দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন আবারো উর্দ্ধমুখী। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ ধারা অব্যহত রয়েছে। করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন সংক্রমন বেড়ে যাওয়ায় সরকার সারা দেশে নতুন করে বিধি নিষেধ আরোপ করেছে। তবে বিধি নিষেধের কোন প্রভাব ই পরে নি ঢাকার কেরানীগঞ্জে। সরকারের জারি করা ১১ দফা বিধি নিষেধের কোনটিই মানা হচ্ছে না কেরানীগঞ্জে।
সরেজমিন কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুড়ে দেখা যায়, প্রায় সব জায়গাতেই একই চিত্র। করোনা প্রতিরোধে বার বার মাস্ক পড়ার প্রতি জোড় দেয়া হলেও, এখানে অধিকাংশ লোক বাইরে মাস্ক ছাড়াই ঘুড়াফেড়া করছে। খাবার হোটেল ও রেষ্টুরেন্টগুলোতে টিকা কার্ড প্রদর্শনের কথা বলা হলেও এখানে তা পালন হচ্ছে না। বিয়ে,সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য কমিউনিটি সেন্টারগুলো সরকারিভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হলেও, কেরানীগঞ্জের প্রতিটি সেন্টারেই বিয়ের অনুষ্ঠান চলমান রয়েছে। কমিউনিটি সেন্টারগুলো কোন ভাবেই সরকারের বিধি নিষেধের তোয়াক্কা করছে না।
গন পরিবহনগুলোতেও মানা হচ্ছে না বিধি নিষেধ। বিভিন্ন অফিস এবং প্রতিষ্ঠানে নামে মাত্র নো মাস্ক নো সার্ভিস লিখা রয়েছে। এর কোন বাস্তবায়ন ই হচ্ছে না।
জনসমাগম সীমিত করা ও নতুন ১১ দফা বিধি নিষেধে সরকারের নির্দেশনা থাকলেও কেরানীগঞ্জে তার কোন প্রভাব পড়ে নি। এ নির্দেশনা মানাতে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পদক্ষেপের ঘাটতিও চোখে পড়েছে। মাস্ক পড়তে জনগনকে উদভুদ্ধ করতে ও স্বাস্থবিধি প্রতিপালনে জনগনকে সচেতন করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার কথা থাকলেও গত কয়েক সপ্তাহে কেরানীগঞ্জের কোথাও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে দেখা যায় নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত করোনায় কেরানীগঞ্জে মোট ৪১৬২ জন আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যুবরন করেছেন ৬১ জন, মোট পরীক্ষা হয়েছে ২৫৪০৪ জনের, বর্তমানে কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৬ জন ডাক্তার, ৩ জন নার্স ও ৩ জন স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেবা গ্রহন করছেন। এ পর্যন্ত কেরানীগঞ্জে করোনার টিকার জন্য রেজিষ্ট্রেশন করেছে ৩,১৫,০০০ জন। করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে ৩,৯০,০০০ জন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন ১,৯০,০০০ জন। বুষ্টার ডোজ নিয়েছেন ৫৪৭৮ জন। গত ২৪ ঘন্ট্রায় কেরানীগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩১ জন ।
স্থানীয় সচেতন ব্যাক্তিরা বলছেন এখনই সতর্ক না হলে এবং উপজেলা প্রশাসন কঠোর না হলে সামনে পরিস্থিতি চরম আকার ধারন করতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, সর্বোচ্চ সতর্কতা ছাড়া করোনা মোকাবেলা সম্ভব নয়। সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে, সতর্ক হতে হবে। মাস্ক পড়ার ক্ষেত্রে অধিকাংশ লোকজনই উদাসীন, করোনা মোকাবেলা করতে হলে অবশ্যই আমাদের সকলকে মাস্ক পড়তে হবে। টিকার প্রতি জোড় দিতে হবে। এতোদিন আমরা পরিস্থিতি অবজারভেশন করেছি আজকে থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবো। আর কমিউনিটি সেন্টারগুলো বন্ধের জন্য আমরা প্রতিটি ইউনিয়নে নির্দেশ পাঠিয়েছি। এখন থেকে কেউ যদি আমাদের নির্দেশনা অমান্য করে সেন্টার পরিচালনা করে তা হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। #