টেকনাফে ঘূর্নীঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ধানক্ষেতের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি,কৃষকের করুণ দশা!

আজিজ উল্লাহ,টেকনাফ:

টেকনাফের বাহারছড়ার বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে উত্তর শিলখালী মেরিনড্রাইভের পূর্ব পাশে ঘুর্নীঝড় সিত্রাংযের কারণে সমুদ্র থেকে লবনাক্ত পানির অনুপ্রবেশে কয়েক হেক্টর কৃষিক্ষেত ধান ধ্বংস হয়ে গেছে। এর মধ্যে অনেক কৃষক ভূমিহীন তারা জমির মালিক থেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে এসব জমি লিজ নিয়ে চাষ করছিলেন। অনেকে ঋণ নিয়ে বা ধার করে এসব কৃষির আর্থিক যোগান সংগ্রহ করে চাষবাস করছিলেন।

জানা যায়, টেকনাফের উপকূলীয় অঞ্চলের কিছু এলাকায় সদ্য আচড়ে পড়া প্রাকৃতিক ঘুর্নীঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবের আগের দিনও প্রান্তিক কৃষক পরিবারে এমনই গল্প ছিল,এমনই স্বপ্ন ছিল৷ আকাঙ্ক্ষা ছিল। তা ভাবতেও পারছেন না চোখের নিমিষেই তাদের সবুজবীথির বিশাল কৃষিক্ষেতের এমন দশা হবে।

কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস প্রাকৃতিক দুর্যোগ সিত্রাং চলে গেলেও তার ক্ষত চিহ্ন রেখেই গেছেন কৃত্রিম চাষী কৃষক পরিবারের উপর। ঘুর্নিঝড় চিত্রাংয়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে পানির প্রবাহ ও উচ্চতা বেড়ে সমুদ্র খাল সংলগ্ন খাল হয়ে মেরিনড্রাইভের পূর্ব পাশে ও পশ্চিম পাশে নোনাজলে ডুবে যায় পুরা বিলের ধানক্ষেত। লবনাক্ত পানির কারণে সেই সবুজ সোনালি ফসল ধূসর রঙ ধারণ করছে এবং ধমকা হওয়ার কারণে অনেক হেক্টর ধানক্ষেত সোনালী ফসলের ধানের ছরাসহ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে! এসব নষ্ট হয়ে যাওয়া ধানক্ষেতের গরু- মহিষের চরন ভূমিতে পরিনত হয়েছে।

এই দুর্যোগে কিছু ভূমিহীন কৃষক অগ্রিম টাকা দিয়ে অন্যের জমি লিজ নিয়ে অনেক টাকা খরচ করে চাষ করেছিলেন। এই ঘুর্নিঝড়ে তাদের ধানক্ষেত ধ্বংস হয়ে গেছে ফলে তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা বিষন্ন, বড়ই হতাশাব্যাঞ্জক। এত ক্ষতি পুষিয়ে আনা যেন দূরহ ব্যাপার।

ভূমিহীন কৃষক আব্দুল আওয়াল বলেন,” এবছর এলাকার কয়েকজন জমির মালিক থেকে কানি প্রতি ৬ হাজার টাকা অগ্রিম টাকা দিয়ে জমি লিজ নিয়ে প্রায় ১০ কানি জমি চাষ করি। এই ঘুর্নীঝড়ে সব ধানচাষে সমুদ্রের লবণ পানি ঢুকে পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ২লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। ”
একই এলাকার কৃষক আবু ছিদ্দিক বলেন,” কত আশা নিয়ে অন্যের জমি লিজ নিয়ে চাষ করছি আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। এত বড় পরিবার কিভাবে চলবে আল্লাহ জানে। সরকার থেকে যদি কিছু সহায়তা দেয়া যায় তাহলে অন্তত একমুঠো খেতে পারবো। তিনি আরো বলেন, এরকম ৫০জনের অধিক চাষীর ধান ধ্বংস হয়ে গেছে।”

টেকনাফ উপজেলা কৃষি অফিসার জাকিরুল ইসলাম জানান,” ঘূর্নীঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একশত হেক্টরের মতো ধান ক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হেক্টরের মতো একেবারেই ধ্বংস হয়েছে।যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন কৃষকদের একটা তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে তবু সরকারিভাবে সরাসরি আর্থিক সহায়তার কোন তহবিল নেই। কিছু এনজিওর সাথে কথা বলা হচ্ছে তারা তালিকা দিতে বলছে কিন্তু সহায়তা করবে কিনা তা নিশ্চিত নয়।”

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

বিপিএসএ এর সদস্য হলেন মহিবুল ইসলাম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএসএ) এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৩ এর ১৫১ সদস্যবিশিষ্ট …

error: Content is protected !!