বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প পদ্মা সেতু। খরস্রোতা পদ্মা নদীর উপর দ্বিতল এই সেতু তৈরীর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সাথে অন্যান্য জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা হচ্ছে সহজতর। পদ্মা সেতুর উত্তরে মুন্সিগঞ্জে ও দক্ষিণে শরীয়তপুর এবং মাদারীপুর জেলার সংযোগ ঘটানোর মাধ্যমে- রাজধানী ঢাকার সাথে বরিশাল, খুলনা ও পদ্মা বিভাগের নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরী করেছে।
দক্ষিণাঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্পোন্নয়নে পদ্মা সেতুর প্রভাব থাকবে অপরিসীম।পদ্মা সেতুর কল্যাণে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগছে দক্ষিনাঞ্চলের নানা প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। পদ্মা সেতু দেশের জিডিপি বৃদ্ধিতেও অবদান রাখবে।
তীব্র স্রোত ও অধিক পানি প্রবাহের কারণে পদ্মার বুকে সেতু নির্মাণ ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। নানা জটিলতা ও বাঁধা-বিঘ্ন পেরিয়ে ৪২ টি পিলারের ওপর ৪১ টি স্পান বসিয়ে ৬.১৫ কি.মি দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান।
পদ্মা সেতুর ভৌত কাজকে মূলত পাঁচটি প্যাকেজে ভাগ করা হয়েছে যথা- (ক) মূল সেতু (খ) নদী শাসন (গ) জাজিরা সংযোগকারী সড়ক ও টোল প্লাজা (ঘ)মাওয়া সংযোগকারী সড়ক ও টোল প্লাজা এবং মাওয়া ও জাজিরা সার্ভিস এলাকা। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে শুরু হয় পদ্মা সেতুর মূল নির্মাণ কাজ। যা আজ শেষের পথে এবং আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পদ্মা সেতু নির্মাণ বিশ্বব্যাংক এবং এ দেশের কিছু কুচক্রী মহলের কাছে আজ চপেটাঘাত নিয়ে এসেছে। ২০০৯ সালে সেতু প্রকল্পে দূর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক ঋন প্রদান বন্ধ করে দেয়। সেই অভিযোগকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহসিকতার সাথে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মানের সিদ্ধান্ত নেন এবং আজ তিনি সফল। এমনকি কিছুদিন আগে কানাডার আদালতে বিশ্বব্যাংকের করা অভিযোগগুলো মিথ্যা প্রমানিত হয়।
পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা,আত্নবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদাবোধ আজ সমগ্র বিশ্বের কাছে বাহবা পাচ্ছে।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশ ও বাঙালির সফলতার স্মারক। এই সেতু আমাদের জন্য গর্বের। এভাবেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাক আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।
লেখক: ফাইয়াজুল আজাদ রুদ্র
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়