ইন্দো-ইসলামিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইন্দো-ইসলামিক হেরিটেজ সেন্টার (আইআইএইচসি)’র উদ্যোগে সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের দিকে মনোনিবেশ করে নয়াদিল্লিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন শেষ হয়েছে। তানজিম উলামায়ে ইসলামের সহযোগিতায় আয়োজিত এ সম্মেলনে উভয় দেশের প্রতিনিধিরা একত্রিত হন। মৌলবাদ মোকাবেলা, শিক্ষার প্রচার এবং জনসংযোগ বাড়ানোর উপর জোর দেন বক্তারা।

গালিব ইন্সটিটিউটে অনুষ্ঠিত প্রথম অধিবেশনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় যু্গ্ম মহাসচিব আব্দুর রহিম এবং দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবু তালেব বেলাল ঐক্যের প্রসারে সুফি মতাদর্শের তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ভারতের প্রতি অনুরাগ স্পষ্ট, যারা আজমির ও দিল্লির মতো শহরে সুফি মাজার জিয়ারতে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আন্তরিকতায় দুই দেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান বাংলাদেশ সবসময় কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে।
তানজিমুল মুসলিম অল ইন্ডিয়ার সভাপতি আশফাক হুসেন কাদরী উভয় দেশে মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উদারতাবাদ এবং ইসলামের সুফি ব্যাখ্যা প্রচারের জন্য একটি পাঠ্যক্রমের গুরুত্বের উপর জোর দেন। ইন্ডিয়া ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে আয়োজিত দ্বিতীয় সেশনে অধ্যাপক আখতার উল ওয়াসে বলেন, বিভিন্ন দেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী ভারতীয় সুফি মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করে। তিনি বাংলাদেশের শিশুদের ভারতীয় সুফি মাদ্রাসায় ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ধরনের উদ্যোগ তাদের দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা জোরদার করবে। বাংলাদেশের সমাজকর্মী ও যুব সংগঠক ইমরান হোসেন তুষার মৌলবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংগ্রামের তুলে ধরেছেন ।

ভারতীয় অধ্যাপক ড. আখলাক উসমানী বলেন, নরেন্দ্র মোদি সরকারের নেতৃত্বে এক বছরের মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা দ্বিগুণ হয়েছে। নয়াদিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুল ওয়াহিদ নাজির বাংলাদেশের প্রতি ভারতের ব্যাপক সমর্থনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সম্মেলনে ৬টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এগুলো হলো- ভারতীয় সুফি মাদরাসায় বাংলাদেশি শিশুদের পাঠ্যক্রম ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে পরিচিত করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। মেডিকেল কলেজগুলোতে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের আবাসন উন্নয়ন, বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা বৃদ্ধি এবং শিক্ষা পর্যটন বৃদ্ধি। বাংলাদেশের সুফি মাদরাসার পাঠ্যক্রম সমর্থন করার জন্য তানজিম উলামায়ে ইসলাম এবং ইন্ডিয়া ইসলামিক কালচারাল সেন্টার যৌথভাবে দরসা নিজামীর আয়োজন করা। ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতের সুফি সার্কিট পর্যন্ত বাস রুট স্থাপন এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করা। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছাত্র বিনিময় বৃদ্ধি এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি করা। বাংলাদেশ থেকে আসা রোগীদের জন্য ভারতীয় হাসপাতালগুলোতে বাংলা ভাষায় তথ্য বোর্ড ও ওয়েবসাইটের বিবরণ এবং হাসপাতালের কর্মীদের জন্য বাংলা ভাষা উপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

দিনে ৪৫ কেজি প্লাস্টিক খায় নীল তিমি : গবেষণা

বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ প্রাণী নীল তিমি। এগুলোর খাবার খাওয়ার ধরনও এমন বিশালই। প্রতিদিনই প্রাণীটি গলাধঃকরণ …

error: Content is protected !!