খুদে লেখক রুপাই এখন সেভেনে বেরিয়েছে চতুর্থ গল্পগ্রন্থ- ‘৮ গোয়েন্দা ৩ প্রশ্ন’

প্রথম যখন ওর গল্পের বই বের হয়, তখন তৃতীয় শ্রেণিতে। গল্পগুলো লেখা দ্বিতীয় শ্রেণিতে থাকতে। তখনো কলম ধরেনি, পেন্সিলে লিখতো। সে বছরই অমর একুশে বইমেলায় বেরুলো প্রথম গল্প গ্রন্থ – ‘ভূত বলে কিছু নেই’। মেলায় বেশ হইচই হলো বইটি নিয়ে। মেলার খুদে লেখক হিসেবেও পরিচিতি পেলো। সাক্ষাৎকার প্রচার হতে থাকলো টেলিভিশনে, প্রকাশ হলো পত্রপত্রিকায়। নিজের বইয়ে গোটা গোটা হরফে অটোগ্রাফ দেওয়ার ছবি, লেখায় আরও বেশি যুক্ত করলো এই খুদে লেখককে।

সেই খুদে লেখক অমর্ত্য রুপাই এখন সপ্তম শ্রেণিতে। এবার অমর একুশে বইমেলায় বেরিয়েছে তার চতুর্থ গল্পের বই- ‘৮ গোয়েন্দা ৩ প্রশ্ন। মাঝখানে একুশে বই মেলায় আরও দুটি গল্পের বই বেরিয়েছে ওর- ‘মিশন লিশন ক্রিং ক্রিং’ ও ‘কালিয়াপ্তা কুলাপ্তা কালাপ্তা’।

এবারের বইয়ে তিনটি গল্প রয়েছে- দ্য হিস্টোরিক্যাল স্টারস, পদ্মা সেতু হয়ে টুঙ্গিপাড়া ও ৮ গোয়েন্দা ৩ প্রশ্ন। এর মধ্যে প্রথম গল্পটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী। ২০৫৫ সালের পৃথিবী কেমন হতে পারে, এখনকার গোয়েন্দা দল তখন ঠিক কতটুকু সফল, কিংবা তখনকার এলিয়নরা কেমন হবে- এসবই উঠে এসেছে এই গল্পে। বিশেষ করে রাজপ্রাসাদের প্রবেশের সময় প্রহরীর কাছে যে স্টার দেখাতে হয় এবং সেই স্টার যখন চুরি হয়ে যায়, গল্পটাও তখন অন্যদিকে মোড় নেয়। এই গল্পের সবগুলো চরিত্রই বেশ রহস্যের।

দ্বিতীয় গল্পটা ভ্রমন কাহিনী। তবে সাধারণ কোন ভ্রমন নয়; জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিসৌধ ও তার বাসভবন ঘুরে ঘুরে দেখার আনন্দ-বেদনার গল্প। সঙ্গী ছিলেন কাচারি ঘরের কেয়ারটেকার। তিনি ঘুরে ঘুরে দেখালেন, পরিচয় করিয়ে দিলেন ঐতিহাসিক সব স্থাপনা ও ঘটনার সঙ্গে। যেমন- এক জায়গায় রুপাই লিখেছে- ‘এটা হিজলগাছ। তার নিচে পুকুর। শৈশবে এই হিজলগাছ থেকে নিচের খালে লাফ দিয়ে গোসল করতেন বঙ্গবন্ধুকন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখানে বঙ্গবন্ধুও গোসল করতেন। এই পুকুরটি অবশ্য দুটি নদীর সংযোগ।’

আর শেষের গল্পটি ভীষন রহস্যের। দুই গোয়েন্দা দলের আটজন সদস্য। তাদের সামনে তিনটি প্রশ্ন। কিন্তু কি সেই প্রশ্ন? আর ঘটনাইবা কি? আর সেই প্রশ্নের পেছনে কেনইবা লেগেছে গোয়েন্দারা? জানতে হলে পড়তে হবে গল্পের এই বইটি।

ওর লিখার বৈশিষ্ট্য হলো, চলিত রীতিতে কথ্য রূপ, মানে ঘরোয়া বা আড্ডার মত করে সাবলীল সহজভাবে গল্প বলা। একবার কেউ পড়া শুরু করলে গল্পের বাঁকে বাঁকে ও চরিত্রে এমনভাবে জড়িয়ে পড়বে যে শেষ না করে ওঠার উপায় নেই পাঠকের।

ওর লিখা আগের চেয়ে আরও ঝরঝরে সহজ হয়েছে। শব্দ বাছাইয়ে এখন বেশি সতর্ক। গল্পের গোলক ধাঁধা থেকে খুব দক্ষতা ও যত্নে পাঠককে দাঁড় করান আলোয়, সমাধানে।

বইলের ভূমিকায় রুপাই লিখেছে- ‘যারা গোয়েন্দা গল্প, এলিয়েন ও ভ্রমণ পছন্দ করেন, এই বইয়ের গল্পগুলো তাদের জন্য। সে অর্থে বইটি সব বয়সের সব ধরনের পাঠকের জন্য। আশা করি বইটি আপনাদের খুবই ভালো লাগবে। গল্পগুলো এমনভাবে সাজানো পরের গল্পে এরাই নায়ক। গল্পগুলো শেষ হয়নি। গল্পগুলোর পরের ধাপ আবারও আসবে পরের বইয়ে ‘

রুপাই রাজধানীর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। এই বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন চিত্রশিল্পী ও লেখক তৌহিন হাসান। অলংকরণ করেছেন প্রণব চক্রবর্তী। বইটি প্রকাশ করেছে বেহুলাবাংলা। মূল্য ২৫০ টাকা। পাওয়া যাচ্ছে রাজধানীর কাটাবনের কনকর্ড টাওয়ারে বেহুলাবাংলার বই ঘরে ও রকমারি  ডটকমে।

 

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

সেরা চিত্রগ্রাহকের পুরস্কার পেলেন নয়ন আহম্মেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় সেলিব্রিটি ফটোগ্রাফার নয়ন আহম্মেদ।বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে আলোচনার শীর্ষে এই …

error: Content is protected !!