বর্ণাঢ্য আয়োজনে ‘কক্সবাজার আসিল ফেডারেশন’ আন্ত: মোরগ লড়াই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:

এক বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ ১০ নভেম্বর (শুক্রবার) কক্সবাজার শহরের নতুন বাহারছড়াস্থ হাজী বরফকল মাঠ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হল “কক্সবাজার আসিল ফেডারেশন আন্ত: মোরগ লড়াই- ২০২৩ ইংরেজি” প্রতিযোগিতা।

উক্ত মোরগ লড়াই প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাজি মোহাম্মাদ ইসমাইল (সিআইপি), এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নতুন বাহারছড়ার বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহিন মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, বদর মোকাম আবাসিক এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক হান্নান সাউদ, কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজের লেকচারার ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজ, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ- প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: মঞ্জুর আলম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মনিউল ইসলাম, নতুন বাহারছড়ার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক রায়হান উদ্দিন, কক্সবাজার আসিল ফেডারেশনের অন্যতম উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোস্তাক প্রমূখ ব্যক্তিবর্গ।

উক্ত মোরগ লড়াই প্রতিযোগিতায় আরও উপস্থিত কক্সবাজার আসিল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আবুল হোসেন, টেকনাফ উপজেলার মংলা, শওকত, উখিয়া উপজেলার মোহাম্মদ করিমসহ আরো অনেক শৌখিন আসিল পালক।

এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ১৫ জোড়া আসিল, বার্মিজ, দেশি ও বনমোরগ।

কক্সবাজার আসিল ফেডারেশনের প্রধান সমন্বয়ক রাহান উদ্দিন বলেন, গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া মোরগ লড়াইয়ের ঐতিহ্যকে আমরা ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি যার জ্বলন্ত উদাহরণ আজকের মোরগ লড়াই প্রতিযোগিতা।

কক্সবাজার ফেডারেশনের সভাপতি ওবায়দুল করিম জানান, এই ক্লাবের ১৫ জন সদস্য আসিল মোরগ পালন করে। শখের বশেই সবাই এই মোরগ পালন করছে। আর শখ করেই কক্সবাজার শহরেরল প্রথমবারের মত জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মোরগ লড়াইয়ের আয়োজন করা হয়েছে। এ প্রতিযোগিতায় কক্সবাজার জেলায় যারা মোরগ লালনপালন এবং মোরগ লড়াইয়ের সাথে সম্পৃক্ত তাদের মধ্যে একটি আন্তরিকতা তৈরীর পথ সুগম হলো। আর এর মাধ্যমে একটি ঐতিহ্যও রক্ষা হয়েছে।

কক্সবাজার আসিল ফেডারেশনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় গ্রামীণ খেলাধুলার ঐতিহ্য রক্ষায় মোরগ লড়াইয়ের আয়োজন করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরাও এই খেলা ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আজকের আয়োজন আমরা খুশি এবং আগামীতেও বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় মোরগ লড়াই হলে আমরা অংশ নিবো।

কক্সবাজার আসিল ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম জানান, লড়াইয়ে অংশ নেওয়া এক একটি মোরগের দাম ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। শৌখিন আছিল পালকরা অত্যন্ত যত্ন করে এই মোরগগুলো পালন করে। উন্নত খাবার এবং ঔষধসরবরাহ করা হয় প্রয়োজন মত। এই মোরগগুলোও খুব মালিক ভক্ত, লড়াইয়ে জেতার জন্য তারা প্রাণও দিতে পারে।

কক্সবাজার আসিল ফেডারেশনের অর্থ ও প্রচার সম্পাদক আবরার বলেন, প্রতিটি আসিল মোরগ দুই ঘণ্টা লড়াই করতে সক্ষম। লড়াই করতে করতে নির্দিষ্ট ছকের বাইরে চলে গেলে মোরগের মালিক তাকে ২০ সেকেন্ড পরিচর্যা শেষে আবারও লড়াইয়ের মাঠে নিয়ে আসেন। প্রতিপক্ষকে পরাজিত না করা পর্যন্ত মাঠে লড়াই চলতে থাকে।

বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার তুলে দিতে এসে মোহাম্মদ ইসমাইল সিআইপি জানান, ‘আসিল উন্নয়নে কেউ যদি সহযোগি কামনা করে তাহলে আমরা অবশ্যই অবশ্যই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবো।’

ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, একসময় ভারত থেকে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার সরাইলের দেওয়ান বংশ এই আসিল মোরগ নিয়ে আসেন। আগেরকার দিনের রাজা-বাদশার এটিকে পুষতেন বলে একে রাজকীয় মোরগও বলা হয়।

শোনা যায়, টিপু সুলতান, সম্রাট আকবরসহ অনেক রাজা এই মোরগগুলো শখ করে পুষতেন। এদের লড়াই দেখাটাকে বিনোদনের অংশ হিসেবে নিতেন। তবে, এখন এই খেলাটি বাংলাদেশে তেমন দেখা না গেলেও তুরস্কের জাতীয় খেলা কিন্তু এই মোরগ লড়াই। ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, জাপানেও এই খেলার প্রচলন রয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

অশ্লীলতায় ভরপুর ইতিচিত্রা সিনেমার গান

বৃষ্টি ভেজা বিকেলে বন্ধ এক ঘরে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন দুই প্রেমিক যুগল।চারপাশে নিস্তব্ধতায় …

error: Content is protected !!