বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু

আজকের বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠাতার পিছনে যে মানুষটার অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি হলেন সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বলেছিলেন, ‘সবাই পেলো স্বর্ণের খনি আর আমি পেলাম চোরের খনি।’ আজকের দিনে বাস্তবতার সাথে বাঙালি জাতির পিতার কথাগুলো একদম মিলে যাচ্ছে।

আমরা যদি নিজেদের বিবেকের কাছে একটু প্রশ্ন করে দেখি তাহলেই বুঝতে পারি আমার কৃষকদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের  টাকার উপর ভর করে আমরা এতটা উপরে উঠে চলেছি কিন্তু আমাদের কৃষকের কোনো মূল্যই আমরা দিচ্ছি না। এইভাবে আর কতদিন চলবে সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষগুলোকে তো বেঁচে থাকতে হবে।প্রকৃতির প্রতিশোধ বলে প্রকৃতিতে একটা কথা আছে সৃষ্টিকর্তা ছেড়ে দিলেও প্রকৃতি কিন্তু প্রতিশোধ ঠিকই নিবে।

সবুজ শ্যামল প্রাকৃতিতে ঘেরা আমাদের সোনার বাংলাদেশে সম্পদের প্রাচুর্যতা থাকার সত্ত্বেও আমরা আজ পথে বসতে শুরু করেছি। এই সম্পদগুলো কোথায় যাচ্ছে কিছু নামধারী ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে আজকে নিজের দেশের সম্পদ অন্য দেশে নিয়ে যেয়ে কিছু নামধারী মানুষ সম্পদের পাহাড় গড়ছে । যে জাতি নিজের দেশেকে মূল্য দিতে জানে না নিজের দেশের সম্পদ দেশের মানুষের সম্পদ অন্য দেশে পাঁচার করে তার মতো হতভাগা জাতি কখনও হতে পারে বলে জানা নেই। এ জাতি কিভাবে উন্নয়ন করবে উন্নয়ন শব্দটা নিতান্তই হাস্যকর ছাড়া অন্য কিছু হতে পারে না।এই জাতি কখনই বঙ্গবন্ধুর আর্দশকে কখনোই বাস্তবায়িত করতে পারবে না।

আজকের দিনে আমরা শুধু উন্নয়ন উন্নয়ন বলে চিল্লাচিল্লি করতেছি। আসলেই কি আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে না উন্নয়নের নামে সাধারণ মানুষগুলোর পথে বসিয়ে গুটি কয়েক মানুষ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছি। সাধারণ মানুষগুলোর জীবনযাত্রা আজকের দিনে কতটা কঠিন হয়ে উঠেছে সেইটা কি আমরা কখনই ভেবে দেখেছি। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন করে দিয়ে আমরা কিছু মানুষ উন্নয়নের জোয়ারে ভাসবো এমন উন্নয়ন তো আমাদের দরকার নাই।

আমাদের দেশের উন্নয়নের পিছনে কৃষক শ্রেণীর মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশি   কিন্তু সেই কৃষকদের পরিশ্রমের নায্য  মূল্য কী আমরা কখনই দিতে পেরেছি। আমাদের দেশের মানুষগুলো যদি কষ্টে থাকে তাহলে আমরা উন্নয়ন দিয়ে কি করবো?আগে দেশের জনগনের কল্যাণ সাধন করতে হবে তারপরে তারপরে উন্নয়নের কথা ভাববো এইটা কি হওয়া উচিত নয়।  আমরা বলছি না যে আমাদের উন্নয়ন দরকার নাই বা আমরা উন্নয়ন চাই না অবশ্যই আমাদের উন্নয়ন দরকার তবে আমাদের সাধারণ মানুষের পথে বসিয়ে দিয়ে উন্নয়ন এইটা আমরা কখনই চাইনি।

সরকার সব দ্রবমূল্যের উপর বেশি বেশি ভ্যাট নিয়ে আমাদের মতো সাধারণ জনগনের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দিচ্ছে  কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনগনের কাছে শতকরা ২০% ও পৌছায় না কিছু নামধারী জনগনের জন্য আজ এমন হচ্ছে এই মানুষগুলোর আবার জোর গলায় বলতে থাকে তারা দেশকে অনেক ভালোবাসে তারা  বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে দেশের প্রতি ভালোবাসা বঙ্গবন্ধুর আর্দশ যদি সামান্য পরিমাণ কতিপয় নামধারী ব্যক্তিগুলোর মধ্যে থাকতো তাহলে তারা জনগনের সম্পদ নিজেরা ভোগ দখল করতো না।  আমাদের এত সম্পদ কোথায় যাচ্ছে আজকে নিম্নস্তরের অফিস থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত সব জায়গায় শুধু দুর্নীতি। বাড়ি থেকে বাইরে বের হলে রাস্তা ঘাট হাট বাজার সব জায়গা দুর্নীতি। সব জায়গায় শুধু সাধারণ মানুষের অর্থ আত্মসাৎ করে কতিপয় নামধারী কিছু লোক সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে।এইটা যদি সাধারণ জনগণ কখনও প্রতিবাদ করতে যাচ্ছে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে নয়তো গুম করে দেওয়া হচ্ছে।এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় মনে হয় দেশটা কিছু মানুষের নিজের বাবার সম্পত্তি যখন যা ইচ্ছা তারা তখন তাই করে চলেছে কিন্তু দেশটা তো দশ লক্ষ মানুষের শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এই দেশের প্রতিটা মানুষের সমান অধিকার।সাধারণ মানুষ যখন এইগুলো আর সহ্য করতে করতে করতে তাদের ধৈর্য্য সীমা হারিয়ে ফেলবে ঠিক ঐ দিন সাধারণ জনগন নতুন করে জেগে উঠবে সেই দিন কেউ তাদের আটকাতে পারবে না।বাংলাদেশ আবার সোনার বাংলায় রুপান্তরিত হবে। আমরা বঙ্গবন্ধুর আর্দশ হারিয়ে ফেলেছি তার আর্দশ আমাদের মধ্যে বিন্দু পরিমাণে থাকলে আজকের বাংলাদেশ সোনার বাংলায় রুপান্তির হতে বাধ্য হতো।

বঙ্গবন্ধু এমন একটা আর্দশের মানুষ ছিলেন তিনি সবসময় সারাটা জীবন জনগনের কথা ভেবেছেন দেশের কথা ভেবেছেন। তিনি ইচ্ছা করলে অনেক বিলাসী জীবন যাপন করতে পারতেন কিন্তু না তিনি কখনই তা করেননি। যে সময়ে তার সন্তান সন্তানীদেরকে নিয়ে একসাথে বসবাস করার কথা কিন্তু তিনি শুধু মাত্র দেশ এবং বাঙালি জনগণের কথা চিন্তা করে নিজের সবকিছু বির্সজন দিয়ে জেলে জীবন অতিবাহিত করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে গেলে কখনই শেষ হবে না তিনি এমন এক আর্দশ। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বীর খুবই নগন্য আমরা সেই বীরের সৈনিক, আমরা সেই আর্দশিক মানুষের হাতে গড়া দেশের মানুষ কিন্তু কি হতভাগা জাতি আমরা সেই মানুষটার আর্দশকে আমরা ভুলে গেছি। বঙ্গবন্ধুর আর্দশ এই বাংলাদের মাটিতে আবারও ফিরে আসবে। কোনো দেশদ্রোহী, অর্থ লুণ্ঠনকারীর ঠাই এই বঙ্গবন্ধুর বাংলায় হতে পারে না হবে না।

লেখক : এনামুল হক
শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও চেয়ারম্যান খোকনের ব্যাখ্যা

বার্তা পরিবেশক: কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত “দৈনিক আমাদের কক্সবাজার” কর্তৃক আদালতের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ …

error: Content is protected !!