শীতে ভালো ব্যবসা করার অপেক্ষায় কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর ব্যবসায়ীরা

ডলারের দাম বৃদ্ধি, নিত্য প্রয়জনীয় পন্যের দাম বৃদ্ধি, দেশের অস্থিতিশীল অবস্থা, করোনা মহামারীসহ নানা প্রতিবন্ধকতা বিরাজ করছে ব্যবসা বানিজ্য। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্যেও আগামী শীত মৌসুমে ভালো ব্যবসা করার আশায় শীতের অপেক্ষা করছে দেশের তৈরী পোশাকের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর ব্যবসায়ীরা।

কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর কয়েকটি কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, কারখানাগুলোতে চলছে শীতের পোষাক তৈরীর শেষ সময়ের চুড়ান্ত প্রস্তুতি। সব বয়সের মানুষের জন্য বাহারী শীতের পোষাক তৈরীতে কাজ করছে এখানকার কারিগরেরা। ডলারের দাম বৃদ্ধির কারনে কাপড় ও মেটরিয়ালসের দাম বাড়ার কারনে শীতের পোষাক উৎপাদন ও আমদানি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন এখনকার ব্যবসায়ীরা। দুশ্চিন্ত হওয়ার কারনে অনেক ব্যবসায়ী গত বছরের চেয়ে উৎপাদন ও পোষাক আমদানি কিছুটা কম করেছেন।

উৎপাদন কম ও পোষাকের দাম গত বছরের চেয়ে কিছুটা বাড়লেও পাইকাররা তাদের চাহিদা অনুযায়ী গার্মেন্টস পল্লী থেকে শীতের পোষাক কিনবেন বলে জানান এখানকার ব্যবসায়ীরা। এর কারন হিসেবে তারা ব্যাখ্যা করেন, করোনায় অর্থনৈতিক মন্দার কারনে গত দুই বছর অনেকেই শীতের পোষাক কিনে নি, তাই এই বছর কিনবে। এছাড়া সবাই জানে বর্তমানে দেশের প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সব কিছুর সাথে সামঞ্জস্য রাখতে গিয়ে পোষাকের দাম ও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, সেটা পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা বুঝবে। এখন বেচা কেনা কম হলেও আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে পুরোদমে শীতের পোষাক বেচা কেনা শুরু হবে এখানে এমনটাই জানান এখানকার ব্যবসায়ীরা।


কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর আগানগর ও শুভাঢ্যায় প্রায় ৬ হাজার ছ্টো-বড় শো রুম রয়েছে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে পাইকারী পোষাক কিনতে ক্রেতারা এখানে আসেন। এখানকার ব্যবসায়ীরা দাবী করেন দেশের তৈরী পোষাকের ৬০ শতাংশ জোগান দেন তারা। মূলত দুই ঈদ ও শীতের মৌসুমকে কেন্দ্র করেই এখানকার সারা বছরের ব্যবসা বানিজ্য হয়ে থাকে।

কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর সোরুম গুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ইতিমধ্যেই প্রতিটি শো রুমে উঠেছে শীতের বাহারি পোষাক। নানান রংয়ের, নানান ঢংয়ের, নানান সাইজের শীতের পোষাক ঝুলছে প্রতিটি সোরুমে। গুনগত মান ভালো হওয়ার কারনে এখানকার পোষাকের কদর রয়েছে দেশ জুড়েই। দেশীয় তৈরী পোষাকের পাশাপাশি বিদেশ থেকেও পোষাক সংগ্রহ করেছে এখানকার ব্যবসায়ীরা।

ভারত ,থাইল্যান্ড, চীণ থেকে পোষাক আমদানিকারক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হাসান জানান, এই বছর পোষাক আমদানি খরচ গেল বছরের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। যার কারনে আমদানি কম করেছি। এই বছর ব্যবসা করাটা অনেক চেলেঞ্জিং আমাদের জন্য। শীতের বেচাকেনা এখন শুরু হয় নি। তবে আগামী কিছু দিনের মধ্যে শুরু হবে এবং এই বছর ভালো ব্যবসা করবো বলে আশা করছি। না হলে আমাদের টিকে থাকাটাই মুশকিল হয়ে যাবে।
কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর সাধারন সম্পাদক ও অন্যতম একজন ব্যবসায়ী মুসলীম ঢালী বলেন, শীতের সিজন কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর তিনটা সিজনের অন্যতম একটা সিজন। শীত কে কেন্দ্র করে এখানকার ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। দোকানগুলোতে এখন শীতের মাল বিক্রির উদ্দেশ্যে উঠানো হয়েছে। যদিও এখনো কাষ্টমাররা আসা শুরু করে নি। তবে নভেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে কাষ্টমারের উপচে পরা ভীড় পরবে আশা করি। আমরা আশা করি এইবারের শীতের ব্যবসা ভালো হবে। নানা কারনে অনেকে শীতের পোষাক গেল দুইবার কিনতে পারে নাই। সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে আমাদের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এইবার সীমিত লাভে পন্য বিক্রি করবো। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার আমাদের শীতের ব্যবসা আল্লাহর রহমতে ভালো হবে বলে আমরা আশা করছি।

মুসলিম ঢালী আরো বলেন, রাত ৮ টার পরে শপিংমল দোকানপাট বন্ধের একটা সিদ্ধান্ত রয়েছে। পাইকারী বেচাকেনা রাত ৮ টার আগে বন্ধ হলেও সমস্যা নাই। তবে খুচরা দোকানদারদের আরেকটু সময় বাড়িয়ে দিলে তাদের বেচাকেনা বাড়তো, সেই সাথে আমাদের বেচাকেনাও বাড়তো। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র শনিবারে যদি শপিং মল , খুচরা দোকানগুলো একটু বেশি সময় খোলা রাখা যেত তাহলে একটু বেচা কেনা বাড়তো। এই বিষয়টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি একটু ভেবে দেখতো তাহলে আমাদের জন্য একটু সুবিধা হতো। #

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে ইসলামের খেদমতে সর্বপ্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন: দোলন

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে ইসলামের খেদমতে সর্বপ্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন: দোলন মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু …

error: Content is protected !!