শিক্ষক হত্যার আসামিই স্কুল পরিচালনা কমিটিতে,ঘুরেন প্রকাশ্য দিবালোকে

নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষক হত্যার আসামিই রয়েছে স্কুল পরিচালনা কমিটিতে।আবার প্রকাশ্য দিবালোকেই ঘুরে বেড়ান তিনি।যাকে দেখলেই কেঁপে ওঠে শিক্ষকদের অন্তরাত্না। অভিযোগ রয়েছে শিক্ষক লাঞ্চনা সহ স্কুলের জায়গা নিজের নামে রেকর্ড করার মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

শিক্ষক হত্যা মামলার আসামি এবং বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ অভিযুক্ত সেই আলোচিত ব্যক্তি মো. খয়ের মুন্সী। আশুলিয়ার বাইদগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। তিনি আবার সক্রিয় বিএনপির রাজনীতিতে। শিমুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক। ইউনিয়ন খয়ের মুন্সী বিএনপির সাবেক সভাপতি মৃত হাফেজ উদ্দিন মুন্সির ছেলে।

বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত মো. খয়ের মুন্সী আবারও সভাপতি হতে চান বাইদগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ইতিমধ্যেই প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধর্না দিতে শুরু করেছেন তিনি। বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন দামী উপঢৌকন।

স্থানীয়রা জানান, ২০২০ সালে তাকে যখন স্কুলটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি করা হয় তখন অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিএনপির নেতা স্কুল কমিটির সভাপতি! এটা ছিলো ঘোর লাগানোর মতো ঘটনা। পরে ধিরে ধিরে প্রকাশ হতে থাকে স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির পদে আসার আগে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের কিভাবে ম্যানেজ করে এসেছেন তিনি।

সূত্রমতে অর্থের জোরে আওয়ামী লীগ নেতাদের বশীভূত করার অভিযোগ বেশ পুরণো। অনেকে বলেন, তাকে ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাদের চলেই না। তাই আবারও একই পদে এই শিক্ষক হত্যা মামলার আসামিকে বসাতে তোড়জোড় করছেন খোদ নেতাদের অনেকেই। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সব জেনেশুনেই বিএনপির এই নেতাকে পুনর্বাসন করছেন। বিনিময়ে তার কাছ থেকে নিচ্ছেন নানা ধরনের সুবিধা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলটির একাধিক শিক্ষক জানান, দায়িত্ব নিয়েই নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন খয়ের মুন্সী। অনেকেই তাকে আদর করে ডাকে খয়ের খাঁ। ভুয়া বিল ভাউচার করে অর্থ লোপাটের পাশাপাশি স্কুলের জমি নিজের নামে রেকর্ড করে নেন তিনি। কথায় কথায় স্কুল শিক্ষক ও কর্মচারীদের করেন লাঞ্চণা। তার হুমকিতে তটস্থ থাকেন অনেকেই।

স্থানীয়রা জানান, প্রকাশ্য দিবালোকে বাজারে দরবাড়িয়া স্কুলের শিক্ষক চাঁন মিয়া মাস্টারকে চেপে ধরে ও বুকে পা দিয়া হত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সুকৌশলে স্কুলের জমি নিজের নামে বিএস রেকর্ড করিয়ে নেবার বিষয়টি জানাজানি হলে প্রতিবাদ করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সোনিয়া পারভীন। তাকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকি দিয়ে বলেন, চাঁন মিয়া মাস্টার হত্যার কাহিনী মনে নাই। বেশি বাড়াবাড়ি করলে সেই পরিণতি ভোগ করতে হবে।

এছাড়াও নিজের অনৈতিক কাজে সায় না দিলে নানা কাল্পনিক ও ভুয়া অভিযোগ এনে উল্টো শিক্ষকদের মানসিকভাবে চাপে রাখেন তিনি। এমন মানসিকতার একজন ব্যক্তি ফের স্কুল কমিটিতে ফিরলে শিক্ষকদের স্কুল ছেড়ে যেতে হবে এখন এমন শংকা শিক্ষকদের।

এসব অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোনে মো. খয়ের মুন্সী বলেন, জমিটা হাইস্কুলের নামে আমার পরিবারের মুরব্বিরা দিয়ে গেছিলেন। সেখানে প্রাইমারি স্কুলের কোন জমি নেই। আমার চার দাদার দেয়া স্কুলের জমিটা নিজেরদের নামেই রেকর্ড করেছি।

শিক্ষক হত্যা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বিষয়টি অস্বীকার করে এড়িয়ে যান তিনি।

 

 

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

সংরক্ষিত বনের চোরাই গাছ চিঁড়ার অভিযোগ; তিনটি অবৈধ করাতকল জব্দ!

আজিজ উল্লাহ, উপকূলীয় প্রতিনিধি: উখিয়া জালিয়াপালং ইউপির ছেপটখালী এলাকায় বনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে জনবসতিতে স্থাপিত …

error: Content is protected !!