ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিভিন্ন খালের তীর ঘেষে গড়ে উঠেছে একাধিক বহুতল ভবন। এসকল ভবনের অধিকাংশের নেই কোন ধরনের প্লান পাস অথবা অনুমোদন, মানা হয় নি কোন বিল্ডিং কোড। এখনই যদি প্রশাসন এসকল বিল্ডিংয়ের উপর নজরদারি না করে, আবারো ঘটতে পারে মধ্য চড়াইলের মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ বিষয়ে দ্রæত প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছে এলাকাবাসী।
জানা যায়, কেরাণীগঞ্জের উপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রায় অর্ধ শতাধিক ছোট বড় খাল। এসকল খালের অধিকাংশই বেদখল হয়ে গেছে। যে সকল খাল এখনো বেদখল হয় নি, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য শুভাঢ্যা খাল, আটি খাল, কলাতিয়া খাল ইত্যাদি। খাল বেদখল না হলেও এসকল খালের দুই তীর ঘেষে গড়ে উঠৈছে বৈধ অবৈধ একাধিক বহুতল ভবন।
তবে এসব ভবনের অধিকাংশের নেই কোন প্লান কোড, রাজউকের অনুমোদন অথবা সঠিক নকশা। স্থানীয়রা যে যেভাবে পেরেছে কোন নিয়ম নীতি না মেনে ভবন নির্মান করেছে। এর ফলে প্রায় সময় ঘটে ভবন হেলে পড়ার মতো দুর্ঘটনা। গত তিন বছরে শুভাঢ্যায় তিন থেকে ৪টি বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৫ এপ্রিল ২০১৮ শুভাঢ্যা কালিবাড়ি খালপাড় এলাকায় একটি তিনতলা ভবন হেলে পড়েছে। ২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারী শুভাঢ্যা খালের বেগুনবাড়ি ব্রীজের কাছে একটি ৫ তলা ভবন হেলে পড়ে। একই বছর ২৫ ফেব্রæয়ারী কাজী বাড়ি মোরে একটি ৬ তলা ভবন হেলে পড়ে। সর্বশেষ গত ১৯ ফেব্রæয়ারী কালিন্দী ইউনিয়নের মধ্য চড়াইল এলাকায় একটি ডোবার তীর ঘেষে তিন তলা ভবন উল্টে পড়ার ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী বলছেন প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাবেই এরকম দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় প্রশাসন যদি সঠিক ভাবে তদারকি করতো তা হলে এ ধরনের দুর্ঘটনাগুলো ঘটতো না। তারা দাবী করেন এখনই প্রশাসনের উচিত সঠিক ভাবে তদারকি করা, অন্যাথায় আবারো দেখতে হবে যে কোন বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
সরেজমিন গতকাল রবিবার কেরানীগঞ্জের কয়েকটি এলাকায় ঘুড়ে দেখা যায়, খালের তীর ঘেষেই গড়ে উঠেছে একাধিক বহুতল ভবন। এসকল বিল্ডিংয়ের কোন কোনটির অনুমোদন আছে, কোন কোনটির অনুমোদন নেই। যে যেভাবে পেড়েছে ভবন নির্মান করেছে। খালের তীর ঘেষে নির্মান করায়, ঝুকিতে রয়েছে অনেক ভবন ।
মো: আওলাদ নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তি বলেন, কোন দুর্ঘটনা ঘটলে প্রশাসন সাথে সাথে অনেক তৎপরতা দেখায়, কিন্তু পরে আর কিছুই হয় না। প্রশাসন যদি সঠিক ভাবে মনিটরিং করে তা হলে বার বার দুর্ঘটনাগুলো ঘটে না। প্রশাসনের সঠিক নজরদারি করা উচিত।
মো: সাদেক নামে শুভাঢ্যার অপর একজন জানান, এসব বাড়ি ঘরগুলো যার যার নিজস্ব জায়গায় ই করেছে। তবে খালের তীর ঘেষে নির্মান করায় ভবনগুলো ঝুকিতে রয়েছে। ভবন নির্মানে সতর্ক হওয়া উচিত ছিলো। বর্ষার সময় যখন খালে পানি আসে তখন খালের তীরের মাটি নরম হয়ে যায়। তখন ভবন হেলে পড়ার মতো দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
এছাড়া আরো কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা বলেন, মধ্য চড়াইলের ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। অন্যথায় আবারো যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ বলেন, খাল অথবা নদীর পাড়ে যে সকল অপরিকল্পিত ভবন নির্মিত হয়েছে তা অতিদ্রæতই উচ্ছেদ করা হবে। আবার যেন কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে না পারে সে বিষয়ি আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করছি। ইতি মধ্যেই মধ্য চড়াইল এলাকায় যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে তার আশেপাশের কয়েকটি বাড়িকে ঝুকিপূর্ন চিহ্নিত করে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে । খাল জলাশয় ও নদীর তীরে যেসকল বহুতল ভবন আছে সেগুলো রাজউককে সঙ্গে নিয়ে আমরা মনিটরিং করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। #