মিডিয়ার প্রতি ঢাবির একি নির্মমতা আর প্রিন্ট মিডিয়ার কোনো পাত্তাই নেই

উম্মুল ওয়ারা সুইটির ফেসবু্ক পোস্ট থেকে সংগৃহীতঃ  দীর্ঘ ২৮ বছর পর দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে। প্রায় তিন দশক ধরে যারা সাংবাদিকতা করছেন তারা কেউই রাজনীতির সূতিকাগার বলে খ্যাত ডাকসুর নির্বাচন দেখার সুযোগ পাননি।

তবে ডাকসু নির্বাচনটা যেনো হয় এ নিয়ে এখনকার অনেক গণমাধ্যমকর্মীই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সময়ে।

গত তিনযুগের গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ডাকসু নির্বাচন দেখার আগ্রহটা একটু বেশি।
রাখঢাক না করেই বলি, আমার নিজেরও প্রবল আগ্রহ এই নির্বাচনকে নিয়ে। নব্বইয়ের দশক এবং পরের দশকে ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে নানাভাবেই সরব ছিলাম। পর্যায়্ক্রমে আন্দোলন সংগ্রাম এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ঐকান্তিক ইচ্ছায় ডাকসু জাগ্রত হয়েছে। সবাই খুশি। জাতীয় নির্বাচনের মতোই এই নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাপ, আলোচনা।
এখানে রাজনীতির চেয়ে বড় চাওয়া পাওয়া হলো আগামীর নেতৃত্ব কেমন চায় তরুণ প্রজন্ম তারই একটা প্রতিফলন হয়তো ঘটবে ভোটে। সংসদ নির্বাচন, উপজেলা বা সিটি করপোরেশনের মতো কোন নির্বাচন নয়। এখানে টাকা ঝনঝনানি নেই, কালোবাজারির উত্তাপ নেই কিংবা কাউকে জোর করে বসিয়ে দেওয়া , অভ্যন্তরীণ কোন্দল এসব নেই। তাই আমরা মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এই নির্বাচন পরিচালনা করছেন। এখানে সংশয় , শংকার তো কোনো জায়গায়ই নেই। সবাই জানে অন্তত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এতোদিন পর দেশের এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটি ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন। এখানে প্রার্থী ভোটার সবাই তাদের ছাত্র।
মূল কথা আসি, এতো এতো ইতিবাচক দিকের মধ্যেই যখন দেখি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোথায় যেন একটা বড় দেয়াল তৈরি করতে চান। সবকিছুই তো ঠিক আছে। শুধু গণমাধ্যমের মানুষগুলো প্রতি কেনো তাদের এই উদাসীনতা?
আপনাদেরই কাছ থেকে শিক্ষা পাওয়া গনমাধ্যমকর্মীরা কি খুবই বেয়াড়া কিংবা খারাপ যে, তাদেরকেই নিয়ন্ত্রণ করতে চান?

এই নির্বাচন কাভারের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেথে হতাশ হয়েছি এবং লজ্জিত হয়েছি। বলা হয়েছে,নির্বাচনের দিন গণমাধ্যমকর্মীরা চিফ রিটার্নিং অফিসারের ইস্যু করা পরিচয়পত্র দেখিয়ে এবং সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে ভোট কেন্দ্রের গেস্টরুম/নির্ধারিত স্থান পর্যন্ত যেতে পারবেন। তবে ভোটকেন্দ্র থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে মোবাইল ফোনসহ সব ধরনের ইলেট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিচয়পত্র ইস্যু করেই যেতে চাই। কিন্তু গেস্টরুম পর্যন্ত কেন? আমরা কি গিয়ে ভোট দিয়ে দেবো?
আবার সাংবাদিক পাস দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা যে কার্পণ্য দেখিয়েছে এটা তো সবচেয়ে অবাক করার মতো।
বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য এবং প্রিন্ট ও পাস পাওয়া সাপেক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার নির্ধারিত সংখ্যক প্রতিনিধি ভোটকেন্দ্রের নির্ধারিত জায়গায় উপস্থিত থাকতে পারবেন। আবেদন সাপেক্ষে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য সর্বোচ্চ ৪টি ক্যামেরা ইউনিটকে এবং প্রতিটি প্রিন্ট মিডিয়ার সর্বাধিক ২জন সাংবাদিককে পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। ১৮পি ভোট কেন্দ্রের জন্য মাত্র ২জন প্রিন্টের সাংবাদিক কি করবে? এখন তো প্রতিটি প্রিন্ট মিডিয়ার সঙ্গে অনলাইন রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে, আপনারা কি প্রিন্ট মিডিয়াকে ভয় পাচ্ছেন, নাকি পাত্ত দিচ্ছেন না।

 

লেখকঃ উম্মুল ওয়ারা সুইটি।

সিনিয়র সাংবাদিক- দৈনিক দেশ রুপান্তর।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

বাহারছড়ায় জমির বিরোধে সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ সন্দেহ করে মারধর; উভয় পক্ষের আহত-৩

ডেস্ক রিপোর্ট: কক্সবাজারের টেকনাফে বাহারছড়া ইউপির বাইন্না পাড়া এলাকায় বিরোধীয় জমির মালিক পক্ষ ও ৩জন …

error: Content is protected !!