বাণিজ্য মেলায় লটারির আঁড়ালে মোটরসাইকেলের লোভ দেখিয়ে এলাকার টাকা পাচার হচ্ছে কক্সবাজারে!
টেকনাফের বাহারছড়া বাণিজ্য মেলা নামে পুরান পাড়ার হলেও কাজে কক্সবাজারের কয়েকজন জুয়াড়িদের! মেলা রক্ষায় স্থানীয় যুবকদের প্রায় ৭০/৭৫ জনের একটি কমিটি নামেমাত্র রাখলেও তাদের তেমন আর্থিক সুযোগ- সুবিধাও দেয়া হয় না। বরং মাঝে মধ্যে স্থানীয়রা কেহ নয় বলে মূল কমিটি একটার দাপট চলে। তবু এটা শতভাগ সত্য কাহিনিও। মেলার পরিচালনা পক্ষ লসের হিসাব কষে সাতপাঁচ চৌদ্দ বলে স্থানীয় কমিটির লোকজনকে দৈনিক মাত্র ১৫ হাজার টাকাও দিতে অপারগ। এই যেন স্থানীয়দের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে লবণ ছাড়া গিলছে।
এবার আসি আসল কথায়, এলাকার গরীব, দুঃখী, শ্রমিক ও মেহনতী মানুষের টাকা কিভাবে লটারির আড়ালে মোটরসাইকেলের লোভ দেখিয়ে লুটে নিচ্ছে তা দেখুন।
এলাকায় সেই সকল-বিকেল কিংবা সাঁঝে বা উত্তপ্ত দুপুরে ৩০-৩৫ টি ইজিবাইকের বহর লটারির মুন্ডা নিয়ে নেমে পড়ে পাড়া মহল্লার আনাচে-কানাচে অলিতে-গলিতে, ইটের রাস্তা বা গ্রামের মেঠোপথে, বাজারে, রাস্তা রাস্তায় আওয়াজ তুলে লটারি লটারি লটারি মাত্র ২০ টায় জিতে নিন মোটরসাইকেল, মোটরসাইকেল, এমন কি মেলার প্রাঙ্গণে রাত ১১ টা আগ অবধি জোরেশোরে চলে লটারি বিক্রি। ২০ টাকায় মোটরসাইকেল পাওয়ার লোভে লটারি কিনতে লাইন ধরে তরুণীসহ এলাকার সহজ-সরল নারী, শিশু, আবালবৃদ্ধবনিতা, তরুণ জেলে-শ্রমিকদের একটা অংশ। অনেক ইজিবাইক বা টমটম চালক বা জেলে রয়েছে যারা মোটরসাইকেল পাওয়ায় আশায় দিনে টমটম চালিয়ে ৫/৬শ টাকা যা পায় তা দিয়ে লটারি কিনে পকেটে নিয়ে ঘুরে। অনেক চালক কিস্তির টাকাও জোগাড় করতে পারছে না সব টাকা লটারিতে উড়িয়ে দিচ্ছে আর মেলা শেষে কিস্তির টাকার জন্য মহাজন- টমটম চালকে কিস্তির টাকার লাগি মারামারিও হয়তো লাইগা যাবে। অনেকে আছেন ৬/৭ হাজার টাকারও লটারি কিনে আর প্রহর গুণে রাতে হলে মেলা থেকে মোটরসাইকেল নিয়েই ছাড়বে, ওয়াও কি আশারে বাপ! পরে হাজার হাজার লটারির মধ্যে একজন ইদুর ভগ্য ছাড়া সবাই হতাশ বড় হতাশ আর কেহ বলে শুধু একটা নং এর জন্য মিলেনি পরে টেনশন আরো রাইজিং, হাহাহা। কাল আবার কিনবো কিনবো বলেই চালিয়ে যায় মগর মোটরসাইকেল আর জুটে না এভাবে হুট করে৷ একদিন মেলা শেষ হয়ে যাবে তখন আফসোসের সাথে টাকা উড়িয়ে দেয়ার হুঁশ ফিরবে।
এভাবেই এই অভাবের সময়, পারিবারিক অর্থনীতির ক্রাইসিসের লগ্নে ভাগ্য পরিক্ষার নামে মোটরসাইকেল পাওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে সব টাকা লটারিতে ধ্বংস করছে এলাকার হাজার মানব সন্তান।
( লেখক- আজিজ উল্লাহ, সচেতনতা মূলক পর্ব-১)