আবারো মধু সিটির দখলের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

আবারো কেরানীগঞ্জের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত মধু সিটির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে কেরানীগঞ্জের
মডেল থানাধীন কাঠালতলী, চন্ডিপুর ও বেলনাসহ এলাকার স্থানীয় জনগন। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন মধু সিটি তিন ফসলি কৃষিজমি এবং সরকারি খাল-বিল-জলাশয় বেদখল করছে।

তাদের অভিযোগ, মধু সিটি ভারাটে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জোরপূর্বক অসহায় কৃষকদের জমি দেদারসে দখল করছে। সেই সব জমি রাতের আাধারে বালু দিয়ে ভরাট করে প্লট বানিয়ে বিক্রিও করে ফেলছে।
এছাড়া এলাকার বেশিরভাগ সরকারি খাল-বিল-জলাশয়ও বেদখল করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করছে কোম্পানিটি। মধু সিটির দখল ও অনিয়মের বিরুদ্ধে বহু মামলা ও জিডি করেও কোন প্রতিকার পান নি এলাকাবাসী।
মানব বন্ধনে “ভূমিদস্যুদের থাবায় কৃষিজমিহারা কৃষক” , “বসত-ভিটা হারানো নিরীহ মানুষ”, “স্থানীয় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ তিন-চার শতাধিক লোক ব্যানার নিয়ে এ মানব অংশ নেন।

তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘কৃষিবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন: কৃষিজমি রক্ষা করুন, সরকারি খাল-বিল-জলাশয় উদ্ধার করুন’

‘তিন ফসলি জমি খেকো মধুসিটির মালিক দুই ভাই ছলিম উল্যাহ ও হাবিবুর রহমান হাবিবের বিচার চাই’

‘জান দেব, কৃষিজমি দেব না’ ‘মধুসিটি উচ্ছেদ করো, কৃষিজমি রক্ষা করো’- ইত্যাদি শ্লোগান।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা কাঠালতলী, চন্ডিপুর ও বেলনাসহ এলাকার তিন ফসলি কৃষিজমি এবং সরকারি খাল-বিল-জলাশয় বেদখলকারী ‘মধুসিটি হাউজিং’য়ের মালিক দুই ভাই ছলিম উল্যাহ ও হাবিবুর রহমান হাবিবকে গ্রেফতার কওে বিচারের দাবি জানান। একইসঙ্গে এব্যাপারে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

মানববন্ধনে স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি কৃষিবিদ মোসলেহ উদ্দিন ফারুক বলেন, ভূমিদস্যুদের কবলে পড়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন কাঠালতলী, চন্ডিপুর ও বেলনাসহ প্রায় পুরো এলাকা কৃষিজমিহীন হওয়ার উপক্রম। সরকারি খাল-বিল-জলাশয়ও রেহাই পাচ্ছে না তাদের হাত থেকে। এতে শুধু এলাকার কৃষিজমিই হ্রাস পাচ্ছে না, এলাকার পরিবেশও মারাত্বক হুমকির মুখে পড়ছে।

কৃষক মোহাম্মদ হাফিজ বলেন, মধুসিটি জোর করে মানুষের বসতভিটা ও কৃষিজমি বেদখল করছে। কেউ প্রতিবাদ করলে ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়।

অ্যাডভোকেট মাসুদ বলেন, নিজের কৃষিজমি ও বসতভিটা রক্ষায় স্থানীয়দের রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছে। বেদখলকারীদের ভয়ে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। কৃষক সারোয়ার হোসেন বলেন, নামমাত্র মূল্যে জোর করে মানুষের কৃষিজমি দখল করে নিচ্ছে মধুসিটি। প্রতিবাদ করলে ‘মোটরসাইকেল বাহিনী’ নামক সন্ত্রাসী দিয়ে আক্রমণ চালানো হয়। এতে সেখানকার কৃষকরা ভীতসন্ত্রস্ত।

জমি হারানো সালাহউদ্দিন বলেন, রাতের আঁধারে বালু ফেলে স্থানীয়দের কৃষিষজমি দখল করে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি রুহুল আমিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষিবান্ধব। চলমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী বারবারই কৃষিজমি রক্ষার এবং ফসল ফলানের আহবান জনাচ্ছেন। অথচ, প্রধানমন্ত্রীর সেই আহবানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মধুসিটি নির্বিচারে কৃষিজমি ধ্বংস করছে। একইসঙ্গে সরকারি খাল-বিল-জলাশয় দখল করে ভরাটের কারণে পরিবেশগতভাবেও এলাকাটি বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে [sharethis-inline-buttons]

Check Also

কেরানীগঞ্জে ৭ মার্চের ভাষণ সম্বলিত পঞ্চাশ হাজার লিফলেট বিতরণ

স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম ডাক প্রামাণ্য ঐতিহ্য বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নতুন …

error: Content is protected !!