হয় পুঁজিবাদ না হয় সমাজতন্ত্র এর বাইরে কোন পথ নেই। এই চরম এবং পরম সত্য একথাটা আমদের দেশে অনেক রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও জ্ঞানী-গুনী বুদ্ধিজীবী,রাজনৈতিক নেতা, কর্মী,সংগঠক, যারা সমাজ বদলের কথা বলে মুখে ফেনা তুলেন,যারা আন্দোলন সংগ্রাম সংগঠিত করতে গিয়ে টিবি টকশোতে বিভোর থাকেন এবং নিজেদেরকে সারা দেশের জনগণের রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতিনিধি হিসেবে মনে করেন, কথায় কথায় লুটপাট লুন্ঠন দুর্নীতি, মৌলবাদ জঙ্গিবাদ সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মতামত ব্যক্ত করেন এবং সহজ সত্য কথা সহজভাবে না বলে ইনিয়েবিনিয়ে কথা বলেন।
তাঁরাও বলতে সাহস পায় না।বলতে পারেন না, তার কারন রয়েছে। রয়েছে তাদের রাজনৈতিক দল,দলের শ্রেণী অবস্থান, ব্যক্তির অবস্থান, ব্যক্তিস্বার্থের অবস্থান,ব্যক্তি চিন্তা পদ্ধতি ,দার্শনিক মননকাঠামো,শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি সম্পর্কিত দৃষ্টিভঙ্গি,ভাবমানষ,আন্দোলন সংগ্রামের পথ,রণনীতি রণকৌশল থেকে শুরু করে এককথায় দার্শনিক সীমাবদ্ধতার কারণে সহজ কথাটা সহজভাবে বলতে পারেন না।রাজনৈতিক অর্থনৈতিক এবং আদর্শিক সীমাবদ্ধতার কারনেই বলতে পারেন না।
জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশ পরিস্থিতি সম্পর্কে একটা বাস্তবসম্মত সাম্যক ধারনা ব্যাখ্যা দাঁড়া করাতে পারেন না।তাই তাদের চিন্তা এবং দলের রণনীতি রণকৌশলও জনগণের জন্য বিভ্রান্তকর।এই জায়গায় অধ্যাপক স্যার সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর বিভিন্ন আলোচনা, বক্তব্য ,লেখা,প্রবন্ধ,কলাম,ইতিহাস এবং দর্শনগত সমালোচনা, মতামত, এবং তাঁর ব্যক্তিগত অবস্থান দেখে তাঁর অবস্থান আমার কাছে অনেকটা স্পষ্টতই মনে হয়েছে। তিনি পরিষ্কার বিষয় পরিষ্কারভাবে মেরুদণ্ড করে কথা বলতে পারেন।
কেননা–গোটা দেশের অর্থনীতির চরিত্র নির্ধারন করলে দেখা যাবে দেশের স্থায়ী সম্পত্তির মালিক, প্রাকৃতিক সম্পত্তির মালিক, শিল্পজাত সম্পত্তির মালিক ,উৎপাদন যন্ত্রে ব্যবহৃত কাঁচামালের মালিক, উৎপাদিকা শক্তি বিশেষ করে যন্ত্রপাতির মালিক , শিল্প কলকারখানার মালিক, ক্ষুদ্র বাদে মাঝারি এবং বৃহৎ খামারের মালিক, বিভি মেগা প্রজেক্টের মালিক, কৃষিপণ্যের মালিক,শিল্পপণ্যের মালিক,ভারী শিল্পের মালিক,ক্ষুদ্রশিল্পের-মাঝারি শিল্পের মালিক, ভোগ্যপণ্যের মালিক, মজুদপণ্যের মালিক, আমদানি রপ্তানিকৃত পন্য সামগ্রীর মালিক, আমদানিকৃত শিল্প সামগ্রীর মালিক, তেল, গ্যাস, কয়লা, বিদ্যুৎ এর উত্তোলন বিতরন কেন্দ্রের মালিক,নীতি নির্ধারণ করার মতো ক্ষমশীলতার মালিক,,বৈদেশিক বিনিয়োগের দেশীয় কন্ডাক্টর, সাব কন্ডাক্টর,দেশের আবাদি জমির মালিক,,আবাসিক জমির মালিক,বিল্ডার্স কোম্পানির মালিক,রিয়েলস্ট্যাট কোম্পানির মালিক,ঔষধ কোম্পানির মালিক,রোঁমেটারিয়াল,রড, সিমেন্ট, টিন,দস্তা,পিতল-ইস্টিল-লোহজাত জিনিসপত্রউৎপাদন-বিক্রয় এবং বিপনন কেন্দ্রের মালিক,মোবাইল কোম্পানি, নেটওয়ার্ক সিম কোম্পানির মালিক, ন্যাশনাল এবং মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মালিক, ,বিশেষ করে বিভিন্ন গ্রুপ এজেন্সি কোম্পানির মালিক,ব্যাংক বীমার মালিক, আমানতকৃত পুঁজির মালিক,,ঋনকৃত পুঁজির মালিক,,বিনিয়োগককৃত পুঁজির মালিক,,অলস পুঁজির মালিক,,কর্পোরেট পুঁজির মালিক,,মাঝারি ব্যাংক এবং লগ্নি পুঁজির মালিক,একচিটিয়া পুঁজির মালিক,কেন্দ্রীভূত পুঁজির মালিক,কালো টাকার মালিক,বিদেশে পাচার করা পুঁজির মালিক, দেশের নদী, নালা, খাল, বিল,খেলার মাঠ,রিসোর্ট,এমনি পর্যটন কেন্দ্র, হাওর বাওরের উপর একাধিপত্য বিরাজ করার মতো দালাল চক্রের নিয়ন্ত্রণদাতাদের অর্থ বিনিয়োগ করার মালিকগোষ্ঠী, পাহাড় সমতলে জমির মালিক,নিয়ন্ত্রণদাতাদের ডোনেশনলকারী, গার্মেন্টস শিল্পের মালিক,শেয়ার বাজারের মালিক এবং নিয়ন্ত্রণ দাতাদের হর্তাকর্তাদের মালিক—–থেকে শুরু করে দেশের মাথায় বসে যারা গোটা দেশের কোটি কোটি মানুষের উৎপাদিত ভোগ্যপণ্য, ক্ষুদ্র মাঝারী বৃহৎ ভারীশিল্প, উৎপাদিত উদ্বৃত্ত মূল্যকে এবং জনগণের রক্ত নিংড়ানো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুঁজিকে লুট করে এবং অমানবিক শোষন করে বৃহত্তর পুঁজিতে রূপান্তর করার জন্য রাষ্ট্রীয় সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা ,বিচার বিভাগ,আইনবিভাগ, রাজনৈতিক দল, বছর বছর জনগণের বিরুদ্ধে এবং শাসন শোষণ তোষণের পক্ষে আইন কানুন প্রণয়ন
পুলিশ-আর্মি, বি.ডি.আর,র্যাবসহ স্থানীয় মন্ত্রী এমপি চেয়ারম্যান কাউন্সিলর, ডিসি,এসপি, সচিব উপসচিব, হিসাব নিকাশকারী,পলিসি মেকার, ম্যানেজমেন্ট ক্রিয়েটর, সিদ্ধান্তকারী,নীতিনির্ধারণী কার্যপরিষদ,বাজেট প্রণয়নসহ যারা ৩০০জন পার্লামেন্টারি সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে রাজনৈতিক হর্তাকর্তাসহ সারাদেশে মোট একচেটিয়া ব্যবসায়ীশুধুমাত্র ৫ভাগ মানুষ। এই পাঁচ ভাগ মানুষ যাঁরা নাকি গোটা দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষের ভাগ্য নির্ধারন করে দিচ্ছে।কি হবে আগামিতে..? পাঁচ ভাগ মানুষ রাজনৈতিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রকে একটা শোষনের অস্ত্র হিসেবে বব্যবহার করে মানুষের মাথায় গুলি ঠেকিয়ে ভ্যাট ট্যাক্স, আবগারি শুল্ক, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়ে, তেল, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, জিনিসপত্র,খাদ্যবস্তু,নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী,পরিবহন ভাড়া,বাড়ি ভাড়া,ঔষধপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়ে জনজীবনকে অতিষ্ঠ করেএমন একটা সমাজ কাঠামো তৈরি করে রেখেছে যেখানে দেশের ৯৫% মানুষ খেতে পারবে কি পারবে না? তাঁরা মানুষ হিসেবে জীবন যাপন করতে পারবে কি পারবে না?তারা তাদের ছেলে সন্তান বাবা মা ভাই বোন নিয়ে কয়টাদিন বাঁচতে পারবে কি পারবে না? এদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েরা শিক্ষা পাবে কি পাবে না?তাঁরা স্বাস্থ্যসহ সকল পরিসেবা মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার পাবে কি পাবে না..?তাঁরা তাদের মাসিক বেতন,দৈনিক মজুরী প্রভিডেন্ট ফান্ড ,ঈদ বোনাস বকেয়া বেতন পাবে কি পাবে না..?তাঁরা তাদের ভবিষ্যৎ নতুন প্রজন্মের সামনে কিছু রেখে যেতে পারবে কি পারবে না,? বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর পিতামাতারা আগামীর নতুন প্রজন্মের জন্য একটুকরা জমি, একটা থাকার ঘর রেখে যেতে পারবে কি পারবে না?তা অনিশ্চিত হতাশার সাগরে ভাসছে প্রতিদিন….!!তাঁদের খবর কে রাখে.?
দেশের জনগনের জীবনের নানাবিধ সমস্যা সংকট ভালোমন্দ সমস্ত দিককে ব্যপ্ত করে ঐ একচিটিয়া জাতীয় বুর্জোয়া পুঁজিপতিরাই তাদের ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর সমস্ত কিছু নির্ধারন করে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত একটি একটি করে। তাদের অসীম ক্ষমতার বলেই জাতীয় বাজার,স্থানীয় বাজার,এমন কি আন্তর্জাতিক বাজার পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করছে ।যারা তাঁর নাম দিয়েছে মুক্ত বাজার অর্থনীতি, মুক্তভাবে লুটপাট করার সার্টিফিকেট রেজিষ্ট্রেশন করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী জাতীয় বুর্জোয়াদের হাত দিয়ে।যাতে দাতাগোষ্ঠীর বিনিয়োজিত অর্থ নিঃসন্দেহে নিরাপদে থাকে। কেননা দেশের অর্থনীতিকে কেন্দ্র করে দেশের বেশীরভাগ সামাজিক সম্পত্তিকে ব্যাক্তি সম্পত্তিতে রুপান্তার করার যে কৌশল তার নাম রাজনীতি এবং রাষ্ট্র যন্ত্র। এই রাজনৈতিক দল এবং রাষ্ট্রযন্ত্র একই এবং অভিন্ন স্বার্থ রক্ষা করে। এই দুটি যন্ত্রের চরিত্রেই রয়েছে ৯৫% বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উৎপাদিত সামাজিক সম্পদ এবং সম্পত্তি লুটপাট করে,লুণ্ঠন করে, শোষন করে, নির্যাতন করে ঘায়েল করে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে করায়ত্ত করা।
এই যে একই ভূখণ্ডে একই জাতীয় পতাকার ছায়াতলে দুটি স্বার্থের অবস্থান তা স্পষ্টভাবে দেখার একটা চোখ লাগে।দুটি অবস্থানের স্বার্থ দুটি যে বিরুদ্ধ পক্ষ সম্পর্কের ভিত্তিতে সমস্ত রকম সমস্যা সংকট সমাজ রাষ্ট্রে মানুষে মানুষে সৃষ্টি হচ্ছে।
সমস্ত রকম অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হচ্ছে,অভাব অনটন, দারিদ্র্য, রোগ বালাই,অশিক্ষা কুশিক্ষা,জরাজীর্ণ জরাগ্রস্ত ব্যাধি ,নোংরামি, অসভ্যতা, অনাচার, অভিচার, ব্যবিচার,নারীর উপর আক্রমন,ধর্ষন,গনতন্ত্রের উপর আক্রমন,মানুষের বাক স্বাধীনতার উপর আক্রমন,প্রাণ প্রকৃতির উপর আক্রমণ, অনিরাপদ পরিবহন, রাস্তা সেতু, যানযট,বায়ুদূষণ,হাট দখল, ঘাট দখল,বন দখল,পার্ক দখল, নদী দখল,পাহাড় দখল বনভূমি উজাড়,,মতামত প্রকাশে বাঁধা,মুক্ত চিন্তার স্বাধীনতা হরন,দমন পীড়ন,সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ,উগ্রতাবাদ,নৈরাশ্যবাদ,নৈরাজ্যবাদ,আধ্যাত্নবাদ,শূন্যতবাদ,হতাশা,আত্মহত্যা, নারী পুরুষের অসমতা,পারিবারিক বন্ধন ছিন্নভিন্ন, কত জাতের সমস্যা সমাজে রয়েছে তার কেন্দ্র হচ্ছে পুঁজিবাদ।পুঁজিবাদের গর্ভেই সমস্ত সমস্যা পরিগ্রহ করে এবং নতুন নতুন সমস্যা সংকট আবির্ভূত হয়। কেন হয় এর উত্তর ?
যিনি দিবালোকের আলোর মতো স্পষ্ট দেখেন তিনি এবং সমাজমানসের সাহিত্য সংস্কৃতি সমালোচনায় স্পষ্ট ইঙ্গিত দিতে পারেন তিনি হচ্ছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।অন্তর্দৃষ্টি ছাড়া এইভাবে দেখা সম্ভব নয়।আপনারা বিবেচনা করে দেখবেন, সমাজের মধ্যে বিরাজমান রয়েছে দুটি শ্রেনী একটি শ্রেনী মালিক আর একটি শ্রেনী মজুর। ফলে সমাজের চরিত্রগত দিক হচ্ছে মালিক শ্রমিক চরিত্র। মালিক শ্রেনীর হাসি, কান্না, সুখ, দুঃখ, আনন্দ-বেদনা,রুচি-সংস্কৃতি, মূল্যবোধ,আবেগ-অনুভূতি, জীবন যাপনের ধরন,উল্লাস উদ্দীপনা,আরাম আয়েশ,থেকে শুরু করে ধর্ম, কর্ম, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ছেলে সন্তান লালন পালন, পর্যন্ত সমস্ত কিছুই ঐ গরীব দুঃখী মধ্যবিত্ত নিন্মবিত্ত, অনাহারী, অর্ধহারা,সর্বহারা অসহায় মানুষ থেকে একদম আলাদা, একদম ভিন্ন। এই পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে একচিটিয়া বুর্জোয়ারা তাদের প্রয়োজনমতো নিজেদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন,পরিবহন,বিমান,আবাসন,থেকে শুরু করে খাদ্যবস্তুর মান পর্যন্ত সব কিছুই তৈরি করেছে তাদের উপযোগী করে।
আর ঐ গরীব দুঃখী মানুষের জন্য তৈরি করেছে তাদের ব্যবহারেরর পর উচ্ছৃষ্ট পরিত্যক্ত ব্যবহার অনুপযোগী, অখাদ্য, কুখাদ্য,নিম্ন মানের যাবতীয় আয়োজন, বিকৃতি,অরুচি, কুরুচিপূর্ণ, আদব কায়দা থেকে শুরু করে এমতর উপাদান যা মানুষের জীবনকে পর্যন্ত বিকালাঙ্গ করে দিতে পারে এবং কেড়ে নিতে পারে সমস্তকিছুই এমন সব উপাদান।
ফলে সমাজটা যে দুটি ভাগে মোটা দাগে বিভক্ত তা স্পষ্ট ভাষায় যিনি সমসময় বলেন,এবং দেশের অর্থনীতি রাজনীতি, সমাজনীতি, ধর্ম,কর্ম,মূল্যবোধ, শিক্ষা,স্বাস্থ্য, রুচি সংস্কৃতি, চিন্তা চেতনা,আদর্শ,রাজনৈতিক দল,মানুষের ভাবমানষ , জীবনের সমস্ত দিক যে মালিক মজুর সম্পর্কের ভিত্তিতে চলছে এবং তার রুপ পরিগ্রহ করে গোটা দেশর অর্থনীতি রাজনীতি চলছে এবং ধুকে ধুকে সব নিঃশেষ করে নিজেদের আখের গোছানোর জন্য ছোবড়া করে দিচ্ছে এবং এ দেশের সমস্ত সংগ্রামের পাত পরিক্রমা অর্জন আজ ধুলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে ছাত্র যুবক তরুণদের শক্তি পেশি শক্তির কাজে ব্যবহার করে সমস্ত মানুষের বিবেককে ধ্বংস করে অতীষ্ট করে তুলছে তার একটিই কারন ভিতরে রয়েছে যার নাম মুমূর্ষু, দেশীয়, জাতীয় পুঁজিবাদ, দেশীয় বুর্জোয়া,
এই চরিত্রটি এতো নিখুঁতভাবে যিনি ধরতে পারেন, বুঝতে পারেন এবং ডায়ালেক্টিক্যাল আসপেক্টে সমস্ত কিছুকে উচ্চতর সাহিত্য সংবেদনশীল অনুভূতি দিয়ে ব্যাখ্যা বিশ্লেষন করতে পারেন।এবং এই সমাজটা যে পচাগলা, নষ্ট, এর কার্যকারীতা হারিয়েছে,এবং তা ইতিমধ্যে নষ্টদের হাতে চলে গিয়েছে। দেশ স্বাধীনতার পরবর্তী গত ৪৭ বছরের মধ্য মেরুদণ্ড সোজা করে বয়সে বৃদ্ধ হয়েও তরুণদের মতো সহজসরল ভাবে বলতে পারেন, শুধু বলতেই পারেন না নির্দ্বিধায় বলতে পারেন এবং তিনি নিজেকে তার শ্রেনী অবস্থানে দেশের গরীব, দুঃখী, শ্রমিক,কৃষক দিনমজুর,ক্ষেতমজুর মেহনতি সর্বহারা শ্রেনীর পক্ষের মানুষ হিসেবে মনে করেন গর্ব করেন এবং সেইভাবেই নিজের দর্শনগত জায়গায়, চিন্তার কাঠামোগত জায়গায় নিজেকে সজাগ রেখেছেন সবসময় দেশের ভালোমন্দ প্রশ্নে দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীর উপর যখই আক্রমন এসেছে তখনই তিনি কলম ধরেছেন।মতামত তুলে ধরেছেন, একক কন্ঠে শ্রমিক শ্রেণীরর মুক্তির আন্দোলন সংগ্রামে সহায়তা করে চলেছেন।তিনি প্রায় সময়ই বলে থাকেন—সাহিত্যে,লিখনিতে,বক্তৃতায়,সভা সমাবেশে, আলোচনায়, সেমিনারে প্রকম্পিত ধ্বণি শুনতে পাওয়া যায়,”হয় সমাজতন্ত্র না হয় পুঁজিবাদ,পুঁজিবাদের বিকল্প পুঁজিবাদ নয়,পুঁজিবাদের বিকল্প সমাজতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ছাড়া ৯৫ ভাগ মানুষ,দেশের বেশীরভাগ মানুষের মুক্তি নাই।
তিনি জানেন সমাজতন্ত্রই পারে কিভাবে মানুষকে শোষনের যাঁতাকল থেকে মুক্তি দিতে।তিনি জানেন সমাজতন্ত্র কিভাবে মানুষের ব্যক্তিগত,সামাজিক,পারিবারিক, রাষ্ট্রীয় জীবনে বিকশিত করে তুলতে। সমাজতন্ত্র মানুষের শুধু অর্থনৈতিক মুক্তিই দেয় না সাথে সাথে চিন্তার দাসত্ব থেকে মুক্তি দেয়, শিল্প সাহিত্য,শিক্ষায়, রুচি, সংস্কৃতিতে, বিজ্ঞানে, কিভাবে বিকশিত করে তুলতে হয় তা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নির্দশন ঘাঁটলেই আঁচ করা যায়।।একটা দেশ সমাজতন্ত্র ছাড়া এক পাও এগোতে পারে না যা করোনাকালীন সময়ে কিউবা ভিয়েতনাম এবং কেরালার মতো ছোট্ট অঙ্গরাজ্যের ভূমিকা দেখলেই বুঝা যায়।তিনি সমাজতন্ত্রের দর্শনে বিশ্বাসী একজন প্রাণপুরুষ।
তিনি আমাদের দেশের একজন সাধারন মানুষ তবে তিনি দেশের এবং দশের সজাগ মস্তিষ্ক। সত্যিকারের বিবেকবান মানুষ।আমাদের পরম সৌভাগ্য তাঁর মতো সত্যিকারের বিবেকবান মানুষ আজও জেগে আছে অসংখ্য নিরন্ন মানুষের মুক্তির দিশায়।তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর ৮৫তম জন্মদিনে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই।
লেখক: মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন
লেখক ও কলামিস্ট