রাজধানী ঢাকায় বিএনপির গনসমাবেশকে কেন্দ্র করে কেরানীগঞ্জে এক প্রকার অঘোষিত হরতাল পালিত হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে কেরানীগঞ্জ যান চলাচল এক প্রকার বন্ধ ছিলো। কেরানীগঞ্জ থেকে রাজধানী প্রবেশে ছিলো পুলিশের কড়াকড়ি চেকপোষ্ট। এছাড়াও বুড়িগঙ্গা নদীতে সকাল থেকে নৌকা বা অন্য কোন নৌ যান চলাচল করতে দেখা যায় নি। পুলিশের সাথে সাথে সকাল থেকে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে।
সরেজমিনে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকাঘুড়ে দেখা যায়, রাজধানী প্রবেশ মুখে কেরানীগঞ্জের বাবু বাজার সেতু,পোস্তগোলা সেতু ও বসিলা ব্রীজে ছিলো ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতি। রাজধানী থেকে কেরানীগঞ্জে প্রবেশে কোন ধরনের বাধার মুখে না পড়তে হলেও, রাজধানীতে প্রবেশে প্রত্যেক ব্যাক্তিকে পুলিশের জিঞ্জাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে পেশাগত পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে তাকে ফিরে যেতে হয়েছে। কেউ কেউ হেনস্থার শিকার ও হয়েছে। সন্দেহভাজন মনে হলে চেক করা হয়েছে তার মোবাইল ফোন। সকাল সকাল এমন হেনস্থার শিকার হওয়ায় অনেকেই অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
তল্লাশি করার সময় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সকাল থেকে প্রায় ২০-২৫ জন কে আটক করেছে বলে জানা গেছে।
তবে শুধু পুলিশের চেকপোষ্টই নয়, মোড়ে মোড়ে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থেকে প্রতিবাদ সভা ও মিছিল করেছেন।
ভোগান্তির বিষয়ে ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালগামী এক যুবক জানান, আমার মাকে কালকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। রাতে বাসায় এসেছিলাম জরুরী একটা প্রয়োজনে, এখন হাসপাতালে যাবো, কিন্তু পুলিশ যেতে দিচ্ছে না। আমরা তো রাজনীতি করি না। এভাবে আমাদের আটকিয়ে রেখে লাভ কি তাদের।
মো: আবুল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী জানান, আমি ইসলামপুরে ব্যবসা করি, আমি আমার ব্যবসা পতিষ্ঠানে যেতে পারছি না। এখানে তারা অহেতুক ই সাধারন জনগনকে আটকাচ্ছে, যারা সমাবেশে যাওয়ার তারা আগেই চলে গেছে। অহেতুক এখন সাধারন জনগনকে আটকানোর কোন মানে হয় না।
এদিকে গনসমাবেশকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল থেকেই বুড়িগঙ্গায় নৌকা সহ সব ধরনের নৌ যান চলাচল বন্ধ ছিলো। নৌকা বন্ধ থাকায় মাঝিরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
কেরানীগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকার প্রতিটি নৌকা ঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে নদী পথ ব্যবহার কারী ব্যবসায়ী ও সাধারন জনগন ভোগান্তি ও দুর্ভোগে পড়েছেন।
নৌকা মাঝি করিম বলেন, আমরা তো কোন দল করি না, দিন আনি দিন খাই, আমাদের কেন নৌকা বাইতে দিবে না। কিছু নেতা আইসা বইলা গেলো নৌকা চালাইতে পারুম না। বন্ধ কইরা দিয়া গেলো, কিন্তু দুপুর বেলা কি খামু, রাইতে বউ পোলাপান লয়া কি খামু সেই ব্যবস্থা কি তারা করবে ? আমাদের কি অপরাধ ? আমর তো রাজনীতি বুঝি না। আমরা খামু কি আজকা ??
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো: আসাদুজ্জামান বলেন, জনসাধারনের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশি নিরাপত্তা জোড়দার করা হয়েছে। জনগনের নিরাপত্তার খাতিরেই সবাইকে জিঞ্জাসাবাদ পূর্বক ঢাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেই কারনেই চেক পোষ্ট বসানো হয়েছে। সকাল থেকেই ঢাকা জেলা পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে ।#