ইসলামে রোগীর সেবা

সেবা যে একটা শ্রেষ্ঠ ইবাদত সেটি সহজেই অনুমেয়। হাদিসের আলোকে দেখা যায়, একজন মুসলমানের আরেক মুসলমানের কাছে ছয়টি হক রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম হক হলো কারো রোগ হলে তাকে দেখতে যাওয়া। সেবা করা

হজরত আলী (রা:) বলেন, আমি রাসূল (স:) কে বলতে শুনেছি,“যে ব্যাক্তি সকালে কোন মুসলমান রোগিকে দেখতে যায়, সেবা করে সত্তর হাজার ফিরিশতা তার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত— নেক দোয়া করতে থাকে। যে ব্যাক্তি সন্ধ্যায় কোন মুসলমান রোগিকে দেখতে যায় পরদিন সকাল পর্যš— নেক দোয়া করতে থাকেন। আর তাকে জান্নাতের একটি বাগান দান করা হয়। (তিরমিযী শরীফ)

হজরত সওবান (রা:) বলেন, রাসুল (স:) বলেন, মুমিন বান্দা যখন অসুস্থ মুমিন ভাইকে দেখতে যায় যত¶ন পর্যš— সে অবস্থান করে সে যেন জান্নাতের বাগিচায় থাকে। (মুসলিম শরীফ) রোগীকে দেখতে যাওয়ার পর তার সাথে মঙ্গল জনক কথা বলতে হবে। রাসুল (স)
বলেন, “যখন তুমি কোন রোগীর কাছে যাবে কিংবা মরণোন্মখ ব্যাক্তির নিকট যাবে তখন তার সাথে মঙ্গল জনক কথা কথাবার্তা বল। কেননা, তুমি যা বল ফিরিশতাগন তার উপর আমিন আমিন বলে”। (মুসলিম ও মিশকাত শরীফ)

হজরত আবু হুরায়রা (রা:)হতে বর্নিত রাসুল (স:) বলেন, “যে ব্যাক্তি কোন অসুস্থ ব্যাক্তিকে দেখতে যায় তখন আকাশ থেকে এক ফিরিশতা তাকে লক্ষ করে বলতে থাকে মুবারক হও তুমি এবং মুবারক হক তোমার এই পথ চলা এবং তুমি জান্নাতে একটি স্থান করে নিলে”। (ইবনে মাজাহ শরীফ) রোগীকে দেখতে গেলে তার সেবা। প্রথমেই তার কপালে হাত রেখে তার অবস্থা জিজ্ঞাসা করতে হবে। রোগী অথবা রোগীর পরিবার পরিজনের সাথে এমন কথাবার্তা বলা উচিত নয় যাতে তারা রোগীর হায়াতের ব্যাপারে নিরাশ হয়ে যেতে পারে। সকলকে সাআন্তনার কথা বলতে হবে, কোন ভাবেই মন ভাঙ্গা কথা বলা উচিত নয়। (আদাবুলমু‘আশারাত)

যারা রোগীর সেবা করা আমাদের কর্তব্য। কোন রোগী যদি ডাক্তারের ভাল ব্যাবহার ভাল পেয়ে দোয়া করে তাহলে তার দোয়া কবুল হয়ে যায়। অন্যথায় কোন রোগী যদি কোন ডাক্তারের ওপর অসুন্তুষ্ট হয়ে ডাক্তারের জন্য বদদোয়া করে সেটি ও আলাহর দরবারে কবুল হয়। (ইবনে মাজাহ)তাছাড়া আলাহর দরবারে রোগীর দোয়া ফিরিশতাদের দোয়ার মতো কবুল হয়। হজরত উমর (রা:) বলেন, রাসুল (স:) বলেন, তুমি কোন রোগীকে দেখতে গেলে তোমার জন্য দোয়া করতে বল। কেননা রোগীর দোয়া ফিরিশতাগনের দোয়ার মত হয়। (উসওয়াতে রাসুলে
আকরাম স.) যে ব্যাক্তি রোগীর সেবা করল তারা আলাহর সেবা করল। যারা রোগীকে অবহেলা করল তারা আলাহর প্রতি অবহেলা করল সে জন্য শেষ বিচারের দিন আলাহ তাদেরকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন।কবি আব্দুল কাদিরের ‘মানুষ’ কবিতার প্রথম প্যারাটিতে উলেখ করা হয়েছে-কবির ভাষায় হাশরের দিন বলিবেন খোদা হে আদম সš—ান , তুমি মোরে সেবা কর নাই যাবে ছিনু রোগে অজ্ঞান, মানুষ বলিবে তুমি প্রভু করতার, আমরা কেমনে লইব তোমার পরিচর্যার ভার? বলিবেন খোদা দেখনি মানুষ কেদেঁছে রোগের ঘোরে, তারি শশ্র“ষা করিলে
তুমি যে সেথায় পাইতে মোরে। এটা চরম সত্য যে রোগীর সাথে দেখা করলে নিজে রোগী হলে অন্য মানুষ দেখা কিংবা সেবা করতে আসবে।

মোঃ আবু তালহা তারীফ

 

আরো পড়ুন: কেরানীগঞ্জে স্মার্ট কার্ড বিতরন।

নিউজ ঢাকা ২৪।

Check Also

হাবিবুর রহমান

মাত্র ৪৯ দিনে কোরআনে হাফেজ ৮ বছরের ছোট্ট হাবিবুর রহমান

স্বাভাবিকভাবে হেফজ বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে পুরো কোরআন মুখস্থ করতে সময় লাগে এক থেকে দেড় বছর। …