রবিন একটি বিষয় নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে পরামর্শ নেওয়ার জন্য বন্ধু রাজিবকে জানালো……
রবিন : আমি ওকে খুব ভালোবাসি কিন্তু ওতো আমাকে বিয়ে করার জন্য রাজি হচ্ছে না। একটা ভালো পরামর্শ দেয়, যেন ওকে আমি পেতে পারি ।
রাজিব : দোস্ত ওকে প্রেগন্যান্ট কর দেখবি উল্টো সে তোকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে।
রবিন : “ ছিঃ, আমি ওকে সত্যি সত্যিই ভালবাসি, আমার যথেষ্ট বিয়ের বয়স হয়েছে,চাকরীও করি, কিন্তু কেনো যে মেয়েটা বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না! অন্য একটা উপায় বল না। ”
রাজিব : এ ভাই তুই কোন জগতে বসবাস করিস ? আমি কী বলেছি তুই মিথ্যা মিথ্যা ভালোবাসিস ? সত্যি সত্যি ভালবাসিস বলেই তো প্রেগন্যান্ট করবি , আর প্রেগন্যান্ট হলেই তো তাড়াতাড়ি বিয়ে, এর চেয়ে ভালো উপায় আর নেই।
রবিন বেশ চিন্তায় পড়ে গেলো । রবিন গম্ভীর মুখে বললো, ” আমি ওকে চিনিরে ও কোনোদিন এসবে রাজি হবে না “।
রাজিব বিরক্ত হলো।
” ধুর কচু “, কোন মেয়েটাই প্রথমে রাজি হয়? তোকে রাজি করাতে হবে, জোর করে হলেও ।
রবিন : তুই বলছিস ? দেখ তুই আমার কলিজার বন্ধু, তুই যা বলবি তাই হবে।
রাজিব : এখন কী স্ট্যাম্প পেপারে সই করে দিতে হবে?
রবিন আর কথা বাড়ালো না , মেয়েটাকে সে বিয়ে করতে চায়। দ্রুতই বিয়ে করতে চায়। রবিনের মা’ও মেয়েটাকে চিনে । পছন্দও করে, কিন্তু মেয়েটার বিয়েতে অনীহা।
রাজিবের কথা শুনে রবিন মনে মনে ভাবলো হয়তো এটাই শ্রেষ্ঠ উপায় । অতঃপর মেয়েটাকে নানাভাবে ভয় দেখিয়ে, ভালবাসার দোহাই দিয়ে জোরপূর্বক বীরপুরুষের মতো সেই কাজটা করেই ফেললো!
বেশ কিছুদিন পর ঠিকই রাজিবের সূত্র ফলে যায়।
কাটায় কাটায়, অক্ষরে অক্ষরে। মেয়েটা এখন নিজেই রবিন কে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছে। বমি বমি ভাব।
মেয়েটা বুঝে গেছে তাঁর ছোট্ট পেটে আরেকটা ছোট্ট প্রাণী আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে।
রবিন খুশিতে রাজিবের কাছে গিয়ে বললো ” দোস্ত তুই তো মহাজ্ঞানী রে “, তোর কথা ফলে গেছে। ওতো এখন বিয়ের জন্য এখন পাগলী হয়ে গেছে।
রাজিব : আজকাল এসব জ্ঞানীরা না, মূর্খ ছাগলও বলবে। যাই হোক এখন তুই এক কাজ কর, তুই মেয়েটাকে বিয়ে করিস না।
রবিন : ধুর, আমি ওকে ছাড়া বাঁচবো না, ওর মতো লক্ষ্মী মেয়ে দুনিয়াতে আরেকটা পাবো না।
তারচেয়ে বড় কথা হলো কোনো মেয়ের এত বড় সর্বনাশ আমি করতে পারবো না।
মাকে কালকেই বলবো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যেতে।
রাজিব : হো হো করে হাসে বললো দোস্ত এতো আবেগী হোস না । গিয়ে দেখ মেয়েটি আরো কত ছেলের শরীরের গড়ন জানে।
রবিন : বাজে কথা বলবি না ।
রাজিব : বাজে কথার কী আছে ? যে মেয়ে বিয়ের আগে তোর সাথে শুয়েছে, সে মেয়ে যে বিয়ের পর অন্য কোনো ছেলের সাথে শুবে না তার কী নিশ্চয়তা আছে ?
মেয়েটি নোংরা না হলে এই কাজ করতো না। এটা ভালবাসা না ছাই।
রবিন : আচ্ছা তুই কী বলতে চাস ?
রাজিব : দোস্ত তুই ওই মেয়েকে বিয়ে করিস না বাংলাদেশে কী মেয়ের অভাব?
পেটের বাচ্চা নষ্ট করতে বল।
রবিন : নারে এই কথা বললে ও মরেই যাবে।
রাজিব : মরুক, দুনিয়া থেকে একটা পরোক্ষ পতিতা কমবে।
রবিন এই কথার কী জবাব দিবে বুঝে উঠতে পারলো না। মাথা কুঁচকে কুঁচকে চলে আসলো।
রাতভর রাজিবের কথাটা রবিনের মাথায় ঘুরতে থাকে। ভাবে হয়তো রাজিব ঠিকই বলেছে।
অন্যদিকে মেয়েটার অস্থিরতা বাড়তেই থাকে।
রবিন মেয়েটি আর কোনো খোঁজ নেয় না। মাস ২ একপর শেষমেশ রবিন ঠিকই অন্য আরেকটা মেয়েকে বিয়ে করছে। ধুমধাম করেই বিয়ে করছে। নিজের বন্ধুর বিয়েটা খুব উপভোগ করছে রাজিব।
অন্য দিকে পেটের বাচ্চাটা আর দুনিয়ার মুখ দেখতে পারলো না ,রবিনের বিয়ের কথা শুনে মেয়েটা বিয়ের দিন রাঁতেই, বাচ্চা টাকে পেটে নিয়েই ফ্যানের সাথে নিজের শরীরটা দুলিয়ে দিলো !
তার আগে মৃত্যু পত্রে লিখে যায়, তোমার নতুন বৌকে কমপক্ষে তাঁর পেটের বাচ্চাটা নষ্ট করতে বলো না, সে অনেক কষ্ট পাবে। আমি চাই তুমি বাবা হও রবিন!
রাত্রি দ্বিপ্রহর।
সবাই প্রায় ঘুমিয়ে গেছে। রাজিব আজকে নেচেছে, হালকাপাতলা নেশাও করেছে। বাসায় গিয়ে হেলেদুলে নিজের খাটে গা হেলানোর পরে খেয়াল করলো মাথার উপরে কী যেন ঝুলে আছে!
নেশা কেটে গেলো, ভালোভাবে চেয়ে দেখলো মাথার উপরে আর কিছু নয়, আদরের বোনটা ঝুলছে !
চিৎকার দিতে গিয়ে রাজিব অজ্ঞান হয়ে গেলো ! পাশের ঘর থেকে মা আসলো, কিছুক্ষণের ভেতর পুলিশও আসলো!
সকালে রাজিবের হাতে কে যেন সুইসাইড নোটটা দিলো, পড়ে বুঝলো সে আদলে কী করেছে ! পাগলের মতো দৌড়াচ্ছে আর বলছে, আমি খুনি, আমি নিজ হাতে আমার বোনটাকে খুন করেছি। আমি খুনি, আমাকে শাস্তি দাও,আমি খুনি ।
( সম্পূর্ণ কাল্পনিক )