নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ ১১বছর পর শনিবার ২৩ জুলাই নতুন কমিটি পেল বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত আগামী তিন মাসের জন্য ৩২ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। মো. রইজ আহমেদ মান্নাকে আহ্বায়ক করে নবগঠিত কমিটির যুগ্ন আহ্বায়ক করা হয়েছে মো. মাইনুল ইসলাম এবং আরিফুর রহমান শাকিলকে। এছাড়া বাকি ২৯ জনকে সদস্য করা হয়েছে।
বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর থেকে ছাত্রলীগের কমিটিকে ঘিরে চলছে সমালোচনার ঝড়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিবাহিত, অছাত্র এবং মাদক ব্যবসায় সংশ্লিষ্টদের দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছে বলে দাবি ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তামান নেতৃবৃন্দের।
নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক মো. রইজ আহমেদ মান্না। সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর আস্থাভাজন বলে পরিচিত। তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে, এছাড়া নেই ছাত্রত্ব। বিয়ে করেছেন অনেক আগেই। দ্বিতীয় বিয়েও করেছেন তিনি। দুই বউয়ের সংসারে রয়েছে ২টি সন্তান। আহ্বায়ক মান্নার প্রথম স্ত্রীর নাম শিরিন আক্তার, শিরিন-মান্না দম্পতির সংসারে ৮ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে,মান্নার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম আম্বিয়া আক্তার লাবনী। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মান্নার দ্বিতীয় স্ত্রী বরিশাল মেরিস্টপ ক্লিনিকে কর্মরত ছিলেন বলে জানা যায় এবং বর্তমানে তিনি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
এছাড়া রইজ আহমেদ মান্না বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিল বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। মান্না প্রত্যক্ষভাবে তৎকালীন সময়ে পরিচিত ছিলেন বরিশাল নগরীর বিসিক এলাকার বিএনপি নেতা আবেদ, কোটন ও বাচ্চুর অনুসারী হিসেবে। পরবর্তীতে তিনি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে নিজের দলীয় পরিচয় পাল্টে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। মান্না সাম্প্রতিক সময়ে সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর আর্শীবাদে বরিশাল শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য হয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠ সূত্র নিশ্চিত করেছে।
নবগঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাইনুল ইসলাম এবং আরিফুর রহমান শাকিল উভয়ের নেই ছাত্রত্ব। সম্প্রতি ঘটা করে উভয়েই বিয়ে করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেসব ছবি রয়েছে। এছাড়া উভয়ের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
আহ্বায়ক কমিটির ২৯ জন সদস্যের অনেকেরই পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়া অনেকের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক সংশ্লিষ্টতা ও বিয়ে করার অভিযোগ।
এ বিষয়ে নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক মো. রইজ আহমেদ মান্নাকে ফোন দিলে তার এক সহযোগী ফোন রিসিভ করেন এবং মান্না বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বাসভবনে মিটিং এ ব্যস্ত আছে বলে জানান। পরবর্তীতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, আমি নেতা হওয়ায় তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ খুশি হয়েছে। বিবাহের ছবি তার নয় বলে এবং তিনি বিবাহিত হওয়ার বিষয় অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার বিয়ের বিষয় মিথ্যা ও বানোয়াট।
অপর যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান শাকিল ফোন রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় জানার পর ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে একাধিকবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।