বিজ্ঞানের উন্নতির এই যুগে দাওয়াতের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে অল্প সময়ে কম কষ্টে অসংখ্য মানুষের নিকট দ্বীনি দাওয়াত দেওয়া খুব সহজ হয়ে দাড়িয়েছে। আধুনিক মাধ্যম গুলোতে ইসলামের সহীহ আক্বীদার মানুষ কম আসায় এ ক্ষেত্রে সুযোগ নিয়ে নিচ্ছে ভ্রান্ত একটি দল বা গোষ্ঠি।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে পৃথিবী আজ এখন হাতের মুঠোয়। বিজ্ঞানের কল্যানে গোটা বিশ্বই এখন একটি গ্রামে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে ডিজিটাল তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, তথ্য প্রযুক্তির যুগে অন্য ধর্মালম্বীরা যেভাবে তাদের ধর্মীয় কাজ সারা বিশ্বে মুহুর্তে প্রচার করছে তাদের তুলনায় আমরা মোটেও পারছি না। মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রচারকার্য তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ, ব্যপক হারে প্রচার করার জন্য ইহুদিদের রয়েছে প্রায় সাড়ে আট লক্ষেরও বেশী ওয়েব সাইট, খ্রিষ্টানদের প্রতারনায় রয়েছে প্রায় পাচ লক্ষের বেশী, তাছরা অনান্য অমুসলিমদের রয়েছে প্রায় চার লক্ষের বেশী ওয়েব সাইট।
তারা তাদের ওয়েব সাইট,ফেসবুক,টুইটার,ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুসলমানদের নিকট তাদের দাওয়াতি কাজ করছে। মসজিদের মিম্বার ,বই পুস্তুক ওয়াজ মাহফিলের পত্র পত্রিকার মতো আধুনিত প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্বীনি দাওয়াত দেওয়া আজ আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে। তাছারা সকল নবী রাসুলগন তাদের যুগে তৎকালীন প্রযুক্তিকে কাজে কাজে লাগিয়ে মহান আল্লাহর বিধান মানুষের নিকট প্রচার করেছেন হজরত মুসা (আ:) এর যুগে সময় জাদুর প্রভাব ছিল অধিক মুসা (আ:) সে যুগের প্রেক্ষাপটে আল্লাহ মুজেযা ব্যবহার করে ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের নিকট দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন ফলে অসংখ্য জাদুকর আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল।
হজরত ঈসা (আ:) এর সময়ে চিকিৎসা বিদ্যার ব্যবহার ছিল বেশী তাই তিনি আল্লাহ প্রদত্ত চিকিৎসা বিদ্যার ব্যবহারের মাধ্যমে দ্বীনি দাওয়াত দিয়েছেন। সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর তৎকালীন সময়ের প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দ্বীনি দাওয়াত দিয়েছেন তখন কার সময়ে সাহিত্যের প্রভাব ছিল খুব বেশী তাই তিনি আরবী সাহিত্য ব্যবহার করে আল্লাহর সুমহান বানী মানুষের নিকট পৌছে দিয়েছেন।
সকল নবী রাসুল মানবজাতীর নিকট গিয়ে মহান প্রভূর পরিচয় তুলে ধরে ইসলামের পথে দাওয়াত দিয়েছেন। সৎকাজের আদেশ অসৎ কাজের নিষেধ প্রদান করই ছিল নবী রাসুলদের কাজ। সকল নবীই তার উম্মতকে তাওহীদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন এবং শিরক ও বিভিন্ন পাপকার্ম থেকে নিষেধ প্রদান করেছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,“ যারা অনুসরন করে বার্তা বার্তাবাহক উম্মি নবীর যার উল্লেখ তারা তাদের নিকট রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায় যিনি তাদেরকে সৎকাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করেন”।(সূরা আরাফ-১৫৭)
দ্বীনি দাওয়াতের পদ্ধতি একদিকে যুগ উপযোগী উন্নত মানের হওয়া দরকার অন্য দিকে সমকালীন বাতিল শক্তির মোকাবেলা করার করার মত যোগ্যতা ,দক্ষতা ও কৌশল প্রয়োগের সক্ষমতা থাকা জরুরী। তাই চাই মিডিয়ার ব্যবহার এই মিডিয়া চার ভাগে ভাগ করা যায়।
১.প্রিন্ট মিডিয়া,
২.অডিও মিডিয়া,
৩.ভিডিও মিডিয়া,
৪. কম্পিউটার মিডিয়া।
আধুনিক বিশ্বে দ্বীনি দাওয়াতের অন্যতম মাধ্যম ওয়েব সাইট,ওয়েব পোর্টাল,অনলাইন ফ্রি বই প্রকাশ করে,ষ্কানিং কপি আপলোড করা বিজ্ঞাপনে ইসলামী ছবি ব্যবহারের মাধ্যমে। তাছারা আরো রয়েয়েছে ব্লগ, যা দ্বীনি দাওয়াত দেওয়ার জন্য অন্যতম একটি মাধ্যম আর একটি ব্যক্তি কেন্দ্রিক পত্রিকা। বর্তমান সময়ে ইসলামের সুমহান বানী লিখে দ্বীন দাওয়াতের ব্যাপক ভূমিকা পালন করা যায় এই ব্লগের মাধ্যমে তাছারা আরো রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এই ফেসবুকের ইসলামের বিভন্ন তথ্য শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দ্বীন দাওয়াতের সাওয়াব হাসিল করা যায়।
দ্বীনি দাওয়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ আরো একটি মাধ্যম হল ইউটিউব বা এর নিজস্ব চ্যালেন তৈরি, যার মাধ্যমে জুমার খুতবা ইসলামী বিভন্ন স্থান সমূহের দৃশ্য নিজের কিছু ধর্মীয় আলোচনা করে মানুষের নিকট দেখার সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে। প্রযুক্তির এই দুনিয়ায় আরো রয়েছে টেলিভিষন ও রেডিও যার মাধ্যমে ধর্মীয় আলোচনার মাধ্যমে দ্বীনি দাওয়াত দেওয়া যেতে পারো ।
অনলাইন পত্রিকা ও সমাজ পরিবর্তন ও সমাজের ভালো কিছু প্রচলনের ক্ষেত্রে সর্বপেক্ষা স্থায়ী ভূমিকা রাখতে পারা প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে ইসলামী কলাম লিখে দ্বীনি প্রচারের বিশেষ ভূমিকা পালন করা যায়। বর্তমানে কোরআন ও হাদীস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে রয়েছে বিভন্ন সফটওয়্যার যা কোন বিষয়ে জানাকে সহজ করে দেয় এই সফটওয়্যার সমূহ প্রচারের মাধ্য্যমে দ্বীনি দাওয়াত দেওয়া যায়।
তাছারা বর্তমান বিশ্বে দ্বীনি দাওয়াত দেওয়ার জন্য হাতের মুঠোয় হয়ে গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে অ্যন্্রয়েড মোবাইল। এই মোবাইলে ইসলাম বিষয়ক অ্যাপসমূহ,বিভিন্ন অনুবাদ,মাসয়ালা সহ বিভন্ন তথ্য সমূহ রেখে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিয়ে দ্বীনি দাওয়াতের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আধুনিক প্রযুক্তিতে ইসলামী দাওয়াত প্রদান করা তথা সৎকাজের আদেশ প্রদান করা ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ প্রদান করা সকল মুসলমানের উপর অবশ্য কর্তব্য। উম্মতে মুহাম্মাদীর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট হল দ্ওায়াত,আদেশ-নিষেধ,দ্বীন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের দায়িত্ব। এই দ্বীনি দাওয়াত যে ব্যতি পালন করবে সে সফলতা অর্জন করবে। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,“আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়,যারা কল্যানের প্রতি আহবান করবে,ভাল কাজের আদেশ দিবে এবং মন্দকাজ থেকে নিষেধ করবে আর তারাই সফলকাম”।(সূরা ইমরান-১০৪)
দাওয়াতি কাজ শুধুমাত্র খানকা, মসজিদে,সংগঠনে, ওয়াজ মাহফিলে,লেখালেখির কাজে সীমাবদ্ধ রাখলে হবেনা। বর্তমানে ডিজিটাল তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, তথ্য প্রযুক্তির যুগে অন্য ধর্মালম্বীরা যেভাবে তাদের ধর্মীয় কাজ সারা বিশ্বে মুহুর্তে প্রচার করছে তাদের তুলনায় আমরা মোটেও পারছি না। মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রচারকার্য তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ, ব্যপক হারে প্রচার করার জন্য ইহুদিদের রয়েছে প্রায় সাড়ে আট লক্ষেরও বেশী ওয়েব সাইট, খ্রিষ্টানদের প্রতারনায় রয়েছে প্রায় পাচ লক্ষের বেশী, তাছরা অনান্য অমুসলিমদের রয়েছে প্রায় চার লক্ষের বেশী ওয়েব সাইট। তারা তাদের ওয়েব সাইট,ফেসবুক,টুইটার,ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুসলমানদের নিকট তাদের দাওয়াতি কাজ করছে। তাই আমাদের দাওয়াত মুসলমানদের নিকট সিমাবদ্ধ না রেখে অমুসলিমদের নিকট গিয়ে আরো ব্যাপক হারে দাওয়াতি কাজ করতে হক্ষ।
অমুসলিমদের নিকটে দ্বীনি দাওয়াতের কারনে অমুসলিম দেশে ক্রমেই মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতারং বিশ্ববিদ্যালয়,কলেজ মাদ্রাসা,স্কুল বন্ধ থাকাবস্থায় কিছু বন্ধু মিলে একজন আলেমকে সাথে নিয়ে নিজ এলাকায় সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে সরকারী বেসরকারী উচ্চপদমর্যাদার কর্মকর্তা সহ এলাকার মেম্বার,চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রী, সকলের নিকট দিয়ে দ্বীনি দাওয়াত প্রচার করলে আশা করা মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিবে। যদি দাওয়াত প্রচারকারীদের তারা কোন রুপ অবহেলা করে কিংবা গালমন্দ করে মন খারাপ না করে নবী রাসুলদের কাজে এগিয়ে যেতে হবে। মুসলিম অমুসলিম ব্যক্তিকে দাওয়াত দিলে মানুক বা নাই মানুক ফায়দা হোক বা না হোক নিজের ফায়দা হবে। অন্যের ঈমান আমল দোরস্ত করার কাজে সহযোগিতা করলে আল্লাহ নিজের আমাল দোরস্ত করে দেন। রাসুল (ষা:) বলেন,“একজন বান্দা আরেক জন বান্দার সাহায্যে থাকলে আল্লাহ পাকও তার সাহায্যে থথাকবেন। অন্যের ঈমান অঅমলের কাজে সাহায্য করলে আল্লাহ পাক নিজের ঈমান আমলের ফয়সালা করে দিবেন”।(মুসলিম শরীফ)
দ্বীনি দাওয়াত দেওয়া প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তার আওতাধীন সকল ব্যক্তির উপর দেওয়া অবশ্যক। পরিবারের কর্তার জন্য তার স্ত্রী,সন্তানদেরকে দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে ইসলামের শারিয়া মোতাবেক পরিচালনা করা, বিশ্ববিদ্যালয়,কলেজ,মাদ্রাসা,স্কুল এর প্রধানগন তার সহকারী ও শিক্ষার্থীদের,মিল ফ্যাক্টরী বা বিভিন্ন গামের্ন্টস বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের পরিচালকগন তার অধিনস্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের, এলাকার মেম্বর-কমিশনার, চেয়ারম্যান, এমপি,মন্ত্রী কিংবা শাসকগন যার যার অধিনস্ত সকলকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ প্রদান করে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয়ের জন্য দাওয়াত দিবে। কেননা রাসুল (সা: বলেন,“তোমরা প্রত্যেকেই যিম্মাদার এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার অধীনস্তদের ব্যাপারে জিজ্ঞাজিত করা হবে”।(বুখারী শরীফ
মো: আবু তালহা তারীফ।
নিউজ ঢাকা ২৪