ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন জিনজিরা ইউনয়নের কসাইভিটা কবরস্থান থেকে গতকাল শনিবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটে ও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে মৃত্যুর দেড়মাস পরে মামলার তদন্তের স্বার্থে কবর থেকে ছাত্রলীগ নেতার লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহতের নাম মোঃ সাদরাত আলম হিমেল (২৮) । সে জিনজিরা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন।
মামলার বাদী ও নিহতের পিতা মোঃ আলম জানান, গত ২৭ ফেব্রুয়ারী আমার ছেলে হিমেল তার এক বন্ধু অভির গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে যায়। সেখানে বন্ধুদের সাথে ড্রিংস করে। পরে সে ও অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। ডাক্তার প্রথমে দেখে বললো ঠিক হয়ে যাবে। ১দিন পরে ২৯ ফেব্রুয়ারী রাতের বেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল টিম আমাকে জানালো হিমেলের অবস্থা সংকটাপন্ন ওকে আইসিইউতে নিতে হবে। ঢাকা মেডিকেলে আইসিইউ খালি না থাকায় তারা ধানমন্ডি একটি ক্লিনিকে আইসিইউ খালি আছে সেখানে নিয়ে যেতে বলে। এম্বুলেন্সে করে ধানমন্ডি নিতে নিতে হিমেল রাস্তায় ই মারা যায়। আমরা প্রথমে কোন কিছু না ভেবে ছেলের দাফন কাফনের ব্যবস্থা করে মাটি মঞ্জিল করে ফেলি। পরবর্তীতে জানতে পারি যে আমার ছেলে হিমেলকে হত্যার উদ্যোশে তার বন্ধুরা ড্রিংসের সাথে বিষ জাতীয় কোন পদার্থ পান করিয়েছে। যার কারনে হিমেল প্রথমে অসুস্থ হয়ে পড়ে শেষে মারাই যায়। বাদী আরো বলেন, আমার ধারনা ঐ অনুষ্ঠানে যে বন্ধুদের সাথে বসে ড্রিংস করেছে তারাই হিমেলকে ড্রিংসের সাথে বিষ জাতীয় কিছু মিশিয়ে খাইয়ে দিয়েছে। এ ঘটনার জানার পর আমি বিজ্ঞ আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে আদালত আমার মামলা আমলে নিয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাকে তদন্ত করার দায়িত্ব দেন। আমি আমার ছেলের হত্যার সঠিক তদন্ত ও বিচার চাই।
নির্বাহী মেজিস্ট্রেট কামরুল হাসান সোহেল জানান, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ ক্রমে আমরা লাশটি কবর থেকে উত্তোলন করি। পরিবারের অভিযোগ হিমেল কে বিষ জাতীয় কিছু খাওয়ানো হয়েছে। তাই ময়না তদন্তের জন্য ও তার দেহে বিষ জাতীয় কিছুর উপস্থিতি আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য লাশটি উত্তোলনের পরে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী মাইনুল ইসলাম পিপিএম জানান, হিমেলের পিতা ছেলের মৃত্যুর প্রায় ২০দিন পর গত ১৭ মার্চ বাদী হয়ে ঢাকা জর্জ কোটে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমাদের তদন্তের ভার দিলে আমরা মামলার তদন্তের সার্থে আদালতকে লাশ উত্তোলনের আবেদন করি। আদালত আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশেই গতকাল নির্বাহী মেজিস্ট্রেট এর উপস্থিতিতে কবর থেকে হিমেলের লাশ উত্তোলন করা হয়। কবর থেকে লাশ উত্তোলনের পরে ময়না তদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। এ সময় সেখানে উপস্থিত হিমেলের পিতা মোঃ আলম ছেলে লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলে বলা যাবে হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু।