ঢাকার দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ,শ্যামপুর ও কদমতলী এলাকা থেকে “কিশোর গ্যাং” লিডার জালাল ওরফে পিচ্চি জালাল বাহিনীর ১৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০।
সোমবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে র্যাব-১০ সদর দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলনে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন জানান, বিশেষ অভিযানে কিশোর গ্যাংয়ের ১৬ সদস্য গ্রেপ্তারের পর যাচাই-বাছাই শেষে ঢাকার দক্ষিন কেরানীগঞ্জসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় আট জনের নামে মামলা থাকায় তাদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এবং বাকি ৮ জনকে বিভিন্ন ভাবে যাচাই-বাছাই করার পর কাউন্সিলিং করে অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক বলেন, যে কোন যে কোন অপরাধী, ছিনতাইকারী, মাদক ব্যবসায়ী, খুন ও অপহরনসহ কিশোর অপরাধ দমনে র্যাব নিয়মিত অভিযান চালিয়ে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২৯ জানুয়ারি র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ, শ্যামপুর ও কদমতলী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে “কিশোর গ্যাং” লিডার জালাল ওরফে পিচ্চি জালাল বাহিনীর ১৬ (ষোল) সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত কিশোরদের নাম যথাক্রমে জালাল বাহিনীর প্রধান জালাল ওরফে মোঃ শাহ জালাল (১৯), মোকাব্বির হোসেন আয়ান (১৯), ইমন সরদার (২০), মোঃ রাসেল (১৯), মোঃ সুজন (১৯), মোঃ মুন্না হোসেন (১৯), মোঃ রাজু (১৯), মোঃ হাসান (১৯), মোঃ লিখন (১৬), মোঃ জিসান (১৬), মোঃ রায়হান শেখ (১৬), মোমিদ হোসেন (১৫), মোঃ রাব্বি (১৬), মোঃ আপন খন্দকার (১৩), মোঃ হৃদয় (১৫) ও মোঃ নাজিম (১৩) বলে জানা যায়।
র্যাব-১০ এর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গ্রেপ্তারকৃতরা “কিশোর গ্যাং” লিডার জালাল ওরফে পিচ্চি জালাল বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। তারা জালাল ওরফে পিচ্চি জালাল এর নেতৃত্বে ঢাকার দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ, শ্যামপুর ও কদমতলী থানার বিভিন্ন এলাকায় জনবিরল এমনকি জনসমাগমপূর্ণ স্থানে একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে আশেপাশের কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক মানিব্যাগ, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল হ্যান্ডসেট, ল্যাপটপসহ সাথে বহন করা দ্রব্যসামগ্রীর ব্যাগ প্রভৃতি ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যেত। গ্রেপ্তারকৃত কিশোর অপরাধীরা স্বীকার করে যে, চুরি ছিনতাই ছাড়াও তারা মাদক সেবন, খুচরা মাদকের ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, পাড়া-মহল্লায় মারামারি এবং তারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নানা ধরনের অসামাজিক ও অশ্রীল টিকটক ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে আসছিল। প্রায়শঃই তারা এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে দলবদ্ধ হয়ে সংঘাত সৃষ্টি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে সাধারন মানুষের চলাচলে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি করে আসছিল বলে জানা যায়
গ্রেপ্তারকৃত ১৬ জন কিশোর গ্যাং এর মধ্যে জালাল বাহিনীর প্রধান পিচ্চি জালাল ওরফে মোঃ শাহ জালাল, মোকাব্বির হোসেন আয়ান ইমন সরদার এবং মোঃ রাসেলদের বিরুদ্ধে রাজধানীর শ্যামপুর থানায় ছিনতাই মামলায় ও মোঃ সুজন, মোঃ মুন্না হোসেন, মোঃ রাজু এবং মোঃ হাসানদের বিরুদ্ধে রাজধানীর কদমতলী থানায় ছিনতাই মামলা থাকায তাদের ৮ জনকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া বাকী ০৮ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে র্যাব-১০ তাদের নিকট হতে মুচলেকা গ্রহণ করে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিচ্ছে। র্যাব-১০ আগামী দিনগুলোতে তাদেরকে সার্বক্ষনিক নজরদারীতে রাখবে, যাতে তারা আর কখনো এধরনের অপরাধমূলক কাজে যোগ দিতে না পারে। এছাড়া তাদের মাধ্যমে র্যাব-১০ কিশোর গ্যাং এর সাথে জড়িত অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুদের আইনের আওতায় এনে সুস্থ্য ও সুন্দর জীবন উপহার দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর বলেও জানান
র্যাব-১০ এর অধিনায়ক #