স্টাফ রিপোর্টারঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশালে উপজেলা বিএনটির নবগঠিত কমিটিনিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২০ জুন) দুপুরে নওধারস্থ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের অস্থায়ী কার্যালয়ে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ডাঃ মাহবুবুর রহমান লিটনের একক স্বেচ্ছাচারি পকেট কমিটি করার প্রতিবাদে ত্রিশাল উপজেলা ও পৌর জাতীয়তাবাদি দলের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক এমদাদুল হক মানিক, ত্রিশাল থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন স্বপন, মাজাহারুল ইসলাম জুয়েল, সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আব্দুল খালেকের পুত্র বালিপাড়া ইউনিয়ন থেকে ধানের শীষ প্রতিকে প্রতিদ্বন্দিতাকারী আনোয়ার সাদাত, ময়মনসিংহ জেলা উলামা দলের সদস্য সচিব ও ত্রিশাল শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, ত্রিশাল থানা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম শোভা, ত্রিশাল পৌর ছাত্রদলের সভাপতি রমজান আলী রবিন, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির শিকদার, মঠবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির সধারণ সম্পাদক ইসলাম হোসেন, বিএনপি নেতা আব্দুর রহিম, শামছুল হুদা তোতা প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে ত্রিশাল উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও ত্রিশাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ আমিন লিখিত বক্তব্য বলেন, দেশ ও জাতির ক্লান্তিকালে যখন বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের নির্যাতনের স্বীকার, সরকারের মিথ্যা মামলা ও কারানির্যাতিত হয়ে যখন আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান বিদেশে অবস্থান করছে, ঠিক তখনই ত্রিশাল উপজেলা ও পৌর বিএনপির একটি আহবায়ক পকেট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই বিতর্কিত পকেট কমিটি বাতিলের দাবী জানিয়ে আজকের সাংবাদিক সম্মেলন।
সাংবাদিকবৃন্দ,
আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, গত রোববার ১৩ জুন/২১ইং তারিখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ত্রিশাল উপজেলা ৩৯ সদস্য ও পৌর শাখা ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জেলা আহবায়ক কমিটি। ঘোষাণাকৃত আহবায়ক কমিটিতে দলের দুঃসময়ের কান্ডারীদেরকে স্থান দেওয়া হয়নি। বিএনপির নিবেদীত প্রাণ যারা, জেল-জুলুম, মামলা ও হামলার স্বীকার হয়েছে এমন প্রায় শাতাধিত নেতা এই কমিটিতে স্থান পায়নি। কিছু চাটুকার দিয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ডা. মাহবুবুর রহমান লিটনের পকেট কমিটি ঘোষণা করে দীর্ঘদিন যাবত যারা বিএনপির রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাদেরকে বঞ্চিত করেছে। একই সাথে দলের এমন দুঃসময়ে ত্যাগী নেতাদেরকে অবমূল্যায়ণ করে ত্রিশাল উপজেলা ও পৌর বিএনপিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। এমনিতেই থানা কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন যাবত দলের কোন কর্মসূচী পালন না হওয়ায় দলের কার্যক্রম খানিকটা ঝিমিয়ে পড়লেও যারা ওই সময়েও মাঠে ময়দানে থেকে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এমন অনেক নেতৃবৃন্দকেও কমিটির বাহিরে রাখা হয়েছে।
প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ,
গত ভোটার বিহীন নির্বাচনে উপজেলা থেকে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও কেন্দ্র পর্যায়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দলকে ভালবেসে নির্বাচন পরিচালনা করেছে এমন নেতৃবৃন্দও আজ হতাশ, তৃণমূলকে সবসময় শক্তিশালী করার কথা বললেও ত্রিশাল উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি আহবায়ক কমিটির বেলায় তা একেবারে ভিন্ন। তৃণমূলকে অবমূল্যায়ণ করে মাঠ পর্যায়ের নেতাদেরকে বাদ দিয়ে একটি পকেট কমিটির মাধ্যমে ত্রিশাল বিএনপিকে ছন্নছাড়া করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে ডা. লিটন।
একক আধিপত্য বিস্তার করে জেল-জুলুম ও মামলা-হামলার স্বীকার নেতৃবৃন্দ এমনকি দল থেকে যারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন বা সাবেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব যারা পালন করেছেন এমন নেতাদেরকেও কমিটিতে স্থান না দেওয়ায় নেতৃবৃন্দ আগত সময়ে ত্রিশাল বিএনপির অস্তিত্ব নিয়ে হতাশ।
প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা,
ত্রিশাল সংসদীয় আসনে বিগত নির্বাচনে যারা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদে ত্রিশালবাসীর সুখ, দুঃখের কথা বলেছেন এমন দুইজন সংসদ সদস্য ছিলেন। যাদের অনুপ্রেরণা ও দিক নির্দেশনায় আজকে ত্রিশালে হাজার হাজার বিএনপির কর্মী সৃষ্টি হয়েছে। তারমধ্যে সদর ইউনিয়নের প্রয়াত আবুল মনসুর আহমেদ ও আব্দুল খালেক সাহেব। এ দুজন সাবেক সংসদ সদস্যের পরিবার এমনকি সাবেক সভাপতি প্রয়াত মাওলানা মুঞ্জুরুল হক সাহেব, প্রয়াত মোঃ জালাল উদ্দিন সাহেব, সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন চেয়ারম্যান সাহেবসহ প্রয়াত বা সাবেক উপজেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাবেক উপজেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারীগণ, সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বা সাবেক ইউনিয়নের সভাপতি, সম্পাদকসহ যারা দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের কাউকে এ আহবায়ক কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়নি। যা স্বৈরাচারী, এক নায়কতন্ত্র, একক আধিপত্ত বিস্তার ছাড়া কিছু নয়।
দীর্ঘদিন দলের জন্য শ্রম, অর্থ, জেল-জুলুম ও মামলা-হামলার স্বীকার হওয়া দলীয়কর্মীগণ পদ-পদবীর করতেই পারে। তাতো অন্যায় কিছু নয়? তবে তাদের চাইতেও যোগ্যনেতাদের দায়িত্ব দিলে কোন কথা ছিল না। তবে যাদেরকে আহবায়ক কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে কয়জন আছেন এমন? বর্তমান সময়ে ত্রিশালে ডা. লিটন বিএনপিতে যে নোংরামির রাজনীতি শুরু করছে তাতে মনে হয় আগত সময়ে বিএনপি প্রতিবন্ধী হিসেবেই থাকবে ত্রিশালে।
দলের ত্যাগী, জেল ও জুলুমের স্বীকার নেতাদেরকে অবমূল্যান করে নিষ্ক্রিয়নেতাদের (অধিকাংশ) দিয়ে যে কমিটি গঠন করেছে তাতে দিনের আলোর মতই পরিস্কার ত্রিশাল বিএনপির কমিটি হচ্ছে পকেট কমিটি। দলের প্রতি মায়া না থাকার কারণে যারা দায়িত্বরত আছে আগামী দিনে ত্রিশাল উপজেলা জাতীয়তাবাদের নেতাগণ তাদেরকে ওই ভাবেই স্বরণ করবে। আন্দোলন, সংগ্রামে যে সকল নেতৃবৃন্দ সবসময় থেকে ত্রিশাল উপজেলা বিএনপির ইতিহাস হয়ে আছেন ঠিক তেমনই যারা বিএনপির সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা, পকেট দল করেছে, করবে তারাও ত্রিশাল বিএনপির ইতিহাসে ডাস্টবিনে নিক্ষিপ্ত হবে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে
[sharethis-inline-buttons]