জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে সরকার লঞ্চের ভাড়া ৩০% হারে বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা গতকাল মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে নৌ মন্ত্রনালয়ের। লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির কারনে লঞ্চ মালিকেরা পড়েছে যাত্রী সংকটে। অপরদিকে সাধারন যাত্রীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। বিআইডবিøউটি কর্মকর্তারা বলছেন বিষয়টি মরার উপর খাড়ার ঘা এর মতো।
সরেজমিন মঙ্গলবার (১৬ আগষ্ট) সন্ধ্যায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মানালে গিয়ে দেখা যায়। ঢাকা থেকে বরিশালসহ অন্যান্য রুটে যাওয়ার উদ্দ্যেশে টার্মিনালগুলোতে দাড়িয়ে আছে একাধিক লঞ্চ। তবে যাত্রীর চাপ তেমন নেই বললেই চলে। বেশ কয়েকটি লঞ্চের কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়। অন্যদিনগুলোর চেয়ে আজকে যাত্রীর চাপ কিছুটা কম। যাত্রীর চাপ কম হ্ওয়ার পিছনে ভাড়া বৃদ্ধিকেই কারন হিসেবে দেখছেন তারা। বেশ কয়েকটি লঞ্চে উঠে দেখা যায় লঞ্চগুলোর ডেক প্রায়ই ফাকা। বেশির ভাগ কেবিন ও খালি।
কুয়াকাটা – ২ লঞ্চের সুপার ভাইজার মো: দুলালের সাথে কথা হলে ভাড়া বৃদ্ধিও প্রসঙ্গে তিনি জানান, ভাড়া যৌক্তিক হারেই বেড়েছে। সব কিছুর দাম বেড়েছে, তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে , পরিবহন সেক্টরেও বাস সহ অন্যান্য সব কিছুর ভাড়া বেড়েছে তাই লঞ্চের ভাড়াও বেড়েছে। এই ভাড়া না বাড়ালে এমনিতেই লোকসানের মুখে চলছিলো লঞ্চগুলো , আরো লোকসান বেশি গুনতে হতো। তিনি আরো জানান, আগে ডেকের ভাড়া ছিলো ৩৫২ টাকা আজকে ভাড়া ৪৫৭ টাকা করা হলেও তারা আজকে ৪০০ টাকা করে ভাড়া রাখছে। তবে যাত্রীর চাপ অনেক কম।
পারাবত লঞ্চ কোম্পানীর ম্যানেজার মো: সুমন খানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রী চাপ আজকে অনেক কম। এর জন্য ভাড়া বৃদ্ধিকেই কারন হিসাবে দেখছেন তিনি। পারাবত ১৮ লঞ্চে কেবিন আছে ২৮৮ টা এর মধ্যে আজকে বুক হয়েছে মাত্র ৩০ টা। পদ্মা সেতু হ্ওয়ার পরে এমনিতেই যাত্রী সংকট তৈরী হয়েছিলো। যাত্রী সংকট গত কয়েক দিনে কাটতে শুরু করেছিলো। কিন্তু ভাড়া বৃদ্ধিতে আজকে আবার যাত্রী চাপ কমে গেছে। লঞ্চ সেক্টওে এভাবে যাত্রী কমতে থাকলে লঞ্চ সংশ্লিষ্ট সকলকে সামনে আরো দুর্দশায় পড়তে হবে বলে জানান তিনি। ইতিমধ্যে তাদের লাইনের ৫টি লঞ্চের মধ্যে যাত্রী খরার কারনে ২টি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে ভাড়া বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের দেখা দিয়েছে। এই ভাড়া বৃদ্ধিকে অয্যেক্তিক বলছে যাত্রীরা
বরিশালগামী যাত্রী ইদ্রিস গাজী জানান, লঞ্চের ভাড়া এতো বাড়লে আমরা আর লঞ্চে যাবো না। লঞ্চে যাই গাড়ির চেয়ে ভাড়া একটু কম তাই। এখন যদি ভাড়া লঞ্চেও বাড়ায় তা হলে গাড়ি আর দোষ করসে কি। আগে জানতে পারলে লঞ্চে আসতাম না। এখানে আসার পরেই জানতে পারলাম ভাড়া বাড়সে। সামনে থেকে গাড়িতেই যাবো।
বরিশালের বাকের গঞ্চে পরিবার সহ যাচ্ছেন শিউলী আক্তার। তিনি জানান, তেলের দাম তো বাড়সে আরো আগেই। তারপরেও তো আমরা গত সপ্তাহে ৩০০ টাকা করে বরিশাল থেকে আসছি। এখন যাওয়ার সময় দেখতেসি ৪৫০ টাকা ভাড়া। আর আসুম না লঞ্চে, গাড়িই ভালো, সময় কম লাগে।
তবে ভিন্ন কথাও বলছে অনেক যাত্রী। অনেকে বিষয়টা দেশের সামগ্রীক মূল্য বৃদ্ধির সাথে তুলনা করে মেন্ওে নিয়েছেনে।
সিরাজ নামে এক যাত্রী জানান, তেলের দাম বৃদ্দির কারনে সরকার ভাড়া বাড়িয়েছে। কি আর করার গ্রামে তো যেতে হবেই তাই যাচ্ছি। সব কিছুর দাম ই তো বাড়সে। সব কিছুই মেনে নিতে হচ্ছে। ভাড়াও মেনে নিতে হবে। আসা যাওয়া করতে হবে।
এ বিষয়ে বিআইডবিøউটিএ ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ন পরিচালক আলমগীর হোসেন জানান, লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টা মরের ্ওপর খারার ঘার মতো অবস্থা। পদ্মা সেতু চালু হবার পরে এমনিতেই যাত্রী কমে গেছে। ভাড়াও কমে গেছে। লঞ্চ এমনিই আগের ভাড়া থেকে কম নিচ্ছে, এখন নতুন ভাড়া কার্যকর করার পরে পেসেন্জার আরো কমে গেছে।#