প্রতিমা বিসর্জনকালে কেরানীগঞ্জের আগানগর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর খুশিকে মারধর করেছেন র্যাবের সিভিল টিমের সদস্যরা। এক পর্যায়ে তাকে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দেন। বুধবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আগানগর বেরিবাধ বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে এ ঘটনা ঘটে। পরে প্রতিমা বিসর্জন দিতে আসা হাজার হাজার জনতা গাড়ীরসহ র্যাব সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাবের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত র্যাব সদস্যদের জনতার রোষ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
আগানগর ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার মো: শাহীন জানান, রাত সাড়ে ৮ টার দিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী সহ উৎসবে অংশ নেয়া লোকজনের সঙ্গে প্রতিমা বিসর্জন দিতে আগানগর নাগরমহল ঘাটের বেরিবাধে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে আসেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শাহ খুশি। এসময় বেরিবাধে যানজট লেগে যায়। চেয়ারম্যান নিজেই যানজট নিরসনে কাজ করছিলেন। এসময় একটি মাইক্রো গাড়ীকে (ঢাকা মেট্রো খ ১২-৮৬৫১) বেরিবাধ থেকে সরিয়ে দিতে গেলে চালকের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে ওই গাড়ীতে সাদা পোশাকে থাকা র্যাবের কয়েক সদস্য বের হয়ে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শাহ খুশিকে মারধর শুরু করেন। মারতে মারতে তাকে পাশের একটি মার্কেটের ভেতর নিয়ে যান। সেখানে তার পরনের পোশাক ছিড়ে ফেলে র্যাব সদস্যরা। এসময় চেয়ারম্যান তার পরিচয় দিলে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দেয়। কয়েকজন ইউপি মেম্বারসহ স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি মার্কেটের মধ্যে ঢুকে চেয়ারম্যান বাঁচাতে গেলে তাদেরও মারধর করে র্যাব সদস্যরা। চেয়ারম্যানকে মারধরের খবর ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার জনতার বিক্ষোভের মুখে র্যাব সদস্যরা গাড়ী নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা গাড়ীসহ তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন।
জানা গেছে, ওই গাড়ীতে সাদা পোশাকে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার ৮ সদস্য ছিলেন। তারা হলেন, ডিএডি কাউসার, কর্পোরাল আহসান হাবিব, সৈনিক শাহান, সারোয়ার, এএসআই শরীফ, কর্পোরাল আহসান, জুবায়ের, ও গাড়ী চালক সৈনিক মনির।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ডিএডি কাউসার বলেন, একটা ভুল বোঝাবুঝি থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনা ঘটেছে।
আগানগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসিফ বলেন, র্যাব সদস্যদের আচরন ছিলো অপেশাদার। তারা অশ্রাব্য ভাষায় যেভাবে গালাগাল ও কোন কারন ছাড়াই যেভাবে একজন ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর মারধর করেছে সেটা মেনে নেয়া যায় না। আমরা এর নিন্দা এবং দোষী র্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে র্যাব সদস্যদের নিরাপদে সরিয়ে এনেছি। বিষয়টি উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
অবরুদ্ধ র্যাব সদস্যদের উদ্ধারে আসা র্যাবের টহল টিমের এসআই ইলিয়াস বলেন, প্রকৃতপক্ষে কি ঘটেছিল সেটা তদন্তের পর জানা যাবে। আমরা উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিষয়টা জানিয়েছি। তদন্তের পর তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।

কেরানীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানকে মারধর পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে
[sharethis-inline-buttons]