প্রতিবছরের মতো এবারও পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে সবচেয়ে বড় আয়োজন থাকছে রমনা পার্কে। অনেক মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা। এই হাজারো মানুষের চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে ট্রাফিক নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
গত ১২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ডিএমপির পক্ষ থেকে বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নির্দেশনা অনুযায়ী, রমনা পার্কের প্রবেশ পথগুলো হলো- রমনা রেস্তোরাঁ গেট, অস্তাচল গেট (শিশু পার্কের বিপরীতে), অরুণোদয় গেট (সুগন্ধার বিপরীতে), শ্যামলীমা গেট (কাকরাইল মসজিদের দক্ষিণে), স্টার গেট (মৎস্য ভবন ক্রসিং) ও নতুন গেট (বৈশাখী অস্তাচল গেটের মাঝামাঝি)।
পার্ক থেকে বের হওয়ার পথগুলো হলো- উত্তরায়ন গেট (মিন্টো রোডের পশ্চিম প্রান্ত) ও বৈশাখী গেট (আইইবি’র বিপরীতে) ব্যবহার করতে পারবেন। প্রবেশের নির্ধারিত শেষ সময়ের পর রমনা পার্কের সব গেট বের হওয়ার গেট হিসেবে ব্যবহার করে দর্শনার্থীরা বের হতে পারবেন।
এছাড়াও রমনা পার্কে প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তা হচ্ছে, ছায়ানটের শিল্পী ও কলাকুশলীরা রমনা রেস্তোরাঁ গেট দিয়ে এবং সকাল ৬টা পর্যন্ত বৈশাখী গেট দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।
রমনা পার্কের ভেতরে প্রবেশ এবং বাহির গেটগুলো চিহ্নিত করে ‘প্রবেশ গেট’ এবং ‘বাহির গেট’ লেখা বড় আকারের অ্যারো সাইনের ডিজিটাল ব্যানার/সাইনবোর্ড দৃশ্যমান স্থানে স্থাপন করা হবে। রমনা পার্কে পর্যাপ্ত তল্লাশির মাধ্যমে আগত দর্শনার্থীসহ সকলকে ভিতরে প্রবেশ করতে হবে। এছাড়া রমনা পার্কের ভিতরে ও বাইরে পুলিশের পোশাকে এবং সাদা পোশাকে সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
=======================================
জেল থেকে বলছি – সুরের জাদুকর – জেমS
পুরো নাম ফারুক মাহফুজ আনাম জেমস। বাংলাদেশের এই বিখ্যাত রক সংগীত শিল্পীর জন্ম ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর রাজশাহী বিভাগের নওগা জেলায়।তবে তিনি বেড়ে ওঠেন চট্টগ্রামে।তার বাবা ছিলেন একজন সরকারী কর্মচারী, যিনি পরবর্তীতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সংগীত জেমসের পছন্দ হলেও তার পরিবারের তা পছন্দ ছিল না।নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় গানের জন্য পরিবারের সাথে অভিমান করে ঘর ছেড়েছিলেন কিশোর বয়সে।আশির দশকে চট্টগ্রাম আজিজ বোর্ডিং এর ১২/১২ নাম্বার একটি ছোট কামড়ায় শুরু করেন সংগ্রামী জীবন।এখান থেকেই তার সংগীত ক্যারিয়ার শুরু।কিছু বন্ধুদের নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ফিলিংস নামক একটি ব্যান্ড যার বর্তমান নাম হচ্ছে নগরবাউল।তার ব্যান্ড দলের প্রধান গিটারিস্ট ও কন্ঠদাতা তিনি নিজেই।গান তৈরীর নেশায় আজিজ বোর্ডিং-এ তিনি কাটিয়েছেন অনেক বিনিদ্র রাত।

১৯৮৬ সালে ঢাকায় এসে ‘স্টেশন রোড’ নামক প্রথম এলবাম প্রকাশ করেন তারপর ‘জেল থেকে বলছি’।জেমস তার সুরের মাধুর্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন নীরব হাহাকার,প্রেম আকুতি,অন্যায় প্রতিবাদের ভাষা।
১৯৯২ সালে জেমস বাংলাদেশের মডেল ও অভিনেত্রী রথীকে বিয়ে করেন।২০০১ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়, পরবর্তীতে বেনজীরকে বিয়ে করেন।
তখন ১৯৯৩ সাল, ‘জেল থেকে বলছি’ নিয়ে আসা গানটি দিয়ে আবার ঝলকানি দিয়ে জানান দেন জেমস আছে।এই গানটি দিয়ে নতুন প্রজন্মের শ্রোতাদের নিকট ভ্যারিয়েশন ও ইমেজ তৈরি করেন।এ সময়টাকে অডিও বাজারের চরম সফল যুগ বলা হয়।
বাংলাদেশের সংগীত বাজারে যখন ‘জেমস’ আলোচিত একটি নাম তখন তার গায়কী ধরণ নিয়ে কিছু ভয়াবহো সমালোচক তৈরী হয় এবং তার বিরোধিতা করতে শুরু করেন।১৯৯৬ সালে সেইসব সমালোচকদের মুখে ছুড়ে মারেন কবি শামসুর রহমানের কবিতা থেকে নেওয়া ‘সুন্দরীতমা’ গানটি।কবির অনুমতি নিয়েই জেমস কবিতাকে সুরের মাধুর্যতা দিয়ে গানে রুপ দিয়েছেন।
বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভারতেও পেয়েছেন সমান জনপ্রিয়তা। ২০০৬ সালে ভারতের বিখ্যাত প্রযোজক,পরিচালক মহেষ ভ্যাটের গ্যাংস্টার ছবিতে ভিগি ভিগি গান গেয়ে হয়েছেন কোটি জনতার প্রিয় শিল্পী। এরপর একই প্রযোজকের ও লামহে মেট্রো ছবিতে কণ্ঠ দিয়ে কাপিয়েছেন পুরো ভারত।সর্বশেষ ওয়ার্নিং ছবির টাইটেল গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।
এরই মধ্যে মুম্বাই স্টুডিওতে রেকর্ড করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিজের জনপ্রিয় গানগুলো হিন্দী ভার্সনে করার যা অনেক দিন থেকেই করার কথা চলছিল।যে গানের তালিকায় থাকছে – মা,কবিতা,বাবা,জেল থেকে বলছিসহ জনপ্রিয় দশটি গান।
যে আজিজ বোর্ডিং থেকে আজকের জেমসের উথান হয়েছিল সেই আজিজ বোর্ডিংকে উৎসর্গ করে গেয়েছেন আমার প্রিয় আজিজ বোর্ডিং গানটি।
জেমস বাংলাদেশের সকল সংগীত প্রিয় মানুষের কাছে (গুরু) নগরবাউল নামে পরিচিত।সুরের মাধুর্য দিয়ে তিনি কোটি কোটি সংগীত প্রেমীর হৃদয় স্পর্শ করেছেন।আজকের বিশ্ব তারকা জেমসের দুঃখ তার সাফল্য বাবা-মা কেউই দেখে যেতে পারেন নি।