কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক গুদাম; দ্রুত না সড়ালে আবারো দুর্ঘটনার আশঙ্কা

কেরানীগঞ্জের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রাসায়নিক কেমিক্যালের গুদাম। প্রশাসনের অগচরেই গড়ে তোলা হয়েছে এ সমস্ত গুদাম। দ্রুত এ গুদামগুলো স্থানান্তর না করলে আবারো বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

সরেজমিন কেরানীগঞ্জের আতাশুর, বামনশুর, আটি, দেউলী সহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ গুদামেই রাতের বেলা কাজ করা হয়। কাভার্ড ভ্যান, ট্রাক, পিক আপে করে মাল লোড আনলোড করা হয় রাতের অন্ধকারে। এ জন্য এলাকাবাসী তেমন কিছুই জানে না এসমস্ত কেমিক্যাল গুদাম সম্পর্কে।

স্থানীয়রা আরো জানান, এখানকার কিছু অসাধু বাড়িওয়ালা অতিরিক্ত মুনাফার আশায় তাদের জায়গা কোন নিয়মনীতি না মেনেই কেমিক্যাল গুদাম হিসেবে ভাড়া দিয়েছে। আর এ কারনেই দুর্ঘটনা ঘটেছে । তবে কতোগুলো গোডাউন রয়েছে এ সম্পর্কে কারোই কোন স্পষ্ট ধারনা নেই।

কেরানীগঞ্জের আতাশুর এলাকার বাসিন্দা হাবীব জানান, আতাশুর এলাকায় প্রায় ৫/৬ টির মতো কেমিক্যাল গোডাউন রয়েছে। এগুলো নিয়ে এলাকাবাসী চিন্তিত। ডাকপাড়ার বিষ্ফোরনের পরে মনে ভয় ঢুকে গেছে। কখন কি হয় আল্লাহ মালুম। প্রশাসনের কাছে দ্রæত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

কালন্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো: নুর উদ্দিন জানান, আমাদের ইউনিয়নেও বেশ কয়েকটি কেমিক্যালের গোডাউন আছে। পুরান ঢাকার মতো আমরাও কেমিক্যাল মুক্ত কেরানীগঞ্জ চাই। এ জন্য সরকারের কাছে অক’ল আহŸান জানাই।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত দেবনাথ জানান, কেরানীগঞ্জে কি পরিমান গুদাম আছে তার সঠিক হিসাব জানা নেই। প্রতিটি গুদাম ই গোপনে গড়ে তোলা হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে প্রতিটি এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে, ভবন মালিকদের সাথে আমরা কয়েক দফা আলোচনা সভা করেছি।

আমরা পরিষ্কার ভাবেই বলতে চাই আবাসিক এলাকায় কোন গুদামঘর রাখতে দেয়া হবে না। পর পর দুটি ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার পরে উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই কাজ করছে।

এ দিকে, পূর্ব বন্দ ডাক পাড়ায় কেমিক্যাল দুর্ঘটনার গুদামটির মালিক সম্পর্কে এখনো কোন তথ্য পাওয়া যায় নি। এলাকাবাসী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভবনটির মালিক ও গুদামের মালিক মো: মারুফ হোসেন চিকিৎসার জন্য গত ১০ দিন যাবৎ সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। তিনি এখানে খুব একটা আসেন না। এখানে তার একজন ম্যানেজার নিয়োগ দেয়া আছে। মূলত এই গোডাউনটি ম্যানেজারই দেখা শোনা করেন। ঘটনার পর থেকে ম্যানেজারও পলাতক রয়েছে।

এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম পিপিএম জানান, ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করা হয়েছে। যতটুকু জানতে পেরেছি মালিক মারুফ হোসেনের বাড়ি পুরান ঢাকায়।
উপজেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির আহবায়ক সকহকারী কমিশনার ভুমি ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ কামরুল হাসান সোহেল জানান, কেমিক্যালের গুদামটি সম্পূর্ন অবৈধভাবে ছিল।

গুদামের মালিক ম্যানেজার না থাকার কারনে তথ্য সংগ্রহ করতে বিলম্ব হচ্ছে। বিষ্ফোরক অধিদপ্তরের লোকজনকে আমরা আসতে বলেছি। কি কারনে এতো বড়ো ধরনের বিষ্ফোরন ঘটলো তা তাদের দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। আশা করি খুব দ্রæত সময়ের মধ্যেই আমরা তদন্ত কাজ শেষ করতে পারবো।

নিউজ ঢাকা

আরো পড়ুন,ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে রাজশাহী কলেজে মানববন্ধন

Check Also

কেরানীগঞ্জে চারতলা ভবন থেকে পড়ে নারীর মৃত্যু

কেরানীগঞ্জে চারতলা ভবন থেকে পড়ে নারীর মৃত্যু

ঢাকার কেরানীগঞ্জের বনগ্রামে নিজ বাড়ির চতুর্থ তলার বেলকনি থেকে পড়ে তাহমিনা (৩৫) নামে এক নারীর …