কন্ঠনালিতে ডেঙ্গুর বাসা

কন্ঠনালিতে আম্মা চুমু খায়
কড়া রোদে টিনের চাল স্বর্ণমুকুদের
মতো ঝকঝকে তলোয়ারে পরিণত হয়।
হঠাৎ কন্ঠনালিতে রক্ত, কন্ঠনালি কেটে গেছে।

শব্দ করতে পারছি না, বেঁচে আছি
ডাক্তার বলেছে আর কখনো
কথা বলতে পারবো না
তাই আমি শুধু লিখি, আমার ভাষা
কেউ বুঝে না, তাই হাসপাতালে
উত্তেজনা মূলক কোন কন্ঠ নেই।

ডেঙ্গুতে আম্মা মারা গেছে
আমার কন্ঠনালিতে রক্ত লাল রক্ত
আম্মার মুখ দিয়ে মৃত্যু যন্ত্রণা
পাখি হয়ে উড়ে যাওয়ার সময়
এই রক্ত আমাকে উপহার দিয়েছে।

আম্মার রক্ত খেয়ে দশমাস অতিবাহিত
করার পর প্রবল নিরাপত্তা ভেদ করে
এই ধূলোর পৃথিবীতে এসেছিলাম
ভালবাসার গোপন ভাষা নিয়ে
অথচ আমার কন্ঠনালি নেই
আমি বলতে জানি না, আমার ভাষা মৃত্যু
যন্ত্রনার মতো কন্ঠনালিতে রক্ত জমায়

আম্মা মারা গেছে হসপিটালের ৪০১ নাম্বার বেডে
তার কন্ঠনালিতে রক্ত
মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তে আম্মা হেসেছিল
আম্মার হাসিতে ডেঙ্গু আজ মহামারী।

হাসপাতালে কোন ভাষা নেই
শুধু চিৎকার, যন্ত্রণা আর হাহাকার
মনে হয় কারও কন্ঠনালি নেই
কেউই ভাষা জানে না, নিঃস্তব্ধ
অসহায় হয়ে আম্মার পাশে বসে
মৃত্যু যন্ত্রণা উপভোগ করছি।

আম্মার কন্ঠনালি বেয়ে
জেগে ওঠা প্রথম ভাষা ছিল
ভালবাসা, অথচ আমার আম্মা কখনোই
বলেনি মহামারি ডেঙ্গুকে সে ভালবাসে।

আম্মার কন্ঠনালিতে আজ কোন ভাষা নেই
হাহাকার নেই, আজ চারিদিকে কণ্ঠনালির
হারানোর বেদনা, ভাষা হারানোর বেদনা
আজ আম্মার প্রিয় ডেঙ্গু মহামারীতে রুপ নিয়েছে।

সবশেষে কন্ঠনালিতে চুমো খেলো ডেঙ্গু

লেখক: রকি মেরাজ,শিক্ষার্থী,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

মো: জেহাদ উদ্দিনের কবিতা গ্রাম

আমাদের ছোট বেলা ছিল এক গ্রাম বর্ষার জলে মোরা নাও দৌঁড়াতাম। সবুজ শ্যামল ছায়ে ছিল …

error: Content is protected !!