কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই কেরানীগঞ্জে ধলেশ্বরী তীরে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে আশে পাশের কৃষি জমি ও পুকুর বালু ভরাট করছে একটি কু চক্র মহল । এতে করে একদিকে যেমন হুমকির মুখে পরেছে ধলেশ্বরী তীরবর্তী এলাকা, অন্যদিকে ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাটের ফলে জমির শ্রেণি পরিবর্তন হয়ে ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
ফসলি জমি ও পুকুর বালু ভরাটে ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ ড্রেজার মেশিন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া ইউনিয়নের নতুন চর খাড়াকান্দি গ্রামের ধলেশ্বরী তীরবর্তী ছানার ঘাট নামক স্থানে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে আশে পাশের এলাকা ভরাট করা হচ্ছে। অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু আনলোডিং এর সময় নদীর পার রক্ষায় ব্যবহৃত জিও ব্যাগ ডেবে যাচ্ছে। এতে করে হুমকির মুখে পরছে নদীর তীর রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী ভাঙন রোধে ব্যবহৃত জিও ব্যাগ প্রকল্প। এবং নদী তীরবর্তী বাড়িঘর গুলো আবারো নদীতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
মো: সাহাবুদ্দিন নামে স্থানীয় একজন জানান, গত কয়েক বছরে নদী ভাঙনে চর খাড়াকন্দি গ্রামের কয়েকশ বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড, নদীর তীরে ১ লক্ষ জিও ব্যাগ ফেলেছে, যা প্রাথমিক ভাবে ভাঙন রোধে কাজ করছে। গত ২ মাস ধরে ছানার ঘাটে ড্রেজার বসিয়ে আশে পাশের জমি ভরাটের কাজ করছে একটি প্রভাবশালী মহল। তারা যখন ড্রেজার দিয়ে জাহাজের বালু আনলোডিং করে তখন তীরে বসানো জিও ব্যাগগুলো নদীতে একটু একটু করে ডেবে যাচ্ছে। এতে করে আবারো আমাদের গ্রাম ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। আমরা প্রশাসনকে ব্যাপারটা জানিয়েছি। থানায় চিঠি দিয়েছি। কিন্তু এখোনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় ধলেশ্বরী তীরবর্তী একাধিক বাসিন্দা জানান, ড্রেজার খলিল ও আওয়াল শিকদার নামে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় নদীর তীরবর্তী জিও ব্যাগের সাথে ড্রেজার মেশিন স্থাপন করে বালু ভরাটের কাজ চলছে। বালু পরিবহনের জন্য পাইপ সংযোগ দিয়ে চলছে পকুর কিংবা অন্য ফসলি জমি ভরাটের কাজ। অবৈধ ড্রেজিংয়ের কারণে নদীর তীর রক্ষায় ব্যবহৃত জিও ব্যাগ ডেবে গিয়ে বাঁধ ভাঙ্গার আশংকা তৈরি হয়েছে। এতে তারা তাদের বাড়ি ঘড় পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শংকা করছেন। এজন্য তারা প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, আওয়াল শিকদার প্রথমে ড্রেজারের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও অনুমতির ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, এটা আমার না আমি শুধু আমার জায়গা ভরসি এটা দিয়ে। এটা মূলত খলিল, সালাম, আহনাফ,বাবুল ওরা চালায়।
খলিল শিকদার বলেন, আমি ড্রেজার চালাই এটা সবাই জানে, আমি ছাড়াও সালাম ও আহনাফ আছে আমার সাথে। অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, কলাতিয়া পুলিশ ফাড়ির ওসির কাছ থেকে আমি অনুমতি নিয়েছি। আর তাছাড়া যেহুতু দল করি, দলের সিনিয়র নেতাদের জানিয়েই আমি এটা চালাচ্ছি।
তবে কলাতিয়া পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মো: ওমর ফারুক বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। অবৈধ ড্রেজারের বিপক্ষে ব্যবস্থা নিবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা ইউএনওর কাজ। তারা আসলে আমরা হেল্প করি।
অবৈধ ড্রেজার বন্ধে গত মাসে এলাকাবাসীর স্মারক লিপি পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি মামুন আর রশীদ স্মারক লিপি পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। স্মারক লিপি পাওয়ার পরে কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কি না যানতে চাইলে তিনি জানান, না এখোনো কোন ব্যবস্থা নেন নি। কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি ? এমন প্রশ্ন করলে ফোন টি কেটে দেন।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সল বিন করিম জানান, এই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#