বাস চালক মো: আক্কাস। থাকেন জিনজিরায়। লক ডাউনে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় অসহায় হয়ে পড়েছেন তিনি। গ্রামে পরিবারের খরচ পাঠানো তো দূরের কথা সেহেরী ও ইফতার করাটাই তার জন্য কষ্ট সাধ্য। তাই রোজ রাতে সেহেরির সময় হতেই চলে আসেন জিনজিরা ইউনিয়নের মান্দাইল এলাকায় নিউ সুরুচি স্যুপ কর্নারে। প্রথম রোজা থেকে শুরু করে মাহাবুব আহম্মেদ ওরফে মামুনের আয়োজনে এই রেষ্টুরেন্টে চলছে বিনামূল্য সেহেরির আয়োজন। আক্কাসের মতো আরো অনেক নিন্ম আয়ের মানুষ ই রোজ রাতে সেহেরীর খেতে চলে আসেন মান্দাইলের এই রেষ্টুরেন্টে।
জানা যায়, মাহাবুব আহম্মেদ মামুন তিতাস গ্যাস কোম্পনির একজন ঠিকাদার। তার বাড়ি জিনজিরাতেই। লক ডাউনে অসহায়, গরিব, কর্মহীন ও নিন্ম আয়ের মুসল্লিদের জন্য তার এই সেহেরী আয়োজন। যে কেউ চাইলেই বিনামূল্যে সেহেরি থেতে পারে নিউ সুরুচি স্যুপ কর্নারে। প্রতিদিনেই খাবারের তালিকায় থাকে ভিন্নতা , ভাতের সাথে কোন দিন মুরগীর মাংশ, কোন দিন গরুর মাংশ অথবা কোন দিন বড়ো কোন মাছ। খাবার নিয়ে কোন ধরনের কমপ্রমাইজ করেন না মামুন। সেহেরেীর সময় এখন পর্যন্ত একদিনও খাবার সংকটে পড়ে নি রেষ্টুরেন্ট টি।
সরেজমিন কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ইউনিয়নের মান্দাইল এলাকায় নিউ সুরুচি স্যুপ কর্নারে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই বসে সেহেরি খাচ্ছেন। সেহেরী খাওয়ানোর দায়িত্বে নিয়জিত রয়েছে মো: মাসুম আলী ও মো: ফয়সাল আহমেদ। তারা খুশি মনে সেহেরী খেতে আসা লোকজনদের সেহেরী খাওয়াচ্ছেন। এখানে আগত কম বেশি সবাই তৃপ্তিসহকারে সেহেরী খাচ্ছেন।
সেহেরী খেতে আসা মান্দাইল এলাকার রিক্সাচালক মো: সোবাহান জানান, লক ডাউনের কারনে এখন খেপ কম হয়। প্রতিদিনের রোজকারও কমে গেছে। লোকমুখে শুনেছি এখানে ফ্রিতে সেহেরী খাওয়ায়। আজকে তিনদিন যাবৎ এখানে এসে সেহেরী খাই। একটু আসান হয় আমার জন্য। আমার মতো অনেকেই আসে সেহেরী খেতে এখানে। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তৃপ্তি সহকারে খাওয়ায়।
এলাকায় স্থানীয় অনেকেই জানান, এই এলাকায় আরো অনেক ব্যবসায়ী আছেন, রাজনীতিবিদ আছেন, মামুনের মতো যদি তারাও অসহায়দের পাশে দাড়ান, তাহলে সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের অনেক উপকার হতো। অনেক অসহায় কর্মহীন ও দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটতো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহাবুব আহম্মেদ মামুন নিউজ ঢাকাকে জানান, লকডাউনে অসহায়, কর্মহীন ও খেটে খাওয়া মানুষদের কথা চিন্তা করে আমি এই ফ্রি সেহেরী খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছি। যারা এখানে সেহেরী খেতে আসে তারা আমার মেহমান। আল্লাহর ইচ্ছে অনুযায়ী প্রতিদিন অনেকেই এখানে সেহেরী খেতে আসে। এটা আমাকে তৃপ্তি দেয়। আমার এ আয়োজন চলমান থাকবে, আগামীতে আরো ভালো কিছু করবো ইন সা আল্লাহ। সমাজের বিত্তবানদের উচিত অসহায়দের পাশে দাড়ানো।#