আজিজ উল্লাহ, উপকূলীয় প্রতিনিধি:
টেকনাফের বাহারছড়া দক্ষিণ শীলখালী এলাকায় প্রায় এক মাস আগে পুকুর থেকে নোমান নামের ৮ বছরের এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করছিলেন পুলিশ।এসময় তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন থাকায় ঘটনাটির রহস্য উদঘাটনে উখিয়া সার্কেল অফিসারসহ বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ নিরলসভাবে তদন্ত চালিয়ে যান। পরে দীর্ঘ এক মাস পর ঘটনার রহস্য বের করতে সক্ষম হয়েছেন তদন্ত টিম। হত্যাকান্ডে মায়ের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় ঘাতক মাকে আটক করা হয়েছে। মূলত শিশু নোমান মায়ের পরকীয়ার সম্পর্ক দেখে ফেলাই কাল হলো। মায়ের পরকীয়া সম্পর্কের নায়ক ঘাতক আনোয়ারের কাঠের আঘাতেই প্রাণ হারায় শিশুটি। এদিকে পরকীয়ার কারণে তিন বছর পূর্বে আফিয়াকে ডিভোর্স দেয় নোমানের বাবা সৈয়দ আলম। স্বামী না থাকায় এবং পরিবারের অভাব অনটনের সুযোগে আফিয়ার সাথে মোবাইলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে অনেকেই। আনোয়ার তাদের মধ্যে একজন।

জানা যায়, গতকাল, সোমবার ( ১৪ আগস্ট) বাহারছড়া দক্ষিণ শিলখালী সৈয়দ আমলের ডিভোর্সী স্ত্রীকে তার নিজ বাড়ি থেকে উখিয়া সার্কেল রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মছিউর রহমান, এসআই মো. হেলাল ঘটনার রহস্য উদঘাটিত করে মায়ের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাকে আটকের অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে ঘাতক মা গ্রেফতারকৃত আফিয়া নিজের এবং তার পরকীয়া প্রেমিকের দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছে।
উল্লেখ্য, সেইদিন যা ঘটেছিল এবং যেভাবে হত্যা করা হয়েছে নোমানকে দীর্ঘ এক মাস তদন্তে সেই রহস্য বের করেছেন পুলিশ। গত ০৩/০৭/২৩ ইং তারিখে রাতের খাওয়া দাওয়ার পরে মায়ের সাথে ঘুমিয়ে পড়ে নোমান। গভীর রাতে হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে যায় তার। তার পাশে মাকে না পেয়ে জেগে উঠে নোমান। মাকে খুঁজতে বাহিরে এসে ঘরের পাশে নির্জন স্থানে একজন অচেনা পুরুষ ও তার মায়ের খারাপ দৃশ্য দেখে সে।
নোমান তার মায়ের কাছে জানতে চায় “লোকটি কে?” উত্তর না পেয়ে বড় ভাই ওবায়দুল্লাহকে ডাক দেয়ার জন্য পিছন ফিরে ঘরের দিকে দৌড়ান। ঠিক তখনই নোমানের মাথার পিছনে কাঠের চলা দিয়ে আঘাত করে মায়ের পরকীয়ার মহাপুরুষ ঘাতক আনোয়ার। এতে নোমানের মাথার পিছনে হাড় ফেটে রক্তক্ষরণ হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ছটফট করতে থাকে আট বছরের শিশুটি। অতঃপর গলা টিপে শ্বাসরোধ করে নোমানের হত্যা নিশ্চিত করে নরপিচাশ আনোয়ার। এরপর দুজনে মিলে নোমানের নিথর দেহ বাড়ির পিছনে পরিত্যক্ত পুকুরে ফেলে দেয়।
কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার মো.মাহফুজুল ইসলাম পিপিএম (বার) নির্দেশক্রমে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে মামলাটির তদন্ত শুরু করা হয়। বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মছিউর রহমান ও সঙ্গীয় অফিসার্স ফোর্সের মো. হেলালের সহযোগিতায় নিরলস পরিশ্রম, বার বার ঘটনাস্থল পরিদর্শন, নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করা হয়।
বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মছিউর রহমান, ঘাতক মা আফিয়কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং ঘটনার সাথে জড়িত মূল হত্যাকারী আনোয়ারকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি “