বিশ্বখ্যাত অভিযাত্রী জেমস কুকের ১৭৭৪ সালের ৭ই সেপ্টেম্বরে লেখা লগবুক থেকে জানা যায় যে আগের দিন রাতে জাহাজের নাবিকরা সমুদ্র থেকে কিছু মাছ ধরেন। মাছগুলো কাটার পর নাড়িভুঁড়িগুলো খেতে দেন জাহাজে রাখা শূকরগুলোকে। রাতের খাবার খাওয়ার পর পরই নাবিকদের শরীর অবশ হয়ে আসে, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে চায়। সাথে প্রচন্ড পেটব্যথা, মাথাব্যথা আর বমি। নাবিকরা বুঝতে পারেন, তারা ভুল করে বিষাক্ত মাছ খেয়ে ফেলেছেন। সারারাত ছটফট করে সকালের দিকে তারা মোটামুটি সুস্থ্য অনুভব করেন। শূকরগুলোর অবস্থা দেখার জন্য তারা খোঁয়াড়ে যান, সেখানে সবগুলো শূকর মরে পড়ে আছে। নাবিকরা অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন। যে অংশগুলো তারা ফেলে দিয়েছিলেন সেগুলোতেই সবচেয়ে বেশী বিষ ছিল। যে মাছ নিয়ে এই ঘটনা তার নাম পটকা মাছ -পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত মাছ!

পটকা বা পাফার ফিস, যা জাপানে ফুগো মাছ হিসেবে পরিচিত তা এই গ্রহের সবচেয়ে বিষাক্ত মাছ। টেট্রোডোটক্সিন নামে এক বিবশকারী বিষ আছে পটকা মাছের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ- প্রত্যঙ্গে। এই বিষ সায়ানাইডের চেয়ে ১২০০ গুণ বেশী মারাত্মক। একটা মাঝারি আকারের পটকা মাছে যতটুকু টেট্রোডোটক্সিন থাকে, তা ৩০ জনেরও বেশি লোকের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। টেট্রোডোটক্সিন বা টিটিএক্স একটি শক্তিশালী বিষাক্ত পদার্থ যা মানুষের সেল মেমব্রেনের সোডিয়াম চ্যানেল বন্ধ করে দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম।
তবে খটকা লাগে ভেবে যে জাপানের হোটেল রেস্তোরাঁয় পটকা বা ফুগো মাছের অনেক কদর। আসলে ফুগো জাপানের জনপ্রিয় একটি খাবার যা উপভোগ করতে জীবন বাজি রাখতে হয়। দামও অত্যন্ত চড়া। এসব হোটেল রেস্তোরাঁয় উচ্চ বেতনে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শেফ বা বাবুর্চি রাখা হয় ফুগো মাছ কেটে তা থেকে সতর্কতার সাথে বিষাক্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে বের করার জন্য। কারণ পটকা মাছের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গে বিষ থাকে না। মাছের বিষাক্ত পদার্থটি তার যকৃত, ডিম্বাশয়, অন্ত্র এবং চামড়ার মধ্যে খুব বেশি ঘনীভূত থাকে, তবে শরীরের পেশীসমূহ সাধারণত বিষমুক্ত থাকে। পটকা মাছের সবচেয়ে বিপজ্জনক অংশ হলো এর লিভার বা যকৃত। আর এ কারণে মাছটির লিভারের সামান্য অংশও যদি মাছটিতে থেকে যায়, তাহলে তা বিষাক্ত হয়ে পড়ে এবং মানুষ মারা যায়।
সারা পৃথিবীজুড়ে পটকার অসংখ্য প্রজাতি থাকলেও বাংলাদেশে প্রায় ২০-২৫টি প্রজাতির পটকা মাছ পাওয়া যায় যাদের দুটি প্রজাতি মিঠাপানিতে আর বাকিগুলো সমুদ্রে বাস করে। মিঠাপানির উভয় প্রজাতির পটকা মাছই সারাবছর কমবেশি বিষাক্ত থাকে।

বাংলাদেশের নদী, হাওর, বিল ও উপকূলে সবচেয়ে বেশী যে পটকা মাছের প্রজাতিটি পাওয়া যায়, তার নাম দাগফুটকি পটকা। এ মাছকে স্থানীয়ভাবে টেপা বা ফোটকা মাছও বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Tetraodon cutcutia এবং ইংরেজিতে Ocellated pufferfish বলা হয়।
দাগফুটকি পটকা সারাদেশে স্বাদুপানিতে সর্বত্রই আছে। দৈর্ঘ্য সচরাচর ৫ থেকে ৯ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। তবে হাওরাঞ্চলে ও নদীতে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৬ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের পটকা মাছও পাওয়া গেছে। দেহ অনেকটা গোলাকার, মাথা বড়, চওড়া ও ভোঁতা। চোখ দুটি পরস্পর থেকে দূরে, মাথার উপরের দিকে অবস্থিত। লেজের দিক হঠাৎ সরু, পিঠ সবুজ-হলুদ, পেট সাদা। সারা পিঠ ও পেট জুড়ে রয়েছে অজস্র ছোট্ট ছোট্ট কাঁটা। গলবিলের সঙ্গে যুক্ত ছিদ্রপথ ও একটি ভালবের সাহায্যে বাতাস দিয়ে এ মাছ শরীরটা বেলুনের মতো ফুলাতে পারে। উপরিতল থেকে সামান্য নীচে মুখ আর তাতে টিয়া পাখির ঠোঁটের মতো বাঁকানো অত্যন্ত শক্তিশালী দু’পাটি দাঁত আছে। এই দাঁতের সাহায্যে এরা শিকারকে কাবু করে ফেলে। এদের শিকার সাধারণত শামুক, ঝিনুক, গলদা চিংড়ি। বাসস্থান, প্রজাতি ও ঋতুভেদে পটকার বিষের তীব্রতা ভিন্ন হয়। বৈশাখে যে পটকা বিষাক্ত, কার্তিকে সেটি বিষহীন হতে পারে। সাধারণত: প্রজনন ঋতুতে বা বর্ষাকালে এ মাছটি অধিক মাত্রায় বিষাক্ত হয়ে পড়ে। তবে অন্যান্য সময়েও মাছটি কমবেশী বিষাক্ত থাকে।

পটকার বিষে আক্রান্ত হলে তিন থেকে ত্রিশ মিনিটের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিবে। বিষে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম উপসর্গ দেখা দেয় জিভ ও ঠোঁটে। প্রথমে জিহ্বা ও ঠোঁট শিরশির করে ও পরে অবশ হয়ে যায়, হাত-পা অবশ হয়ে আসে। হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, প্রকট শ্বাস কষ্ট হয়। তাছাড়া মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, মুখে শুষ্কতা, মাংসপেশীতে ব্যথা ইত্যাদি নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। পর্যায়ক্রমে আক্রান্ত ব্যাক্তি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয় কিন্তু তার মস্তিষ্ক পুরো সচল থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন পটকা মাছ খেয়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে দ্রুত বমি করানোর চেষ্টা করতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ভর্তি করে চিকিৎসা এবং লাইফ সাপোর্ট দিতে হবে। বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার বেশি যে জীবিত থাকে সে সাধারণত বেঁচে যায়।
প্রতি বছর আমাদের দেশে অনেক মানুষ পটকা মাছের বিষক্রিয়ায় মারা যায়। গতবছর সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলায় বিষাক্ত পটকা মাছ খেয়ে দুই শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচজন মারা গেছেন। দেশে অনেক সময়ই এমন পটকা মাছ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। অজ্ঞতার কারণে গ্রামের অনেকেই পটকা মাছ খেয়ে থাকেন। যেহেতু এখনো পর্যন্ত টেট্রোডোটক্সিনের কোন ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়নি, তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে। পটকা মাছ খাওয়া বাদ দিতে হবে আর আইন করে পটকা মাছ বিক্রিও বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি পটকা মাছের ভয়ঙ্কর দিক তুলে ধরে জোর প্রচারণা চালাতে হবে।
dangers of low dose naltrexone https://naltrexoneonline.confrancisyalgomas.com/
dapoxetine daily for erectile dysfunction https://salemeds24.wixsite.com/dapoxetine
vidalista for enlarged prostate https://vidalista.mlsmalta.com/
clomid dosage recommendations generic https://salemeds24.wixsite.com/clomid
generic ivermectin without a doctor https://ivermectin.mlsmalta.com/
how much sildenafil to take http://droga5.net/
hydroxychloroquine cost per dose https://hydroxychloroquine.mlsmalta.com/
vidalista prostate cancer https://vidalista.buszcentrum.com/
what parasites does ivermectin kill https://ivermectin.webbfenix.com/
cephalexin 500 mg capsule https://keflex.webbfenix.com/
hydroxychloroquine stock price today https://hhydroxychloroquine.com/
cialis forum discussion http://www.lm360.us/
dapoxetine 60mg uk https://dapoxetine.confrancisyalgomas.com/
best vidalista online https://vidalista40mg.mlsmalta.com/
generic dapoxetine vs dapoxetine reviews https://ddapoxetine.com/
how much is a cialis prescription https://wisig.org/
coronavirus prophylactic treatment https://hydroxychloroquinee.com/
ventolin price in uk https://amstyles.com/
side effects of daily cialis https://cialzi.com/