আমাদের ছোট বেলা ছিল এক গ্রাম
বর্ষার জলে মোরা নাও দৌঁড়াতাম।
সবুজ শ্যামল ছায়ে ছিল ভরপুর
কখন যে কেটে যেত সকাল দুপুর।
ছোট-ছোট ঘর ছিল স্বর্গ-কুটির-
খেলে যেত মনে কত রঙের আবীর।
দল বেঁধে ছোটাছুটি কত যে খেলা
কি করে ভুলি মোরা বৈশাখি মেলা।
আমাদের মাঝে ছিল কত সদ্ভাব
এক সাথে এক পাতে ছিল না অভাব।
আমাদের গ্রাম ছিল ছবির মতন
হারিয়েছি কবে তারে করিনি যতন।
নাই বন, নাই গাছ, নাই সেই মাঠ
নাই ছায়াবীথি আহা নাই সে গোপাঠ।
নাই পাট সেদিনের সোনালী সে আঁশ
নাই ঝোঁপ নাই ঝাড় নাই কো সে বাঁশ।
খুঁজে ফিরি পাই না যে সেদিনের খাল
কোথা গেল জেলে আর কোথায় রাখাল।
পূর্ণিমা রাতে আর বসে না আসর
কেমনে ভাঙিল আহা সোনালী বাসর।
ঢাউশ উড়েনা আর ঐ আকাশে
উড়েনা চাঁদের সুতা আর বাতাসে।
শ্রাবণে বাদল ধারা নামে না এখন
হারানো সে জলরাশি করি যে স্মরণ।
পাল তোলা নৌকায় ভাটিয়ালি গান
আজও যেন শুনি হায় পাতিলে কান।
শাপলা শালুক তুলে বর্ষার জলে
ডুব ডুব খেলতাম কত না ছলে।
বড়দের সাথে জলে কাটতাম পাট
সকাল দুপুর বয়ে হয়ে যেত রাত।
কখনও বা মাছ ধরে ফিরতাম বাড়ি
খালি গায়ে খালি পায়ে দিয়ে পথ পাড়ি।
গোলাভরা ধান আর জল ভরা মাছ
এই নিয়ে কেটে যেত গাঁয়ে বারো মাস।
এ বাড়ি ও বাড়ি ছিল কত মাখামাখি
মুখভরা হাসি আর মায়াভরা আঁখি ।
আমার সেই গ্রাম আর পাই না খুঁজে
স্মৃতির বালিশে আমি কাঁদি চোখ বুজে।
কবি: অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব