অপূর্ব চৌধুরী, জবি প্রতিনিধি :বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) অধ্যয়নরত শেরেবাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দ্রুত শাস্তির দাবিতে আজ সোমবার (৭ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশাল এক মশাল মিছিল করেছেন জবি শিক্ষার্থীরা।
আজ সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে ‘ আমার ভাই মরল কেন? প্রশাসন জবাব চাই’ হলে হলে সন্ত্রাস, রুখে দাঁড়াও ছাত্রসমাজ ‘ ‘ দিয়েছি রক্ত , আরো দেবো রক্ত’ ‘ রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’ ‘ শিক্ষা -সন্ত্রাস, একসাথে চলবে না’, ‘ সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে’ এই স্লোগান দিতে দিতে মশাল মিছিলটি বাহাদুরশাহ পার্ক, শাঁখারী বাজার ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ রোড হয়ে আবার জবিতে এসে শেষ হয়েছে।
কয়েক হাজার জবি শিক্ষার্থী এই মশাল মিছিল মিছিলে যোগদান করেন। তাদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
মশাল মিছিল শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে এক বিক্ষোভ সমাবেশ করেন জবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এই বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্র ইউনিয়ন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) সংসদের সভাপতি মিফতাহ আল ইহসান বলেন, আজকে আমাদের হিন্দু ধর্মের ভাইদের সাথে উৎসবে সামিল হবার কথা ছিল।কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা এসেছি আমাদের ভাই ‘আবরার’ হত্যাকারীদের বিচার চাইতে। আমরা এই নারকীয় ও বর্বর হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলাম বলেন, আজকে বুয়েটে শুধু আবরারকে হত্যা করা হয়নি। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমেই স্পষ্টভাবে বোঝা যায় বাংলাদেশের কোন জায়গাতেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপদ না। প্রশাসনকে অতিদ্রুত এই হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের বিচার করার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস কে কেন্দ্র করে শিবির সন্দেহে আবরারকে রবিবার (৬ অক্টোবর) রাত আটটার দিকে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে রাত আড়াইটার দিকে হলের সিঁড়ির পাশে আবরারের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ডাক্তারকে খবর দিলে তিনি এসে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মারধরের সময় ২০১১ কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু। তিনি বলেন, আবরারকে শিবির সন্দেহে রাত আটটার দিকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে আনা হয়। সেখানে আমরা তার মোবাইলে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার চেক করি। ফেসবুকে বিতর্কিত কিছু পেইজে তার লাইক দেয়ার প্রমাণ পাই। এক পর্যায়ে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসি। এরপর হয়তো তাকে মারধর করে থাকতে পারে। পরে রাত তিনটার দিকে শুনি আবরার মারা গেছে।