজেদের নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছেন উপাচার্য।
উক্ত ঘটনা ছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্যের অন্যান্য অনেক অপকর্মের কথা উল্লেখ করে দ্রুত তার পদত্যাগের দাবি করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার ড. নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ কি হওয়া উচিত?’ এমন একটি স্ট্যাটাসের জেরে গত ১১ সেপ্টেম্বর তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।