কেরানীগঞ্জে অপহরনের ১ দিন পরে সাড়ে তিন বছরের শিশু উদ্ধার

কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন ঘাটারচর এলাকায় অপহরণের একদিন পর মো. ইসমাইল হোসেন নামে সাড়ে তিন বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। অপহৃত শিশুর বাবার নাম আব্দুল মান্নান। তাদের গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার সদর থানা চর বেদারিয়া। তারা কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন শাক্তা ইউনিয়নের ঘাটারচর বালুর মাঠ আমবার চর এলাকার জনৈক মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে ভাড়া থাকেন।

জানা যায়, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে শিশু ইসমাইল বাসার কাছ থেকে নিখোঁজ হয়। এতে তার পরিবার আশপাশ এলাকাসহ সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করে এবং মাইকিং করেন। কোথায় না পেয়ে ওইদিন রাতেই নিখোঁজ শিশুর বাবা কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় এসে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানান।

পরদিন ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার দিকে তাদের এক প্রতিবেশী মহিলা জানান, লাইজু আক্তার (৩৮) আরেক প্রতিবেশী বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় একটি বাচ্চা নিয়ে তার বাড়ির দিকে যাচ্ছে। এ কথা শুনার পরে ইসমাইলের বাবা আব্দুল মান্নান এলাকাবাসী নিয়ে লাইজু আক্তারের বাসায় যান। সেখানে তাকে ডাকাডাকি করলে লাইজু আক্তার বাড়ির দরজা বন্ধ রেখে দেন। পরে তারা পুলিশের সহযোগিতা চাইলে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে শিশু ইসমাঈল হোসেনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে সোপর্দ করেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, আমরা শিশুটিকে উদ্ধারের আগে ওই বাড়িতে গিয়ে লাইজু আক্তারকে অনেকবার জিজ্ঞাসা করেছি বাচ্চাটি আপনাদের বাড়িতে আসছে কিনা এবং সে বাড়িতে সিসি ক্যামেরা আছে তাদের সিসি ক্যামেরাটি চেক করতে বলেছি কিন্তু লাইজু আক্তার আমাদের কথা না শুনে আমাদের ফিরিয়ে দেন। পুলিশ শিশুটিকে ওই বাড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের পর এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে উক্ত বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, আগ্নিসংযোগ এবং লাইজু আক্তারকে মারধর করে।

এ ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন লিটনসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে ফের উপস্থিত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে স্থানীয় জনতা চেপে যায়। পরে পুলিশ লাইজু আক্তারকে উদ্ধার করে আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক‍্যাল কলেজ হাসপতালে ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় অপহৃত শিশুটির বাবা আব্দুল মান্নান জানান, আমার শিশু ছেলেটির কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরে আসলে ফের অচেতন হয়ে যায়। তিনি ছেলের বরাদ দিয়ে বলেন, ছেলের কাছ থেকে জানতে পেরেছি লাইজু আক্তার আমার ছেলেকে চকলেট দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে ছেলে চকলেট চাইলে লাইজু আক্তার ছেলের হাত-পা বেঁধে রাখে। পরে পানি খেতে চাইলে পানি দেয় পানি খেয়ে ইসমাইল ঘুমিয়ে পড়ে। আমার ধারণা লাইজু আমার ছেলেকে অচেতন করার ওষুধ খাইয়েছিল। লাইজু এলাকায় খারাপ প্রকৃতির লোক। তার সাভারের বাকুর্তার চেয়ারম্যান তার ১১ নাম্বার স্বামী। আমার ধারণা লাইজু শিশু অপহরণ করে বিদেশে পাচার করেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমার সাড়ে তিন বছরের মাসুম বাচ্চা কি দোষ করেছে। আমার ছেলে বর্তমানে স্থানীয় আটি বাজার রাফিয়া ক্লিনিকে ভর্তি রয়েছে।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, অপহরণের ঘটনায় শিশুটির বাবা আব্দুল মান্নান বাদী হয়ে শুক্রবার দুপুরে একটি মামলা দায়ের করেছে। অন্যদিকে লাইজু আক্তারের মেয়ে জান্নাতুল ফোরদৌস স্বর্না আজ শুক্রবার রাতেই থানায় মারপিট, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুড়ের একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

কেরানীগঞ্জে ৭ মার্চের ভাষণ সম্বলিত পঞ্চাশ হাজার লিফলেট বিতরণ

স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম ডাক প্রামাণ্য ঐতিহ্য বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নতুন …

error: Content is protected !!